রাজ্য

“ইতিহাস সাক্ষী আছে, ভাইরাসের থেকে ক্ষুধার আগুন বেশি আগ্রাসী।


রাহুল চ্যাটার্জি:চিন্তন নিউজ:২৬শে মার্চ:– রামপুরহাট শহরের প্রবেশপথে পান্ডববর্জিত এলাকায়, হাই রোডের ধারে চরম দুর্গন্ধময়, চূড়ান্ত অস্বাস্থ্যকর ভাগারের মাঝে এক বৃদ্ধা একাকী নিস্তেজ হয়ে পড়ে ছিলেন। নাওয়া খাওয়ার কোনো সুযোগ নেই এই মুহূর্তে তার কাছে। খোলা আকাশের নীচে ক্ষুধার জ্বালায় মৃত্যু-পথযাত্রী।

এদিকে করোনা সতর্কতায় ট্রেন চলাচলে বিঘ্ন ঘটায় রামপুরহাট স্টেশনে আটকে বাইরের বহু যাত্রী, বাড়ি ফেরার জন্য যারা ছটফট করছেন। তাদের দুবেলা খাবারের দায়িত্ব নিয়েছেন শহরের সাংবাদিক বন্ধুরা। রামপুরহাটের এসডিপিও নিজেও এই কাজে এগিয়ে এসেছেন।।

অপরদিকে করোনা সাবধানতার নতুন স্বাস্থ্যবিধির কারণে রক্তদান শিবিরও করা যাচ্ছেনা। ফলে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে ৪১বছরের রেকর্ড রক্ত সংকটে পড়তে চলেছে ব্লাড ব্যাংকগুলি। ফলে বিপদে পড়েছে অনেক থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশু। কিন্তু তার মধ্যেও জীবনের জয়গান থেমে নেই, এগিয়ে এসেছেন শহরের বিভিন্ন ক্লাব, সমাজসেবী সংস্থা, বীরভূম ভলান্টারি ব্লাড ডোনার্স এসোসিয়েশন ও রক্তবন্ধু নামক সংস্থাগুলি ও বাম যুবরা(DYFI)।

বাজারে মাস্ক বা স্যানিটাইজার অমিল হওয়ায় রামুরহাটের হাটতলা দুর্গাপূজা সার্বজনীন কমিটি সেই সমস্ত প্রয়োজনীয় জিনিস গুলি তুলে দিলেন রিকশাচালক, পেপার বিক্রেতা, দিনমজুর, ডাক্তারের কম্পাউন্ডার, মুদির দোকানের কর্মী ইত্যাদি পেশায় যুক্ত মানুষজন দের।। বঙ্গীয় সংস্কৃতি মঞ্চ নামে আরেক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা নিজ উদ্যোগে স্যানিটাইজার তৈরি করে হাসপাতাল ও পুলিশ প্রশাসনের কর্মীদের হাতে তা তুলে দিয়েছেন।।

শহরের মানুষজনের মত সচেতনতা দেখিয়েছেন মফঃসলের মানুষেরাও।। আজ এলাকার বিভিন্ন দোকানপাট, পানীয় জলের কল প্রভৃতি জায়গায় সুরক্ষা বলয় বা গন্ডি কেটে দিলেন গ্রামবাসীরা নিজেই।। শহর এলাকার বিভিন্ন দোকানপাট, রেশনের দোকান, ওষুধের দোকানের সামনেও একই গন্ডি টেনে দেন সাধারণ মানুষে।। যায় হোক, করোনা দূরীকরণে যারাই আজ ঝাঁপিয়ে পরে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন তাদের প্রত্যেকের একই অনুরোধ এই যে আমরা যারা নেটিজেন বলে নিজেদের দাবী করি, যারা ফ্রিজ ভর্তি খাবার,অ্যাকাউন্ট ভর্তি টাকা আর ডেটা ভর্তি করে ফেসবুকে পোস্ট করছি,

“হয় ঘর, নাহয় শ্রীঘর।”

তাদের কাছে অনুরোধ, যাদের ঘরই নেই, বা ঘর আছে পর্যাপ্ত খাবার নেই,যারা দিন আনে দিন খায়,বা নিঃসন্তান বৃদ্ধ দম্পতি বা বয়স্ক একাকী, তাদের সমাজের মানবিক দৃষ্টিতে দেখা উচিত।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।