দেশ

সপ্তম দফার বৈঠকের আগেই পুলিশ -কৃষক সংঘর্ষে উত্তেজিত হরিয়ানা ,পঞ্জাব। বৈঠকের পরেও সমাধান হ’লনা


গোপা মুখার্জী : চিন্তন নিউজ :৪ঠা জানুয়ারি:২০২১:- দফায় দফায় বৈঠকের নামে সময় নষ্ট করে কার্যত কৃষকদের মনোবল ভেঙে দিতে চাইছে কেন্দ্র সরকার । কিন্তু সরকারের এই প্রচেষ্টাকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়ে হাজার হাজার লড়াকু কৃষক প্রবল শৈত্য প্রবাহ , হাড় কাঁপানো ঠান্ডা, বৃষ্টি সমস্ত কিছু প্রতিকূলতাকে উপেক্ষা করে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। এর আগে পর পর ছয়টি বৈঠক থেকে কোনও সমাধান সূত্র পাওয়া যায়নি । তাই সোমবার সপ্তম দফার বৈঠক ঘিরে কৃষকদের মধ্যে উত্তেজনা ছিল তুঙ্গে। তাঁদের মূল লক্ষ্য —-কৃষক বিরোধী কৃষি আইন প্রত্যাহার এবং নূন্যতম সহায়ক মূল্যের(এমএসপি) আইনি গ্যারান্টি প্রদান। যদিও বৈঠকের আগের দিন রবিবার কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমর প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় কৃষকদের স্বার্থেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানিয়েছেন ।

সপ্তম দফার এই বৈঠক নিয়ে কৃষক সংগঠন গুলি রীতিমত হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেনন যে যদি তাঁদের দাবি না মানা হয় তাহলে আন্দোলন আরও তীব্রতর হবে। প্রজাতন্ত্র দিবসে রাজধানীর বুকে মিছিল,১৩ ই জানুয়ারি কৃষি আইনের কপি পুড়িয়ে লোহরি উৎসব এবং ২৩ শে জানুয়ারি কিষাণ দিবস উদযাপন করার কথাও বলেছেন তাঁরা। সর্বভারতীয় ঐতিহাসিক এই কৃষক আন্দোলন কিছুতেই পিছু হটবে না। সরকারের একরোখা মনোভাব তাঁরা কিছুতেই মেনে নেবেন না।রাজধানীর পাঁচদিক থেকে ঘিরে তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন ।ইতিমধ্যেই বেশ কিছু কৃষক শহীদের মৃত্যু বরণ করেছেন তা সত্ত্বেও সরকারের এই নির্লিপ্ততা তাঁদের মনোবল কে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

অন্যদিকে রবিবার সপ্তম দফার বৈঠকের আগের দিনই কৃষক আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করে।কয়েকশো কৃষক মিছিল করে দিল্লির দিকে এগোতে গেলে রেওয়ারি-আলোয়ার সীমানাতেই তাঁদের আটকে দেয় পুলিশ । উভয়ের মধ্যে ধ্বস্তাধস্তি শুরু হয়।পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ বেশ কয়েক রাউন্ড কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে।পাঞ্জাবের সাঙ্গারুর জেলায় বিক্ষোভকারী কৃষকদের ওপর লাঠিচার্জ করে পুলিশ।গাজীপুর সীমান্তেও উত্তেজনা চরমে ওঠে। কিন্তু কোনোভাবেই এই আন্দোলনকে থামানো যাবে না।জানা গিয়েছে, আন্দোলনকে আরো জোরদার করতে কৃষক পরিবারের সদস্যরাও আন্দোলনে যোগ দেওয়ার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন ।

বিশেষ ভাবে উল্লেখ্য, এইমাত্র পাওয়া খবর অনুযায়ী এবারের বৈঠকেও কোনো সমাধান সূত্র পাওয়া যায় নি। এআইকেএস এর সাধারণ সম্পাদক হান্নান মোল্লা জানিয়েছেন, সাড়ে চারশো কৃষক সংগঠনের ঐক্যমতে একটাই দাবি কৃষি আইন প্রত্যাহার করতে হবে। কিন্তু সরকার তা মেনে না নেওয়ায় আগামী ৮ জানুয়ারি আবার একটি বৈঠকের কথা হয়েছে। আন্দোলন চলবে, এবং হান্নান মোল্লা সাংবাদিক সম্মেলনে আর‌ও জানিয়েছেন প্রায় সত্তর জন কৃষকের মৃত্যুর দায় সরকারকেই নিতে হবে।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।