দেশ বিদেশ

করোনা ভাইরাস এর দোসর ‘হান্তা’ভাইরাস


রঞ্জন মুখার্জী: চিন্তন নিউজ:২রা এপ্রিল:-সমাজতান্ত্রিক চীনকে আন্তর্জাতিক দুনিয়াতে কোণঠাসা করার একটা আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা দীর্ঘদিন ধরেই চালিয়ে আসছে ধনতান্ত্রিক দেশগুলো, যার নেতৃত্ব দিচ্ছে আমেরিকা। তার শরীক দেশ ভারত বর্ষ। ভারতবর্ষের বর্তমান শাসক শ্রেণী চীন সম্পর্কে একটা ভয়ঙ্কর ভীতি ভারতবাসীর মনে গেঁথে দেবার চেষ্টা করছে, কখনো দেশপ্রেমের জিগির তুলে, কখনো ভারত বর্ষের অর্থনীতির কথা বলে, আবার কখনো বা এটাও প্রচার করা হচ্ছে যে, চীন হচ্ছে এক ভয়ঙ্কর দেশ যেখানে সবকিছুই প্লাস্টিকের তৈরী। এমনকি খাবার ভাত, বাঁধাকপি, ডিম, সবকিছুই নাকি প্লাস্টিক থেকে তৈরি হচ্ছে। সেই সব ছবি সোশাল মিডিয়াতে পরিকল্পনা করে ভাইরাল করা হচ্ছে। যদিও কেউ কখনো তেমন দ্রব্য নিজেরা প্রত্যক্ষ করেন নি।কিন্তু সেই প্রচারে মানুষ কখনও কখনও বিভ্রান্ত হচ্ছেন এবং বিশ্বাস করতে শুরু করছেন ।

লাগাতার প্রচারের আরেকটা অংশ হলো করোনা ভাইরাস এর দায়কে চীনের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া। অর্থাৎ চিন নাকি তার ল্যাবরেটরীতে জৈব মারণাস্ত্র বানাচ্ছিল। এর কোন প্রমাণ এখনও পর্যন্ত আন্তর্জাতিক দুনিয়া সামনে উপস্থিত করতে পারেনি।এই করোনা – এর সাথে সাথে আরেকটি ভাইরাস নিয়ে প্রচার শুরু হয়ে গেল। সেটা হচ্ছে ভাইরাস” হান্তা “। এই ভাইরাস হান্তাও নাকি চীনের আবিষ্কার এবং সেখান থেকে ছড়িয়ে পড়ছে।

এখন দেখা যাক, করোনা বা হান্তা – এগুলোর উৎপত্তি কিভাবে হচ্ছে । রক্তপাত কারি এই রোগগুলো যেমন এবোলা, ম্যাকুপো, হানতা এই ভাইরাসগুলো জলবায়ুর সঙ্গে সম্পর্কিত। হান্তা প্রথম ধরা পড়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ-পশ্চিম প্রদেশে ১৯৯৩ সালে । তার আগে ওই অঞ্চলে ছয় বছর ধরে খরা হয়েছিল। তার ফলে রোগের বাহক ইঁদুরের খাদক প্রাণীদের মৃত্যু ঘটেছিল। এরপরেই শুরু হয় প্রচণ্ড বৃষ্টি এবং তুষারপাত। এই রকম আবহাওয়াতে ওই অঞ্চলে ইঁদুরের দ্রুত বংশবৃদ্ধি ঘটে। সেখানে হানতা ও তার সাথে সাথে কলেরার প্রকল্প প্রচন্ড বৃদ্ধি পায় । ১৯৯১ সালে দক্ষিণ আমেরিকায় কলেরা এবং হানতা – র মড়কে প্রায় ৫০০০ মানুষের মৃত্যু হয়।

এখান থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে যে, হানতা কোন নতুন ভাইরাস না। এবং এর জন্যে চিন বা কোনো দেশ দায়ী নয়। যদি কাউকে দায়ী করতেই হয় , তাহলে দায়ী করতে হবে মনুষ্য সৃষ্ট গ্লোবাল ওয়ার্মিংকে ।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।