রাজ্য

করোনা’র জেরে লকডাউনে কৃষকরা বিপন্ন


সঞ্জিত দে: চিন্তন নিউজ: ১১ই এপ্রিল – জলপাইগুড়ি জেলার অন্যতম এবং বৃহৎ কৃষি পন্য উৎপাদন কারি ব্লক ধূপগুড়ি এবং ময়নাগুড়ি। এই দুই ব্লকের লক্ষ লক্ষ মানুষ কৃষি কাজের সাথে যুক্ত। করোনার কারনে লকডাউন, তার পরিনতিতে বিরাট বিপদের মুখে কৃষক ও তাদের পরিবারের সদস্য সেই সাথে কৃষি পন্য বেচা কেনা ও পরিবহন এবং ক্ষেত মজুর সহ আরও কয়েক লক্ষ মানুষের চরম বিপদ ঘনিয়ে আসছে।

করোনা ভাইরাস বেশি মানুষের মধ্যে দ্রুত না ছড়াতে পারে সে কারনে তিন সপ্তাহ ব্যাপী দেশ জুড়ে চলছে লক ডাউন চলছে।এই পরিস্থিতিতে বিরাট সংকটে পরেছেন গ্রামে বসবাসকারী কৃষক। আগামী দিনে আসতে চলেছে খাদ্য সংকট। ফসলের দাম না পেয়ে পন্য বিভিন্ন হাটে বাজারে ফেলে দিয়ে আসতে বাধ্য হচ্ছেন কৃষক। এ রাজ্যের বড় কৃষি নিয়ন্ত্রিত বাজার ধূপগুড়িতে প্রতিটা বাজারে গেলেই দেখা যাচ্ছে কৃষকের হাহাকার। প্রায় দিন দেখা যাচ্ছে দাম না পেয়ে ফসল রেখে চলে যাচ্ছেন অনেকে। শুধু হাটে বাজারে নয় গ্রামে গেলেও দেখা যাচ্ছে কৃষকের হা হুতাশ। কথা হ’ল ময়নাগুড়ি ব্লকের সাপ্টিবাড়ি ১ গ্রামপঞ্চায়েতের আবাসতলি গ্রামের কৃষকদের সাথে। ধূপগুড়ি ব্লক লাগোয়া এই গ্রামের কৃষকরাধূপগুড়ি কৃষি নিয়ন্ত্রিত বাজারে এবং ময়নাগুড়ি বাজারে ফসল বিক্রি করতে গিয়ে তাদের তিক্ত অভিজ্ঞতা এবং আশংকার কথা জানালেন। এই গ্রামের খুব কাছেই ইতিহাস প্রসিদ্ধ জটিলেশ্বর মন্দির। আবাসতলি গ্রামের তিনশতাধিক পরিবার সকলেই কৃষি কাজের সাথে যুক্ত।জমিতে কাজ করার সময় বীরেন বসাক তার পুত্র পরিতোষ বসাক মহিলা ক্ষেত মজুর পার্বতী বসাক সকলেই তাদের উৎকন্ঠা প্রকাশ করে বলেন সামান্য জমিতে কেউ লাউ, কুমড়ো, ঝিঙে, লংকা, চেঙরি বেগুন সহ নানাধরনের শাকসব্জি চাষ করেন।

লকডাউন ঘোষণা করার আগে ফসলের যা দাম মিলছিল তাতে কোনোমতে চলে যাচ্ছিল। পরিতোষ বসাক বলেন আগে লংকা বিক্রি হয়েছে ১৫ থেকে ২০ টাকার মধ্যে এখন দু টাকাতেও নেবার লোক নেই।কদিন আগে ধূপগুড়ি কৃষি বাজারে কৃষক মন মন লংকা ফেলে চলে গেছে। একই অবস্থা বেগুনের। সরু দেখতে চেংরী বেগুন আসামে বেশি চলে গ্রামে এসে পাইকার নিয়ে যেত এখন ময়নাগুড়ি ধূপগুড়ি কৃষি বাজারে দু’ থেকে তিনটাকার বেশি দাম কেউ দিচ্ছে না।এই কৃষকরা বলেন পাশের রানীর হাট ভুজারি পারা হাটে খুচরো বিক্রি করতে নিয়ে গেলেও দাম নেই কেনার খদ্দের ও নেই। তাহলে বলুন জমি থেকে ফসল তুলে হাট বাজারে নিয়ে গিয়ে কি লাভ। এখন জমির ফসল কিছু গরুকে দিয়ে বাকিটা ফেলে দিতে হচ্ছে।

কথা হলো এই গ্রামে শ্বশুর বাড়িতে স্ত্রীকে নিতে এসে লক ডাউনের জেরে আটকে থাকা শিলিগুড়ির শিব মন্দির এলাকার যুবক দেবাশীষ সিংহ সরকার। তিনি বলেন আমি পেশায় এক বেসরকারি ফার্মের একাউন্ট কর্মি। লক ডাউনে আটকে গিয়ে এই গ্রামে যা দেখলাম তাতে খুব বেদনা হচ্ছে। লাউ লংকা বেগুন সহ অনেক সব্জি ফেলে দিচ্ছেন। এসব দেখেই বুঝতে পারছি আগামী দিনে খাদ্যের বিরাট সংকট আসতে চলেছে। তার কথায় কৃষক যদি ফসলের দাম না পান তাহলে তারা কি খেয়ে বাঁচবে আর চাষাবাদ কি ভাবে করবে? কৃষক না বাঁচলে সমাজে বাকিদের বাঁচার রাস্তা কি জানা নেই। ছবি ক্যাপশন ময়নাগুড়ির আবাস তলি গ্রামে কৃষক রমনী জমির পরিচর্যা করছেন। জমিতে লংকা বেগুন রয়েছে কৃষক বিক্রির জন্য তুলছেন না।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।