রাজ্য

এক নিম্নচাপেই বন্যা পরিস্থিতি রাজ্য জুড়ে


সুপর্ণা রায়, চিন্তন নিউজ, ১ আগষ্ট: আজ প্রায় দেড় বছর হতে চললো করোনা সংক্রমণের জেরে মানুষের জীবন দূর্বিসহ হয়ে উঠেছে। চাকরীহীন হয়ে পড়েছেন বহু মানুষ। তার মধ্যে আমফানের জেরে মানুষ আরো দূর্ভোগে পড়েছে। তারপর করোনা সংক্রমণ বজায় থাকলেও আস্তে আস্তে মানুষ ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে। দক্ষিনবঙ্গের গ্রামীন এলাকা গুলোতে চাষবাস শুরু হয়। কিন্তু একটা দুর্বল নিম্নচাপের জেরে পুকুর, খালবিল, ডোবা সব জলে টইটম্বুর। এই জমা জলে কলকাতা ও আশেপাশের জেলাগুলোয় জলবন্দির ঘটনাও ঘটেছে। আর সেই জল এবার বন্যার রূপ নিয়েছে বাংলা ও ঝাড়খন্ডের বিভিন্ন জলাধার থেকে জল ছাড়ার ফলে। হুগলি জেলার আরামবাগ মহকুমা, হাওড়া জেলার উলুবেড়িয়া মহকুমা ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঘাটাল মহকুমা বন্যার কবলে পড়েছে। এছাড়াও কালনা, বোলপুর ও কান্দি এলাকাতেও বন্যার ভ্রুকুটি।

ডিভিসি থেকে জল ছাড়ার ফলে হু হু করে জল ঢুকছে পূর্ব বর্ধমান জেলার অভ্যন্তরে। এর ফলে প্লাবিত হয়েছে ভাতার, মন্তেশ্বর, মেমারির গ্রামীন এলাকা। জল জমার ফলে যাত্রীবাহী যানবাহন অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। ছোট গাড়ী একেবারেই চলছে না। বর্ধমানের নয়া আতঙ্কের নাম বাঁকা নদী। এই বাঁকা নদী উপছে বিঘের পর বিঘে চাষের জমি ভাসিয়ে সেই জল এখন কোমর সমান হয়ে রাস্তার উপর দিয়ে বইছে। আর এতে ধান চাষের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে, ক্ষতি হয়েছে সবজি চাষের। বাঁকার জলে প্লাবিত কালনা রোড। হাজার হাজার বিঘে ধানের জমি এখন বাঁকা নদীর জলের তলায়। ঋন নিয়ে যারা চাষাবাদের কাজ করেছিলেন তাদের মাথায় হাত। কিভাবে মহাজনের ঋন শোধ করবে তাই নিয়ে চিন্তায় চাষীরা। এই অঞ্চলের লোকেরা বুঝতেই পারছেন না কোনটা রাস্তা, কোনটা পুকুর, কোনটা চাষের জমি অথবা কোনটা সর্বনাশা বাঁকা নদী।

এদিকে ডিভিসি সুত্রে খবর এই বৃষ্টির ফলে জল ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন কর্তৃপক্ষ। জানা গেছে দূর্গাপুর ব্যারেজ থেকে রবিবার দুপুর পর্যন্ত দুই লক্ষ আঠারো হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। ওই জল রবিবার দুপুরের মধ্যে হাওড়া ও হুগলি নদী তীরবর্তী অঞ্চল ভাসিয়ে দেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার অবস্থাও আরও খারাপ। বাঁধ ভেঙে গেছে জলের চাপে, আর হু হু করে শীলাবতীর জল শহরে ঢুকে পড়েছে। মানুষ পানীয় জলের সঙ্কটে পড়েছেন। জলমগ্ন মহকুমা শাসকের দফতর এবং সেখান থেকে জরুরী নথিপত্র সরিয়ে ফেলার কাজ চলছে।জেলের ভেতরও জল ঢুকেছে, তারজন্য বন্দীদের বাইরে বের করে আনা হয়েছে। প্লাবিত এলাকার মানুষজন কোনরকমে রান্না করে একসাথে খাওয়াদাওয়া করছেন। পানীয় জল পাওয়া যাচ্ছে না। বাসিন্দাদের অভিযোগ এই দুরবস্থায় প্রশাসন কোনরকম সাহায্য করছে না। ঘরের ভিতর জল ঢুকেছে তাই ঘরের বাইরে জলের মধ্যে থাকতে হচ্ছে।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।