সূপর্ণা রায়:চিন্তন নিউজ: ২১শে ফেব্রুয়ারি:–আশান্বিত নাসার বিজ্ঞানীরা _মঙ্গলগ্রহে জল আছে কিনা তা নিয়ে বিস্তর গবেষণা চলছে বহুদিন ধরে।। জল্পনাও কম হয়নি।। অবশেষে লালগ্রহের মাটিতে জলের সন্ধানের ব্যাপারে আশার আলো দেখলো মার্কিন গবেষনা সংস্থা নাসা।।
তবে তরল হিসাবে পাওয়া না গেলেও মিলেছে বরফের সন্ধান।।আর বরফ মানেই যে জল খুঁজে পাওয়া তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।।নাসার গবেষকদের দাবি লালগ্রহের ভূস্তরের মাত্র এক ইঞ্চি নিচে রয়েছে বরফ।। মঙ্গল গ্রহের বিষুব থেকে উত্তর মেরু পর্যন্ত বিস্তৃত অঞ্চলে অবস্থিত এই বরফের স্তর।। বরফের চাঁই টির যা আকার তাতে আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া ও টেক্সাস শহরকে ঢেকে দেওয়া যাবে।।
কয়েক কোটি বছর আগে মঙ্গলে তুষারপাত হয়েছিল আর তার জন্যই এই বরফ থাকতে পারে বলে নাসার বিজ্ঞানীদের অনুমান।। আমেরিকার টাক্সনে আরিজোনা ইউনিভার্সিটির গবেষকর আলি ব্র্যানসনের মতে, এখন মঙ্গল গ্রহ ঠান্ডা ও শুকনো হলেও একসময় এখানে বহু নদী, লেক এবং সাগর ছিল তার প্রমাণ মিলেছে।। পৃথিবীর মতো বড় চাঁদ মঙ্গলে নেই।। ঠিক এই কারণেই পৃথিবী যেমন তার নিজের অক্ষরেখায় ঘোরার সময় আহ্নিক গতির সঙ্গে সঙ্গে তার পরিবর্তন ঘটায় মানে একবার উত্তর আর একবার দক্ষিণ মেরু সূর্যের দিকে হেলে যায় মঙ্গল এর ক্ষেত্রে তা হয়ে আসেনি।। পৃথিবীতে চাঁদের টানেই একটি মেরু ক্রমানুসারে সূর্যের দিকে হেলে যায় কিন্তু মঙ্গলের ক্ষেত্রে তা হয় না।। মঙ্গলের উত্তর মেরু উল্টো দিকে হেলে একে বহুযুগ ধরে প্রদক্ষিণ করে চলেছে।। উত্তর মেরু সূর্যের বিপরীতমুখী হেলে থাকায় সেই অঞ্চল এর তাপমাত্রা কমে যায় আর তার ফলে সেখানে যে জল রয়েছে তা ক্রমে বরফে পরিনত হয়।। কিন্তু ঠিক কি কারণে বরফের স্তর ভূগর্ভের নীচে চলে গেছে তা জানার জন্য গবেষণা চালাচ্ছেন গবেষকরা।।
মঙ্গলের উত্তর মেরুর একটি অঞ্চলে ভূগর্ভের নীচে সম্ভবত কাদা,বরফ ও পাথর রয়েছে।।এই অঞ্চলটি ১০৭৫ মিটার থেকে ১৪১০ ফিট বিস্তৃত।। এটি একটি বাটির মতো দেখতে লাগে।। নাসার জেট প্রপালসন ল্যাবরেটরির গবেষক সিলভেন পিকোয়েক্স এক বিবৃতিতে বলেছেন মঙ্গল এর মাটির অগভীর স্তরেই রয়েছে বরফের আস্তরণ।।এটি বার করতে বড় কোন মাটি খোঁড়ার যন্ত্র লাগবে না।।বেলচা দিয়ে মাটির আস্তরণ সরালেই বেরিয়ে পড়বে বরফের আস্তরণ।। উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ক্যামেরায় যে ছবি উপগ্রহ থেকে তোলা হয়েছে তা থেকেই এই তথ্য জানতে পারা গেছে বলে জানিয়েছেন সিলভেন।। বরফের আস্তরণ গবেষকদের যেমন মঙ্গল এর মাটিতে জলের সন্ধান দিয়েছে তেমনি এই গ্রহের কোন অঞ্চল ভবিষ্যতে মহাকাশচারী দের মঙ্গলের মাটিতে পা দেওয়ার পক্ষে উপযোগী তার ধারনা গড়তে সহায়ক হবে।। ইতিমধ্যে ২০৩০ সালে মঙ্গলের মাটিতে মহাকাশচারীদের পাঠানোর প্রস্তুতি শুরু করেছে নাসা।।