চৈতালি নন্দী: চিন্তন নিউজ:১১ই জুলাই:- মার্কিণ যুক্তরাষ্ট্রে আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্রেটিক জো বাইডেনের নতুন চ্যালেঞ্জ ,”বাই আমেরিকান” বা আমেরিকার পণ্য কিনুন। যা দেশের মৃতপ্রায় অর্থনীতিকে অক্সিজেন জোগাবে। মানুষকে স্বদেশী পণ্য কেনার আহ্বান জানিয়ে তিনি ট্রাম্পকে অযোগ্য শাসক হিসেবে উল্লেখ করেন। তাঁর প্রস্তাবিত পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, আমেরিকার ৭০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করা হবে, যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর হয়নি। তাঁর ‘বিল্ড ব্যাক বেটার ‘ বা সুদিন ফেরানোর প্রস্তাবটি প্রযুক্তি ও উৎপাদন ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান বাড়িয়ে দেবে বলে দাবি করা হয়। এর উত্তরে ট্রাম্প বলেন যে এই পরিকল্পনা দেশে বিপর্যয় ডেকে আনবে।
গত বৃহস্পতিবার বাইডেনের শৈশবের শহর পেনসিলভানিয়াতে একটি সভায় তিনি বলেন বর্তমান প্রেসিডেন্টের ব্যার্থতা দেশে যে আর্থিক বিপর্যয় নিয়ে এসেছে তার মূল্য চোকাচ্ছে প্রান্তিক মানুষরা। প্রশাসনের ব্যার্থতার দায় বার বার শ্রমজীবী পরিবারগুলিকেই বহন করতে হয়। আগামী নির্বাচনে প্রধান ইস্যুই হবে মহামারীজনিত অর্থনৈতিক মন্দা, যা কমপক্ষে ১০ মিলিয়ন মানুষকে কর্মহীন করে দিয়েছে এবং মৃত্যু হয়েছে প্রায় ১৩০,০০০।
মহামারী রুখতে প্রশাসনের ব্যর্থতা, বিভেদমূলক আচরণ এবং সম্প্রতি ঘটে যাওয়া বর্ণবিদ্বেষ মূলক প্রতিবাদ আন্দোলন এগুলো এই নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে বলে মনে করেন বাইডেন।
সম্প্রতি একটি প্রাক নির্বাচনী সমীক্ষায় দেখা গেছে বাইডেন ট্রাম্পের থেকে দুই অঙ্কের ব্যবধানে এগিয়ে আছেন। বিশ্লেষকরা এই সমীক্ষা কে বেশী গুরুত্ব না দিলেও মনে করেন, ২০১৬ সালের নির্বাচনে প্রতিপক্ষ হিলারি ক্লিন্টনের থেকে ট্রাম্প যেরকম এগিয়ে ছিলেন, এটা ব্যবধান তার চেয়েও বেশী।
ওবামার কার্যকালে উপরাষ্ট্রপতি হিসেবে কাজ করা বাইডেন ইতিবাচক ভঙ্গিতে জানান এই পরিকল্পনাটিতে উৎপাদন ও উদ্ভাবনীর ক্ষেত্রে কমপক্ষে ৫ মিলিয়ন মানুষের কর্মসংস্থান হবে। তাঁর মতে এই প্রস্তাবটির মূল বিষয়বস্তু হোল “বাই আমেরিকান”। গবেষণা ও নতুন প্রযুক্তির উন্নতি র জন্যে বাড়তি ৩০০ বিলিয়ন ডলার খরচের পাশাপাশি সেদেশে উৎপাদিত পণ্যের জন্যে অতিরিক্ত ৪০০ বিলিয়ন ডলার খরচের প্রস্তাব রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার যেখানে জনগণের ট্যাক্সের টাকা খরচ করে, সেখানে দেশীয় পণ্যই কেনা উচিত যা পরোক্ষে দেশের কর্মসংস্থানও বাড়াবে।
দেশীয় পণ্য কিনুন বা “বাই আমেরিকান” শিরোনাম টা ট্রাম্পের “আমেরিকান ফাস্ট “এর সঙ্গে তুলনীয়। বাইডেনের মতে ট্রাম্প কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছেন ও শ্রমিক শ্রেণীর চেয়ে ধনীদের স্বার্থ রক্ষা করেছেন। মহামারীর সংকটের সময়ও ট্রাম্প শেয়ারবাজার, ডাউ ও নাসডাকের দিকে লক্ষ্য রেখেছেন, প্রান্তিক মানুষদের প্রতি নয়।
কোভিড ১৯ আবহে জো বাইডেন ঘোষণা করেন যে তিনি নির্বাচনী সমাবেশ করবেন না। কোভিড সংকটের সময়েও ট্রাম্প বাজার অর্থনীতি ও মুনাফার স্বার্থে দেশকে উন্মুক্ত রাখলেন। ফলে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়লো, কর্মসংস্থান ও উৎপাদনের পথ রুদ্ধ হলো বলে মনে করেন বাইডেন।
অপরদিকে প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী ট্রাম্প মনে করেন বাইডেনের ” বাই আমেরিকান” অভিমুখী অর্থনৈতিক সংষ্কার ধোঁয়াশায় ভরা নির্বাচনী চমক ছাড়া আর কিছুই নয় যা আর্থিক বিপর্যয় ডেকে আনবে। নভেম্বরেই জানা যাবে জনমতের অভিমুখ।