দেশ বিদেশ রাজ্য

করোনা ত্রাস রুখতে নতুন অক্সিজেনের আশা সিঙ্কোনা চাষে


রত্না দাস:চিন্তন নিউজ:১১ইএপ্রিল:- হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন এর বিপুল চাহিদা এখন বিশ্বজুড়ে। তাতেই আশার আলো দেখছে মংপু কুইনাইন প্রস্তুতকারী সরকারি সংস্থা সিঙ্কোনা প্লান্টেশন।রবীন্দ্রনাথের নামের সাথে এই সংস্থাটির নাম পাকাপাকিভাবে জুড়ে আছে। কিন্তু বাজারে সিনথেটিক ক্লোরোকুইনের চাহিদা বাড়ায় মংপুর এই সংস্থাটির অবস্থা বেহাল। ২০০১ সালে এই প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এই সংস্থার এই কর্মীসংখ্যা পাঁচহাজার।

কফি, রাবার, কমলা, ইপিকাক, টেক্সাস বাটাটা ,কিউই ফলের চাষ করে কোনরকমে তাদের অস্তিত্ব বজায় রেখেছে।কুইনাইন গাছের ছাল থেকে তৈরি কুইনিন,কুইনিডিন, সিনকোডিন সামান্য পরিমাণে মুম্বাইয়ে ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা গুলি কিনে নেয় তা দিয়ে ৫ হাজার কর্মী নির্ভর এই সংস্থার বেতন হয় না। রাজ্য সরকারকে গড়ে প্রায় ৩০ কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হয়। তবে এবার হাল বদলানোর আশায় সংস্থার কর্মীরা।

গতদিনের নবান্নে বণিকসভা ও অন্যান্য সংস্থাগুলির সঙ্গে রাজ্যের প্রশাসনিক বৈঠক এ বৈঠকে সিঙ্কোনা চাষের প্রসঙ্গটি ওঠে। করোনা চিকিৎসায় বিশ্বজুড়েই হাইড্রক্সি ক্লোরোকুইন এর চাহিদা বিপুল হারে বেড়েছে এই অবস্থায় রাজ্য হাইড্রক্সি ক্লোরোকুইন মজুদ করছে। সেই প্রসঙ্গেই ওঠে উত্তরবঙ্গে সিঙ্কোনা চাষের প্রসঙ্গটি। মুখ্য সচিব রাজীব সিনহা বলেন, “উত্তরবঙ্গে সিঙ্কোনা চাষ বন্ধ আছে।এই নিয়ে উত্তরবঙ্গের বণিকসভার সাথে কথা হয়। আমরা বলেছি সিঙ্কোনা চাষ চালু করতে।

এখান থেকে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন এর কাঁচামাল পাওয়া যাবে।’ আর এই চাষের জন্য যা যন্ত্রপাতি লাগবে তার একটা তালিকা জমা দিতে বলা হয়েছে কুইনিন, কুইনিডিন, সিনকোডিন , কাইনিডিন সবাই ক্লোরোকুইন সালফেট গোত্রীয় হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ক্লোরোকুইন ফসফেট গোত্রীয়। যৌগ হিসাবে মিল না থাকলেও মংপু সংস্থাটির কাছে আশার হল কুইনান’ থেকে প্রচুর যৌগ মেলে। কুইনাইনের ছাল থেকে কুইনিন,কুইনিডিন কিংবা কাইনিডিন নিষ্কাশিত করা হলেও বাকি যৌগগুলো সেভাবে গবেষণা করে দেখা হয়নি। হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের চাহিদা বাড়ায় এইবার ক্লোরোকুইন এর বাকি যৌগগুলির ভূমিকা খতিয়ে দেখার সুযোগ এসেছে।

গত কয়েকদিন ধরে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে একের পর এক ফোন আসছে সবাই এই সংস্থাটির হাল জানতে বিশেষভাবে ইচ্ছুক। কুইনাইন প্ল্যান্টেশনের কর্মীরা বলেছেন মনে হচ্ছে এবার হয়তো আমাদের সংস্থাটির নিয়ে নতুন করে ভাবনাচিন্তা শুরু হবে।দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা গুলি আমাদের খোঁজ খবর নিচ্ছে।

কলেজঝোরা পেরিয়ে লাটপানছার থেকে শুরু করে জলপাইগুড়ি জেলার চালসা লাগোয়া গুটিবাজ পর্যন্ত কালিম্পং জেলার বিস্তীর্ণ প্রান্তর জুড়ে কয়েক হাজার একর জমিতে গড়ে উঠেছে কুইনাইন প্লান্টেশন। চাহিদা কমে যাওয়ায় এখন কুইনাইনের জমিতে বিকল্প চাষ হিসেবে শুরু হয়েছে কমলা,কফি,রাবার,কিউই ফলের। মংপুতে ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য বিশেষ ঔষুধি গাছ টেক্সাস বাকটারও চাষ হয়। টেক্সাস বাকটাও নিয়মিত ওষুধ কোম্পানিগুলোতে সরবরাহ করা হয়। জমির একাংশ পাহাড়ের বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করার জন্য দেয়া হয়েছে। কুইনাইনের চাষ ক্রমশ কমানো হচ্ছিল।এবার দিন বদলাবে কিনা সেটাই দেখতে চান মংপুর কুইনাইন প্ল্যান্টেশনের কর্মীরা। সংস্থার এক কর্মী বলেছেন হাইড্রক্সি ক্লোরোকুইন কিভাবে করোনা ঠেকাতে কাজ করে জানিনা ম্যালেরিয়া সারাতেও সিন্থেটিক ওষুধ ব্যবহার হয়। তবে কুইনাইন থেকে২৯ টি যৌগ পাওয়া যায় ফলে। গবেষণার সুযোগ আছে।তাই নতুন করে গবেষণার কাজ বাড়বে।’


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।