নিউজডেস্ক, চিন্তন নিউজ, ৯ সেপ্টেম্বর: ১৬৬ বছরের ঐতিহ্য মুছে যেতে চলেছে বহরমপুরের কৃষ্ণনাথ কলেজের। বিশ্ববিদ্যালয় আইনে বিলুপ্ত হয়ে যাবে ঐতিহ্যবাহী কৃষ্ণনাথ কলেজ। যদিও এখনো বহু কাঙ্খিত মুর্শিদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ শুরু হয়নি। ২০১৮ সালের ১লা অক্টোবর পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা অধিবেশনে মুর্শিদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাস হয়। আইন অনুসারে সেদিন থেকেই কৃষ্ণনাথ কলেজের অস্তিত্ব বিলুপ্ত হয়।
প্রসঙ্গত মুর্শিদাবাদের কাশিমবাজারের রাজা কৃষ্ণনাথ রায় মুর্শিদাবাদে একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের ইচ্ছে প্রকাশ করেন। শিক্ষানুরাগী রাজা কৃষ্ণনাথ তাঁর জমিদারির অনেক অংশ বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির জন্য দান করেন। রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায় নিজের চোখে কলেজ তৈরী দেখে যেতে পারেননি। তাঁর স্ত্রী স্বর্ণময়ী দেবীর প্রচেষ্টায় এবং রাজা মনীন্দ্রচন্দ্র নন্দীর সমর্থন ও সহযোগিতায় ১৮৫৩ সালে গড়ে ওঠে কৃষ্ণনাথ কলেজ। যদিও প্রথমে এই কলেজের নাম ছিল বহরমপুর কলেজ। পরবর্তীতে নাম হয় কৃষ্ণনাথ কলেজ।
কৃষ্ণনাথ কলেজ শুধু মুর্শিদাবাদে নয়, তার নাম ছড়িয়ে পড়ে রাজ্য ছেড়ে সারা দেশে। স্বাধীনতার পূর্ব থেকে আজ পর্যন্ত অনেক বিখ্যাত মানুষ পড়াশোনা করেছেন এই কলেজে। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য-মাস্টারদা সূর্য সেন, নলিনী বাগচী, মণীশ ঘটক, ভাষাশহীদ আবুল বরকত এবং বহু রাজনীতিবিদ।
বিশিষ্ট দার্শনিক শিক্ষাবিদ আচার্য ব্রজেন্দ্রনাথ শীল ও অধ্যক্ষ হুইলার সাহেবের স্মৃতি বিজড়িত কৃষ্ণনাথ কলেজের বিলুপ্তিকরণ বন্ধ করার দাবী করছে মুর্শিদাবাদের মানুষ। তাদের আরও দাবী অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ শুরু হোক সাথে স্নাতক ডিগ্রি পড়ানো হোক কৃষ্ণনাথ কলেজে। এই দাবিতে অধ্যাপক রাজীব সেনের আহ্বানে বহরমপুর ঈশ্বরচন্দ্র ইনস্টিটিউশনে ৮ সেপ্টেম্বর এক নাগরিক কনভেনশন হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন বর্তমান ও প্রাক্তন অধ্যাপক, শিক্ষানুরাগী, কৃষ্ণনাথ কলেজের প্রাক্তনীগণ।
সেই কনভেনশন থেকে দাবি করা হয় মুর্শিদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় অবিলম্বে চালু করা হোক। কিন্তু কৃষ্ণনাথ কলেজের অস্তিত্ব অবলুপ্ত করা চলবে না। কৃষ্ণনাথ কলেজ ক্যাম্পাসে স্নাতক ডিগ্রি পড়ানো হোক। এরপরও যদি কৃষ্ণনাথ কলেজ ক্যাম্পাসে মুর্শিদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় হয়, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে কৃষ্ণনাথ নাম সংযুক্ত করতে হবে এবং স্নাতক পড়ানোর বিভাগ থাকতে হবে।