দেশ রাজ্য

দিল্লি থেকে উদ্ধার ১১ জন বাঙালি শ্রমিক,স্বস্তির নিঃশ্বাস পরিবারে


স্বাতী শীল: চিন্তন নিউজ:২৮শে ফেব্রুয়ারি:–উত্তর পূর্ব দিল্লির হিংসার ঘটনা এখন আর কারোরই অজানা নয়। মৃত্যু মিছিল এখনো অব্যাহত। প্রতিটি পরিবার আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছে ।এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে ১১ জন বাঙালি শ্রমিকের নিরাপদে বাড়ি ফিরে আসার ঘটনা নিঃসন্দেহে আশার আলো দেখায়। আর এই ঘটনাটি সম্ভব হয়েছে লোকসভার কংগ্রেস দলনেতা বহরমপুরের ৫ বারের সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরী এবং টলিউডের তরুণ ফিল্ম এডিটর অনির্বাণ মাইতির সহযোগিতায়।

এ সমস্ত ঘটনাটির সূত্রপাত ঘটে সোশ্যাল মিডিয়ায় করা একটি পোস্ট কে ঘিরে।১১জন বাঙালি শ্রমিকের মধ্যে একজন ফেসবুকে একটি পোষ্ট করে তাদেরকে উদ্ধার করার আবেদন জানান। সাথে একটি ফোন নম্বর দেন।সেই বার্তা পেয়েই অনির্বাণ মাইতি তার দিল্লিবাসী দুই বন্ধু সংযুক্তা চক্রবর্তী এবং পার্থ সাহার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তারা ওই নম্বরে যোগাযোগ করলে জানতে পারেন যে ১১ জন যে সংস্থায় কাজ করেন,সেই সংস্থার মালিক তাদেরকে বলেন যে গোডাউনে লুকিয়ে থাকতে হবে । কোনোভাবেই বাইরে বেরোনো চলবে না। এরা মুর্শিদাবাদের নওদা এলাকার বাসিন্দা শুনে দিল্লিতে থাকা সংযুক্তা ও পার্থ অধীর রঞ্জন চৌধুরী মহাশয় এর দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কলকাতা থেকে অনির্বাণও যোগাযোগ করেন অধীর বাবুর সেক্রেটারি প্রদীপ্ত রাজপন্ডিত এর সঙ্গে। সমস্ত ঘটনাটি শুনে অধীর বাবু যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তখনই।
ইতিমধ্যে অনির্বাণ যোগাযোগ করেন আটক থাকা শ্রমিকদের সঙ্গে এবং জানতে পারেন যে বিগত চার দিন অর্থাৎ সোমবার থেকে তারা অভুক্ত আছেন। তারা কাতর আবেদন করেন কিছু খাবার পাঠানোর জন্য। কিন্তু দুর্ভাগ্য যে খাবার তাদের সেই মুহূর্তে পাঠানো সম্ভব হয়নি কারণ যে চারটি থানা এলাকায় shoot-at-sight অর্ডার জারি করা হয়েছিল সেইরকম একটি এলাকাতেই তারা আটকে ছিলেন।


অধীর রঞ্জন চৌধুরী যে শুধু এই ১১ জনকে উদ্ধার করতে সাহায্য করেছেন তাই নয়, আরো কোথাও বাংলার কেউ আটকে আছে কিনা বা সমস্যায় আছেন কিনা তা জানতে অধীর বাবু অফিস থেকে সেখানকার বাঙালি অ্যাসোসিয়েশন ও দিল্লি প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। এরকম কোন ঘটনার কথা শুনলে তার অফিসের হেল্প ডেস্কে যোগাযোগ করলে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও আশ্বাস দেয়া হয় তার অফিস থেকে। এরপর তিনি নিজে উপস্থিত থেকে উদ্ধার হওয়া ওই ১১জনকে কলকাতাগামী ট্রেনে তুলে দেন। সম্ভবত আজ সকালে তারা পৌঁছে যাবেন নওদায় তাঁদের নিজেদের বাড়িতে।

নওদা হয়ত আজ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলবে নিজেদের ঘরের ছেলেকে ফিরে পেয়ে, কিন্তু এই ১১ জনের এই চার দিনের অভিজ্ঞতা হয়ত খুব একটা স্বস্তির নয়। তারা বারবার এটাই বলবে যে, বন্ধ হোক এই হত্যালীলা। আবার পরিচিত ছন্দে ফিরুক রাজধানী দিল্লি।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।