দেশ

নির্বাচনী বন্ড অসাংবিধানিক -সুপ্রীমকোর্ট লোকসভা ভোটের আগে বড় ধাক্কা শাসকদলের


উত্তম দে, বিষেশ প্রতিবেদন: চিন্তন নিউজ: ১৫/০২/২০২৪:- আজ সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচুড়ের নেতৃত্বে গঠিত পাঁচ সদস‍্যের ডিভিশন বেঞ্চ এক ঐতিহাসিক রায়ে, নির্বাচনী বন্ড বা ইলেকটরাল বন্ডকে অসাংবিধানিক বলে ব‍্যাখ‍্যা করে প্রকল্পটি বাতিল বলে ঘোষণা করেন।

প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ‍্য কালো টাকা বন্ধের নামে কেন্দ্রের মোদী সরকারের উদ‍্যোগে ২০১৭ সালে তৎকালীন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অরুন জেটলি আর্থিক বাজেটের সময়,অর্থবিলের বেশকিছু সংশোধন এনে এই প্রকল্প ঘোষণা করেন এবং ২০১৮ সাল থেকে এই প্রকল্প কার্যকরী করা হয়।এই বন্ড চালু হবার পুর্বে কোন ব‍্যক্তি বা সংস্থা যদি ২০০০০ টাকার বেশী চাঁদা কোন রাজনৈতিক দলকে দিত,তবে সেই টাকার উৎস রাজনৈতিক দলগুলিকে নির্বাচন কমিশনকে জানাতে হতো। কিন্তু এই বন্ড চালু হবার পরে বন্ডের মাধ‍্যমে প্রদেয় অর্থের উৎস রাজনৈতিক দলগুলি গোপন রাখতে পারে। উল্লেখ‍্য,একহাজার, দশহাজার, একলক্ষ, দশ লক্ষ ও এক কোটি টাকার বন্ড ব‍্যাক্তি বা কর্পোরেট সংস্থা স্টেট ব‍্যাঙ্ক থেকে কিনে, রাজনৈতিক দলগুলিকে প্রদান করত এবং দলগুলি তা ভাঙিয়ে তাদের একাউন্টে জমা করত। সিপিআই(এম) দল এই বন্ডের তীব্র বিরোধিতা শুরু থেকেই করে এসেছে। সিপিআই(এম) বন্ডের মাধ‍্যমে কোন চাঁদা গ্রহণ করে না।

নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া রাজনৈতিক দলগুলির অডিট রিপোর্ট থেকে জানা যায়, শুধুমাত্র ২০২২-২০২৩ অর্থবর্ষে বিজেপি এই বন্ডের মাধ‍্যমেই ১,০৩০ কোটি টাকা দলীয় তহবিলে জমা করেছে, যা তাদের মোট প্রাপ্ত চাঁদার ৬১% অন‍্যদিকে এই বন্ডের দ্বিতীয় শীর্ষ উপকৃত দল তৃণমুল কংগ্রেস পেয়েছে শুধুমাত্র ২০২১-২০২২ অর্থবর্ষেই ৫২৮ কোটি টাকা।

সিপিআই(এম) দলের পক্ষ থেকে এই বন্ড বাতিলের জন‍্য দায়ের করা এই মামলায়,সুপ্রিম কোর্ট আজ স্পষ্টত জানিয়ে দেয়, এই প্রকল্প সংবিধানের ১৯ এ ধারাকে উলঙ্ঘন করেছে। কারন বন্ডের মাধ‍্যমে প্রদেয় অর্থের উৎস গোপন থাকার কারণে, তথ‍্য জানার অধিকার থেকে নির্বাচক তথা নাগরিক বঞ্চিত হচ্ছেন। তাই এই বন্ডকে অসাংবিধানিক বলে উল্লেখ করে আজ দেশের সর্বোচ্চ আদালত বাতিল করেই ক্ষান্ত থাকেন নি, বিচারপতি চন্দ্রচুড়ের নেতৃত্বের বেঞ্চ আজ স্টেট ব‍্যাঙ্ককে নির্দেশ দিয়েছেন,২০১৯ এর ১২ই এপ্রিলের পর কোন ব‍্যক্তি বা কোন কর্পোরেট সংস্থা,নির্বাচনী বন্ডের মাধ‍্যমে কোন রাজনৈতিক দলকে কত চাঁদা প্রদান করেছে,তা দেশের নির্বাচন কমিশনকে জানাতে হবে।

এই ঐতিহাসিক রায় একদিকে সিপিআই(এম) দলের এক দীর্ঘ লড়াইয়ের যেমন সাফল‍্য অন‍্যদিকে বিজেপি,তৃণমুল সহ রাজনৈতিক দলগুলি,যারা তাদের তহবিলে জমা হওয়া কর্পোরেটের কোটি কোটি টাকার উৎসগুলি এতদিন গোপন রাখার সুবিধা ভোগ করত,তাদের পক্ষে একটা বড় ধাক্কা তা বলা যেতেই পারে


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।