রাজনৈতিক

ভগৎ সিং–সাম্রাজ্যবাদবিরোধী এক ব্যাতিক্রমী উদাহরণ।


সলিল ঘোষাল, বিশেষ প্রতিবেদন: চিন্তন নিউজ: ১৪/০২/২০২৪:– আমাদের কাছে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম নাম ভগৎ সিং। সাম্রাজ্যবাদী ভয়াবহতার সাথে সাথে অর্থনৈতিক শোষন ও বঞ্চনার কদর্য রূপ সম্পর্কে তৎকালীন স্বাধীনতা সংগ্রামীদের মধ্যে ব্যাপক প্রচার নিরলস ভাবে ভগৎ সিং চালিয়ে গেছেন। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে কমিউনিস্টদের সক্রিয় ভূমিকার কথা আমাদের দেশের ইতিহাস আমাদের শেখায় নি!! কিন্তু মার্কসীয় দর্শনে উদ্বুদ্ধ শহীদ ভগৎ সিং এর ইনকিলাব ধ্বনি আজও পর্যন্ত প্রগতিশীল চিন্তাধারার ছাত্র-যুবদের অনুপ্রাণিত করে চলেছে।

ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের রূপরেখাকে কেন্দ্র করে ভগৎ সিং এবং তৎকালীন কংগ্রেস নেতৃত্বের মধ্যে নীতিগত দ্বন্দ্ব ছিল যথেষ্ট। ভগৎ সিং চেয়েছিলেন–ভারতবর্ষকে শুধু স্বাধীন করলেই চলবে না, সেখানে শ্রমিক এবং কৃষকের সার্বভৌমত্বকে ও প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। মার্কসবাদ–লেনিনবাদ ওনাকে এতটাই আকৃষ্ট করেছিল যে জেলে বন্দি অবস্থাতেও আরো অনেক বেশি পড়াশোনার জন্য তিনি তাঁর এক বন্ধু কে চিঠি লিখে কয়েকটি বই তাঁর কাছে পাঠানোর আবেদন জানিয়েছিলেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য বই গুলি হ’ল কার্ল লেবিনেখট এর লেখা “Materialism” লেনিনের লেখা “Collapse of Second International and Left Wing Communism” বূকানিনের লেখা ” The Theory of Historical Meterialism” কার্ল মার্কসের লেখা “The Civil and War” ইত্যাদি।

সেই সময়কার দেশীয় বুর্জোয়াদের বিরুদ্ধে ভগৎ সিং এর ভূমিকা ছিল খুবই তাৎপর্যপূর্ণ !! দেশীয় বুর্জোয়াদের কিছু সুযোগ সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার মধ্য দিয়ে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন কে দুর্বল করে তোলার স্বার্থে ব্রিটিশ শাসকরা দেশীয় বুর্জোয়াদের কাজে লাগাতো–যে রহস্য টা ভগৎ সিং ই প্রথম বুঝতে পেরেছিলেন।
এত কম বয়সেও তিনি শুধু উপলব্ধি ই করেন নি, তিনি এই সত্যকে প্রচারের আলোতেও এনেছিলেন যে তৎকালীন ভারতবর্ষের শ্রমিক-কৃষকদের একটা বড় অংশ দ্বিমূখী অর্থনৈতিক শোষণের শিকার–এক হ’ল বিদেশিদের দ্বারা শোষণ আর অন্য দিকে দেশীয় পুঁজিপতিদের দ্বারা শোষণ। শ্রেনীসংগ্ৰামের স্বচ্ছ ধারনা ভগৎ সিং অনেক আগেই করে উঠতে পেরেছিলেন।‌সুতারাং ওনার শ্রেনী সংগ্ৰামের পথ ই হয়ে উঠুক আজকের দিনেও বিদ্যমান আমাদের শ্রেনী সংগ্ৰামের পথ।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।