জেলা রাজ্য

কাটমানি খেয়ে নিয়োগের চক্রান্ত ব্যর্থ করো এবং রামপুরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের বাণিজ্যিকীকরণ মানছি নাএই দাবিতে ডিওয়াইএফ‌আই এর বিক্ষোভ আন্দোলন (বীরভূম জেলা নিউজ)


রাহুল চ্যাটার্জি: চিন্তন নিউজ: ২রা জুলাই:– উপযুক্ত প্রার্থীদের বঞ্চিত করে কাটমানি খেয়ে নিয়োগের চক্রান্ত ব্যর্থ করো দাবি জানালো ডিওয়াইএফ‌আই রামপুরহাট ১নং পূর্ব লোকাল কমিটি।। প্রসঙ্গত রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে জরুরী ভিত্তিতে চুক্তি ভিত্তিক পদে নিয়োগের জন্য ইন্টারভিউ দিতে এসেছিল প্রায় ৩০০ জন পরীক্ষার্থী। মোট ১২ টি পদের জন্য পরীক্ষা ছিল। রিপোর্টিং এর সময় ছিল সকাল ১০:৩০ টা, সকল পরীক্ষার্থী ওই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ইন্টারভিউ লাইনে এসে দাঁড়িয়ে ছিল। হঠাৎ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সামনে দাঁড়িয়ে থাকা জনা ৩৫ পরীক্ষার্থীকে হলে ঢুকিয়ে নিয়ে গেট বন্ধ করে দেয়। বাকি প্রায় ২৫০ জনের বেশি পরীক্ষার্থীদের বলা হয় তারা সঠিক সময়ে উপস্থিত হয়নি,তাই তাদের ইন্টারভিউ নেওয়া হবে না। সকল পরীক্ষার্থী একযোগে প্রতিবাদ করলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কর্ণপাত করেননি। বর্ধমানের ব্রততি জশ, মারগ্রামের কামরুল হাসান, ময়ূরেশ্বরের কোট গ্রামের কাজী রিপনের মতো রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা ঐ সকল প্রার্থীরা হতাশ হয়ে বাড়ির পথে রওনা দ্যান শেষে। মাঝে এই ঘটনার যখন সূত্রপাত তখন বঞ্চিত পরীক্ষার্থীদের মধ্যে থেকে কিছুজন এই গুরুতর বিষয়টি ডিওয়াইএফ‌আই বীরভূম জেলা সভাপতি অমিতাভ সিং কে ফোন করে জানান। জেলা সভাপতির নেতৃত্বে ডিওয়াইএফ‌আই এর স্থানীয় নেতৃত্ব রাহুল চ্যাটার্জী, রাহুল সেখ, তুষার মন্ডলরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ- হাসপাতালের এই অনৈতিক কাজের তীব্র প্রতিবাদ জানান। ঘটনা স্থলে শুরু হয় বিক্ষোভ। ডিওয়াইএফ‌আইএর পক্ষ থেকে বঞ্চিত পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে এম‌এসভিপি (MSVP) কে ডেপুটেশন দেওয়া হয়। দাবি জানানো হয় অবিলম্বে অন্যায় ভাবে বঞ্চিত পরীক্ষার্থীদের ইন্টারভিউ দেওয়ার পুনরায় ব্যবস্থা করতে হবে। আবেদনকারী সকল পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা কেন্দ্রে আসার ব্যবস্থা সরকারকে করতে হবে।

সরকারি বিদ্যালয়ের প্রাচীর ভেঙে বেআইনি ভাবে সেখানে বিড়ি-সিগারেট-লটারি-চা ইত্যাদির দোকানঘর বসানোর অভিযোগ উঠলো রামপুরহাটের শতাব্দী প্রাচীন এক বিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতির বিরুদ্ধে। সেই পরিচালন সমিতির মাথায় যিনি বসে আছেন তিনি ঐ এলাকার তৃণমূল কাউন্সিলর এর দাদা। কিন্তু প্রশ্ন হলো যেখানে সরকারি ভাবে বিদ্যালয়ের উন্নয়নে টাকা দেওয়া হয় সেখানে বিদ্যালয়ের তহবিল বাড়ানোর নামে এই নিয়মনীতিহীন কার্যকলাপে একটি স্কুলের পরিচান সমিতি যুক্ত হয় কিকরে..?

মূলত সরকারি সম্পত্তির লুট করার স্বার্থে ও ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করতেই এই নির্মাণ তা বুঝতে আর কারোর বাকি নেই।। লুটেরাদের হাত থেকে শিক্ষাঙ্গন বাঁচাও।
রামপুরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের বাণিজ্যিকীকরণ মানছি না।।
মূলত এই দুই দাবী নিয়ে রামপুরহাট শহর ও আশেপাশের এলাকার মানুষজন যারা রামপুরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র, শিক্ষক বা শিক্ষাকর্মী তথা সমাজের সকল শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষদের স্কুলের সম্পত্তির হরিল্লুঠ হওয়ার বিরুদ্ধে এক হবার ডাক দিল ছাত্র-যুব-সাংস্কৃতিক কর্মী দের নিয়ে গঠিত যৌথমঞ্চ।।

প্রসঙ্গত গত এক সপ্তাহ ধরে এই ইস্যুতে ডেপুটেশন ও শহর জুড়ে প্রচার আন্দোলন গড়ে তুলেছিল সিপিআই(এম) ও সম্মনোভাবাপন্ন গণসংগঠন গুলি।। অবস্থান বিক্ষোভ শেষে মহকুমা শাসক মহাশয়া কে ডেপুটেশন ও সরাসরি পুরো বিষয়টি জানানো হয়।। বহু প্রাক্তন ছাত্র এই আন্দোলনে যুক্ত হয়ে বার্তা তুলে ধরেন অবিলম্বে ঐ অবৈধ নির্মাণ ভেঙে স্কুলকে পুরোনো রূপে ফিরিয়ে দিতে হবে, ও স্কুলের খেলার মাঠটি মেলার মাঠে পরিণত না করে সঠিক ভাবে ব্যবহার করতে হবে।।

শিক্ষা ক্ষেত্রে ব্যয় বরাদ্দ বৃদ্ধি, স্কুল শিক্ষায় এক শিক্ষা বর্ষের এবং কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে এক সেমিস্টারের সমস্ত ফি মকুব, হোস্টেল ফি মকুব, স্কলারশিপ, ফেলোশিপের টাকা নিয়মিত ছাত্র ছাত্রীদের দিতে হবে, দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্র ছাত্রীদের মিড-ডে মিল দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে, পরীক্ষা নেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো রকম ফতোয়া চাপিয়ে দেওয়া চলবে না। ছাত্র শিক্ষক সকলকে নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সূচী নির্ধারণ করতে হবে, স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় খোলার আগে স্যানিটাইজ করতে হবে। গণ পরিবহন ব্যবস্থায় ছাত্র ছাত্রীদের ভাড়া নেওয়া যাবে না, সকল ছাত্র ছাত্রীদের জন্য অনলাইন শিক্ষার পরিকাঠামো তৈরী না করে অনলাইন শিক্ষা, পরীক্ষা এবং মূল্যায়ন কে বাধ্যতামূলক করা যাবে না, সামগ্রিকভাবে শিক্ষা সূচীতে যেমন পরিবর্তন হবে, ডিগ্রী পরীক্ষা, প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষার সময় নির্ধারণের ক্ষেত্রে সেভাবেই সামঞ্জস্য বজায় রাখতে হবে, জুলাই মাসে ঘোষিত উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা নেওয়ার সূচী নিয়ে আরও একটু পর্যালোচনা করা প্রয়োজন, স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে সংবিধানের প্রস্তাবনা পাঠ বাধ্যতামূলক করতে হবে। দেশের ঐতিহ্য এবং ধর্ম নিরপেক্ষতার সংস্কৃতি তুলে ধরতে হবে, আদিবাসী হোস্টেলেগুলি সংস্কার করে ও অন্যান্য দাবী সমূহ নিয়ে আন্দোলনে নামলো SFI বীরভূম জেলা কমিটি।। এদিন জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছাত্র ছাত্রীরা জমায়েত হয় জেলা স্কুলের মাঠে। এর পর সকলে মিছিল করে সিউড়ি পরিক্রমা করে শেষে DM অফিসের কাছে অবস্থান বিক্ষোভে বসেন।। শেষে ৫ জনের এক প্রতিনিধি দল জেলা শাসককে স্মারকলিপি প্রদান করেন।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।