দেশ বিদেশ

মার্কিন হুমকিতে নতজানু, রপ্তানি নীতি শিথিল মোদীর


স্বাতী শীল: চিন্তন নিউজ:৭ই এপ্রিল:- ‘ভারত যদি হাইড্রোঅক্সিক্লোরোকুইন না রপ্তানি করে তাহলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে’ এমনটাই কার্যত হুমকি দিয়েছেন মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প।
করোনা আক্রান্তদের এই হাইড্রোঅক্সিক্লোরোকুইন প্রয়োগ করে সুস্থ করে তোলার প্রচেষ্টা চলছে কারণ এখনো পর্যন্ত করোনার যথাযথ কোন প্রতিষেধক আবিষ্কার করা যায়নি।১৩৫ কোটির ভারতবর্ষ ইতিমধ্যে তৃতীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। ৪৭৮৯ এরই মধ্যে আক্রান্ত। মৃত্যুমিছিল কমছেই না যতই সত্য লুকানো হোক। এই অবস্থায় ভারতের কাছে ডুবন্ত মানুষের শেষ আশার আলোর মতো এই হাইড্রোঅক্সিক্লোরোকুইনই ভরসা। এহেন ভরসাস্থলও আজ শেষ হওয়ার মুখে।

করোনা’র সংকটকালীন পরিস্থিতিতে যাতে এই ওষুধের আকাল না পরে সেই কারণে এই ওষুধের রপ্তানিতে বিধি-নিষেধ আরোপ করেছিল ভারত। কিন্তু সোমবার হোয়াইট হাউসে প্রেস ব্রিফিং চলাকালীন ভারত থেকে চিকিৎসা সামগ্রীর রপ্তানি বন্ধ হয়ে যাওয়া সংক্রান্ত বিষয় সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন যে, এই সিদ্ধান্তকে তিনি সমর্থন করেন না।তিনি আরও বলেন যে, তিনি জানেন যে, ভারত অন্যান্য দেশেও হাইড্রোঅক্সিক্লোরোকুইন সরবরাহ বন্ধ করেছেন।কিন্তু ভারত বিগত বেশ কিছু বছর ধরে আমেরিকার কাছ থেকে বিভিন্ন বাণিজ্যিক সুযোগ-সুবিধা নিয়ে চলেছে। তাই এখন যদি প্রতিদান স্বরূপ ভারত ওষুধ সরবরাহ না করে সে ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অবশ্যই এর প্রতিশোধ নেবে বলে কার্যত প্রচ্ছন্ন হুমকি দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

এই ঘটনার ঠিক পরেই কেন্দ্রীয় বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন যে, এই ঘটনায় রাজনীতি করার কোনো প্রয়োজন নেই।সংকটাপন্ন অবস্থায় শুধু মানবতার খাতিরে কোভিড-১৯ আক্রান্ত দেশগুলিতে নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী উপযুক্ত পরিমাণে হাইড্রোঅক্সিক্লোরোকুইন সরবরাহ করবে ভারত।

এভাবেই মার্কিন চাপের কাছে কার্যত নতিস্বীকার করে মোদি তার রাজনৈতিক গুরুর দেখানো পথেই চললেন আরো একবার।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হুমকির পর একটি ট্যুইট বার্তায় ওষুধ রপ্তানির উপরে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা করেছেন সিপিআইএম সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি।ওই ট্যুইটে তিনি আরো বলেন কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে এই লড়াইয়ে দেশের জনগণের হাতে মোমবাতি ধরিয়ে দিয়ে ট্রাম্পের সুবিধার্থে দেশের স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে ওষুধ রপ্তানির নিষেধাজ্ঞা তুলে দিয়ে মোদি সরকার কার্যত তার ‘জাতীয়তাবাদ’ প্রচারের অসারত্ব প্রমাণ করলেন আরো একবার।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।