তুলসী কুমার সিনহা:চিন্তন নিউজ:২৩শে ডিসেম্বর:–২২শে ডিসেম্বর ২০১৯ রবিবার, রাত্রি ৮টা ৪৫মিনিটে কলকাতার এনআরএস হাসপাতালে প্রয়াত হন সিপিআইএম মুর্শিদাবাদ জেলা সম্পাদক মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্য্য। তাঁর মৃত্যুতে মুর্শিদাবাদ জেলাবাসী শোকস্তব্ধ। রাজনৈতিক দল,ধর্ম,নির্বিশেষে সব মানুষের মুখে এক কথা আজ একজন প্রকৃত অর্থে জননেতাকে হারালেন মুর্শিদাবাদবাসী।
মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্য্য ফুসফুসে ক্যান্সার জনিত কারণে অসুস্থ হয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। তিনি পেশায় ছিলেন প্রাথমিক শিক্ষক। কিন্তু সিপিআইএম পার্টির সর্বক্ষনের কর্মী হওয়ার জন্য তিনি চাকুরী ছেড়ে দেন। মুর্শিদাবাদ জেলার জঙ্গীপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন দীর্ঘ পঁচিশ বছর। জঙ্গীপুরে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। ভাগীরথী নদীর ওপর ব্রীজ তৈরি থেকে রঘুনাথগঞ্জের সবুজদ্বীপ সব উন্নয়ন তাঁর আমলে।
ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে রাজনৈতিক জীবন শুরু। ১৯৬৮ সালে তিনি সিপিআইএম পার্টির সদস্যপদ লাভ করেন। ২০১২সাল থেকে তিনি সিপিআইএম মুর্শিদাবাদ জেলা সম্পাদক হন। এই জেলার বিড়ি শ্রমিকদের স্বার্থে তিনি অনেক আন্দোলন করেছিলেন। কোনও পদ তাঁকে মানুষের থেকে দূরে করে দেয়নি। কারণ তিনি সবসময় মানুষের ডাকে সারা দিতেন।
বহরমপুর সিপিআইএম পার্টি অফিসে প্রয়াত নেতা মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্য্যকে শেষ শ্রদ্ধা জানান জেলার শীর্ষ নেতৃত্ব। নিজদল ও বিরোধী দলের নেতারা স্মৃতিচারণ করে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করলেন।সিপিআইএম কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বর্তমানের ভারপ্রাপ্ত মুর্শিদাবাদ জেলা সম্পাদক নৃপেন চৌধুরী বললেন-মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্য্যের মৃত্যুতে জেলা পার্টির সমূহ ক্ষতি হ’ল। তাঁর অবদান অনস্বীকার্য।তাঁর স্বপ্ন অনুসরণ করে দলের কাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। বীরভূম জেলার প্রাক্তন সাংসদ, সিপিআইএম নেতা রামচন্দ্র ডোম বললেন দেশের এই কঠিন পরিস্থিতিতে মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্যের মত নেতাকে হারিয়ে শুধু মুর্শিদাবাদ জেলা পার্টি নয়, সারারাজ্যের সিপিআইএম আন্দোলনের সমূহ ক্ষতি হ’ল।মুর্শিদাবাদের প্রাক্তন সাংসদ বদরুদ্দোজা খান বলেন, আজীবন লড়াকু নেতা বড়ই অসময়ে চলে গেলেন। তাঁর অভাব অপূরণীয়। প্রাক্তন মন্ত্রী আনিসুর রহমান বলেন, একসাথে লড়াই করে অনেকটা পথ একসাথে হাঁটা। অনেক সাহায্য করেছেন মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্য্য। বর্ষীয়ান সিপিআইএম নেতা সুনীতি বিশ্বাস ভেঙে পড়লেন কান্নায়। তাঁর বক্তব্য একজন দক্ষ সংগঠককে হারালো দল।আজ বড় অসহায় পরিস্থিতি তৈরী হ’ল। সিপিআইএম নেতা তুষার দে বলেন জঙ্গীপুর পৌরসভার চারবারের চেয়ারম্যান মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্য্য দক্ষতার সাথে পুরসভা পরিচালনা করার জন্য রাজ্যে তাঁর একটা দৃষ্টান্ত তৈরি হয়েছিল।
এছাড়াও অন্যান্য বামনেতৃত্ব আরএসপি নেতা প্রমথেশ মুখার্জি, সিপিআই নেতা হারাধন বিশ্বাস, ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা বিভাস চক্রবর্তী প্রত্যেকের এক কথা মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্য্য ছিলেন বাম গণতান্ত্রিক আন্দলনের এক দক্ষ সংগঠক,নেতা।কংগ্রেস দলের অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্য্য শুধু সিপিআইএম নেতা ছিলেন তা নয়, জঙ্গীপুরের অভিভাবক ছিলেন তিনি। তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। জঙ্গীপুরের শ্মশানে ২৩শে ডিসেম্বর প্রয়াত নেতার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।