দেশ শিক্ষা ও স্বাস্থ্য

করোনার বিষয় আশয়(১২)


রঘুনাথ ভট্টাচার্য্য: চিন্তন নিউজ:২৬শে জুন:– করোনা আক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কৃতকার্য রাজ‍্য কেরলের বাম গণতান্ত্রিক সরকারের​ পরিকল্পিত সাফল‍্য আজ সারা পৃথিবীর আলোচনা ও পর্যবেক্ষণের বিষয় হয়ে উঠেছে। এই লড়াই সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করছেন রাজ‍্যের স্বাস্থ‍্যমন্ত্রী কে কে শৈলজা। তাঁর সাফল‍্যমন্ডিত কর্মপদ্ধতি, যা তাঁকে ও তাঁর রাজ‍্যের মানুষ তথা উদ‍্যমী কর্মীবৃন্দকে ভীষণ- করোনা জয়ের দরজায় এনে পৌঁছে দিয়েছে তথা দেশের বামপন্থীদের কাছে দৃষ্টান্তস্বরূপ হয়ে উঠেছে, তাকে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেবার জন‍্য এবং কৃতিত্ব হিসেবে তুলে ধরার জন‍্য রাষ্ট্রসংঘের উদ‍্যোগ প্রশংসার অপেক্ষা রাখে।

রাষ্ট্রসংঘের প্রযোজনায় এক ভিডিও কনফারেন্সে শ্রীমতি কে কে শৈলজা তাঁর তথা রাজ‍্যেএর নজরকাড়া এই লড়াইয়ের অভিজ্ঞতার বিস্তারিত ব‍্যাখ‍্যা করার জন‍্য আমন্ত্রিত​ হয়েছিলেন। সেখানে বক্তব‍্য রাখেন কারা! সারা বিশ্বে তাঁরা স্বনামখ্যাত আন্তর্জাতিক ব‍্যক্তিত্ব। তাঁরা হলেন : রাষ্ট্রসংঘের সেক্রেটারি জেনারেল আন্তোনিও গুতরেস, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার ডিরেক্টর জেনারেল এবং রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদের প্রতিনিধি তিজ্জানি মহম্মদ বান্দে।

শৈলজা তাঁর বক্তৃতায় বলেন কেরালায় সর্বপ্রথম করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ার পর থেকে অনতিবিলম্বে পরম গুরুত্ব সহকারে ও যত্নে এই মারণব‍্যাধির মোকাবেলা করা শুরু করে দেওয়া হয়।বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার উপদেশাবলী অত‍্যন্ত সতর্কতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে অনুসরণ করা হয়েছে এই রাজ‍্যে। সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে যাতে কোনো অবহেলা বা বিচ‍্যূতি না হয়। পরীক্ষার উপর সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে, যাতে প্রতিটি আক্রান্ত ব‍্যক্তি সঠিকভাবে চিহ্নিত হয়।এমনকি সংক্রমিত সংস্পর্শে যারা সম্ভবতঃ এসে থাকতে পারেন তাঁদেরও পরীক্ষা থেকে বাদ দেয়া হয় নি। মানুষ যাতে আত্ম সচেতন থাকেন, এই বৈজ্ঞানিক কর্মপদ্ধতি সম্পর্কে , সে ব‍্যাপারে নিরবচ্ছিন্ন কর্মসূচী কার্যকরী করা হয়েছে। এখনও তা অব‍্যাহত।

এই আন্তরিক অনুশীলনের জন‍্য সংক্রমণ ও মৃত‍্যু উভয়ই নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছে তাঁর রাজ‍্য, বলেন কেরালার স্বাস্থ‍্যমন্ত্রী কে কে শৈলজা। রাষ্ট্রসংঘের আয়োজিত ভিডিও কনফারেন্সে শ্রীমতি শৈলজার এই ব‍্যাখ‍্যা ভূয়সী সম্মান ও প্রশংসা লাভ করে বিভিন্ন দেশের পর্যবেক্ষকদের কাছে।

একথা সর্বজন স্বীকৃত যে কেরালায় বিদেশ প্রত‍্যাগতরা রাজ‍্যবাসী তথা প্রশাসনের কাছে স্বভাবতই বিশেষ উদ্বেগের কারণ ছিলেন। তাদেরকে কেন্দ্র করে এই অতিমারী সারা রাজ‍্যে ছড়িয়ে প’ড়ে বিপরীত অবস্থা সৃষ্টি করতে পারত। কিন্তু সংশ্লিষ্ট সকলের, বিশেষতঃ জনসাধারণের সুশৃংখল তথা তন্নিষ্ঠ নিয়মানুগত‍্য ও উদ‍্যমে সেই সম্ভাবনা নির্মূল হয়। শুধু তাই নয়, শ্রীমতি শৈলজা কনফারেন্সে জানান​ যে, মহারাষ্ট্রে , যেখানে এই অতিমারী ব‍্যাপকভাবে ভয়ঙ্কর মূর্তি নিয়েছে , সেখানেও কেরালা তার সহমর্মী চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সাহায‍্যে করোনার ধ্বংসলীলার​ বিরুদ্ধে সচেষ্ট।

ভারতের সামগ্রিক করোনাচিত্রের প্রেক্ষিতে কেরালার এই মহান উদ‍্যোগ এক অতুলনীয় দৃষ্টান্ত হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছে বিশ্ব সভায়।

এই কর্মকান্ডের প্রত‍্যক্ষ সুফল হিসাবে কিছু তথ‍্যের অবতারণা এখানে প্রাসঙ্গিক বিবেচনায়
নীচে তুলে ধরা হল (বুধবার পর্যন্ত প্রাপ্ত):
কেরলের মোট লোকসংখ্যা – ৩.৪৮কোটি(আনু)
করোনায় আক্রান্ত – ৩৪৫১ জন।
চিকিৎসায় মুক্ত – ১৮০৯ “
মৃত – ২২ “

এই প্রেক্ষিতে সর্বভারতীয়
তথ‍্য : সংক্রমিত – ৪,৭৩,১০৫
সুস্থ্ -. ২,৭১,৬৯৬
মৃত – ১৪৮৯৪
মোট লোকসংখ্যা – ১৩৫.২৬ কোটি।
(২০১৮)
(দেশের দ্রুত ক্রমবর্ধমান আক্রমণের চিত্র
নিত‍্য নিত‍্য ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে। পশ্চিমবঙ্গে
লকডাউন ৩১শে জুলাই পর্যন্ত বাড়ানো হল।)


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।