রাজনৈতিক রাজ্য

করোনার বলী মুর্শিদাবাদ জেলার সংযুক্ত মোর্চার দু’জন প্রার্থী, ঐ কেন্দ্রে ভোট ১৩মে


মল্লিকা গাঙ্গুলি: চিন্তন নিউজ:২০শে এপ্রিল:– ভারতের মতো দেশে নির্বাচন নিঃসন্দেহে একটি দীর্ঘমেয়াদি গনতান্ত্রিক ব্যবস্থা। বিভিন্ন আলাপ আলোচনার দ্বারা নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতির মাধ্যমে একটি রাজ্যের নির্বাচন নির্দিষ্ট হয়। ভারতের সংসদীয় গনতান্ত্রিক ব্যবস্থায় প্রতি পাঁচ বছর অন্তর লোকসভা ও বিধানসভার নির্বাচন আসে। গত ২০১৬ সালের পর রাজ্য রাজনীতিতে অনেক ঘোলা জল গড়িয়ে ২০২১ সালে আবার উপস্থিত পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য বিধানসভা নির্বাচন। এবারের নির্বাচন দুই দিক থেকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।
প্রথমতঃ এবার কেন্দ্রের বিজেপি সরকার বাংলা দখল করে ডবল ইঞ্জিন সরকার গড়তে বদ্ধপরিকর, বিপরীতে অধিকার হারানোর আশঙ্কা তৃণমূল তথা বর্তমান সরকারকে মরিয়া করে তুলেছে, কাজেই এই দুই উগ্রবাদী দলের আকচাআকচিতে বাংলার জনজীবন বিপর্যস্ত। তৃতীয় ফ্রন্ট হিসেবে এবারের ভোট ময়দানে সংগঠিত শক্তি হিসেবে অবতীর্ণ সংযুক্ত মোর্চার জোট।
দ্বিতীয়তঃ এবারের ভোটে মরার উপর খাঁড়ার ঘা ভয়ঙ্কর মারণ ব্যাধি করোনা ভাইরাসের আক্রমণ। এক বছরের অধিক কাল করোনার মারণ থাবা দেশকে ব্যতিব্যস্ত করে রেখেছে, যার দ্বিতীয় প্রবাহ আরও বীভৎস রূপে ফিরে এসেছে। ভোট যুদ্ধকে কেন্দ্র করে ব্যাপক প্রচার, সভা সমিতি, মিছিল মিটিং এর জন্যই পশ্চিমবঙ্গে করোনা সংক্রমণ ব্যাপক হারে বেড়ে চলেছে বলে মনে করা হচ্ছে।

করোনা নেতা মন্ত্রী চেনে না, অতি মাত্রায় ভোট প্রস্তুতির ফলে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি করোনা আক্রান্ত বহু নেতা নেত্রী। দুঃখের বিষয়, কাকতালীয় ভাবে করোনার বলী মুর্শিদাবাদ জেলার দু’জন বিশিষ্ট সংযুক্ত মোর্চার নেতৃত্ব। একজন সামসেরগঞ্জ বিধানসভার জোট প্রার্থী কংগ্রেসের রেজাউল হক ওরফে মন্টু বিশ্বাস এবং অপর জন জঙ্গিপুর কেন্দ্রের আর এস পি এর প্রদীপ নন্দী। গত বৃহস্পতিবার মন্টু বিশ্বাস করোনায় মারা যান এবং ঠিক একদিন পরই মৃত্যু হয় প্রদীপ বাবুর। কার্যত মুর্শিদাবাদ জেলার একই দলের দুই প্রার্থীর মৃত্যুতে দুটি কেন্দ্রেরই ভোট অনিশ্চিত হয়ে পরে।

মুর্শিদাবাদ জেলার এই দুই বিধানসভা নিয়ে এগারোটি আসনে ভোট হওয়ার কথা সপ্তম দফা অর্থাৎ ২৬শে এপ্রিল, কিন্ত এই দুটি আসন বাদ দিয়ে বাকি ন টি আসনে ভোট হতে চলেছে নির্ধারিত ২৬ এপ্রিল অর্থাত সপ্তম দফাতেই। এই দুই কেন্দ্রের কবে আবার নির্বাচন হবে এই নিয়ে চাপানোতোর ছিল। এর মধ্যেই নির্বাচন কমিশনের তরফে সম্প্রতি জানানো হলো এই দুই কেন্দ্রের ভোট হবে আগামী ১৩ই মে, অর্থাৎ ২রা মে ফল ঘোষণার পর।

এখনও সংযুক্ত মোর্চা তথা নির্দিষ্ট দল থেকে মৃত প্রার্থীর জায়গায় নতুন নাম স্থির হয়নি ফলে প্রার্থীর নাম ঘোষণাও হয়নি। আশা করা যায় অচিরেই দল তাদের পরবর্তী প্রার্থীর নাম প্রকাশ করবে, তবে সেই উদ্যম, উদ্যোগ, আয়োজনে কিছুটা ভাটা পরবে সন্দেহ নাই। বিগত বিধানসভা নির্বাচনে সামসেরগঞ্জ কংগ্রেসের দখলে ছিল। এখন একটু হলেও এই কেন্দ্রে কংগ্রেসের মনোবল ভেঙে পরা স্বাভাবিক।

প্রশ্ন থেকেই যায় দুটি কেন্দ্র বাদে সমস্ত কেন্দ্রের ফল ঘোষণার পর এই দুটি কেন্দ্রের ফলাফল সরকার গঠনে কি কোনো প্রভাব ফেলতে পারে? মুর্শিদাবাদের মানুষ তথা সংযুক্ত মোর্চার দৃষ্টি ১৩মের নির্বাচন এবং তার ফলাফলের দিকে নিবদ্ধ।

যাইহোক ভয়াবহ করোনার থাবা দু’জন নেতৃত্বের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে, আরও কত প্রানের বিনিময়ে নির্বাচন সম্পন্ন হবে তা বলাই বাহুল্য। যে সরকারই আসুক এখন সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা এক সুস্থ সমৃদ্ধ পশ্চিমবঙ্গ।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।