রাজ্য

নামেই নির্মল বিদ্যালয়, নেই উপযুক্ত পরিবেশ


সুপর্ণা রায়, চিন্তন নিউজ, ৯আগষ্ট: এই স্কুলটির নাম বনমালীপুর অত্যায়িক প্রাথমিক বিদ্যালয়। বিদ্যালয়টি তার ভাঙ্গাচোরা অবয়ব নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবান গোলার ১ নম্বর ব্লকে। মাথার উপর ছাদ টালির, বৃষ্টি হলেই জল পড়ে টেবিলে, বই খাতার উপরে, পড়ুয়াদের মাথায়। আর এই স্কুলই পেয়েছে নির্মল বিদ্যালয় পুরষ্কার।

বিদ্যালয়ের সামনে জড়ো করা রয়েছে ইট। কারন এই ইট পেতে পেতেই যাতায়াত করতে হয় পড়ুয়া আর শিক্ষকদের, সামনের রাস্তা কাঁচা। ক্ষোভে ফেটে পড়ছে অভিভাবক থেকে শিক্ষকরা, কারন এই স্কুল পরিচালনার জন্য সরকার কোন টাকাপয়সা দেয় না। স্কুলের ভিতর ঘাস কাটা থেকে শুরু করে পড়ানো অবধি সব কাজ শিক্ষকদের করতে হয়। প্রধান শিক্ষক সহ চারজন শিক্ষক রয়েছেন স্কুলে। যে স্কুলে সরকারের কোন নজরই নেই অথচ সরকার পুরষ্কার দিচ্ছে “নির্মল বিদ্যালয়” বলে। স্কুল গ্র‍্যান্ট পায় মাত্র ৫ হাজার টাকা, তাতে বিদ্যুতের বিলটাও মেটে না।

কিন্তু এমন গাফিলতি কেন সরকারের? স্কুলের জন্য ন্যূনতম সাহায্য পেতে কালঘাম ছুটে যায়। প্রতিবছর স্কুলের রক্ষণাবেক্ষণ, বিল্ডিং এর উন্নতি করা, বিদ্যুতের বিল মেটানো ইত্যাদি তো সরকারেরই দেওয়ার কথা। কিন্তু দিচ্ছে না সরকার।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রদীপ জানা জানালেন, “সংশ্লিষ্ট দপ্তরে এসব জানানোর পরও কোন ব্যবস্থা নেয়নি। শিক্ষকরাই ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে স্কুল ঝাঁট দেওয়া থেকে সব কাজ করেন। কারন এসব কাজ করাতে গেলে যদি বাইরের লোক রাখতে হয় তবে তাকে পয়সা দিতে হবে। কিন্তু সেই পয়সা দেবে কে?

জেলার আরও কিছু স্কুলে এই একই ছবি। কিন্তু এই স্কুল নজরে এসেছে এর অবস্থানের জন্য। এই স্কুল থেকে মাত্র ৭/৮ কিলোমিটার দূরে নান্টু প্রধানের বিরাট বেসরকারি কলেজ। অনেক টাকা খরচ করে সেখানে ছেলেমেয়েরা পড়াশুনা করে। এই সেই নান্টু সরকার যে নাকি কৃষকদের জমি হাতিয়ে নিয়ে ভেড়ী বানাত আর সে ছিল এই ভেড়ী বানানোর অন্যতম কারিগর। তৃনমূল কংগ্রেসের এই নেতার মৃত্যু হয় বছর দুই আগে।

অভিযোগ এই নান্টু প্রধান তৃনমূল মহাসচিব এবং শিক্ষামন্ত্রীর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ লোক ছিলেন। এমতাবস্থায় ভগবানপুর-১ নম্বর ব্লক এলাকায় বনমালীপুর অত্যায়িক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দূর্দশা রাজ্য সরকারের চরম অবহেলাকেই তুলে ধরে।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।