জেলা রাজ্য

বহরমপুরে সূর্যসেনা পরিবার আয়োজিত শিশু বইমেলা।


মিতা দত্ত: চিন্তন নিউজ:২১শে ডিসেম্বর:– বইমেলা  নিয়ে যায় এক ভিন্ন জগতে। চারিদিকে শুধু বই। মনে প্রাণের স্পন্দন যেন বেড়ে যায়। সব মেলায় শিশুদের আগমন হয়। মেলা মানেই তো প্রাণের খেলা। সেই খেলায় শিশুরা স্নাত হয় সবথেকে বেশী। সেই মেলা যদি শিশু বইমেলা হয়, তবে তো কথাই নেই। অভিভাবকের হাত ধরে আগমন, প্রাণের খুশীতে চলাফেরা, বই দেখা ,কেনার আবদার, সবমিলিয়ে তাদের চোখে, মুখে খুশীখুশী ভাব।

সূর্য সেনা পরিবার আয়োজিত আঠাশতম শিশু বইমেলায় গত তিনদিন ধরে শিশুদের নির্মল আনন্দদান করলো।এই বছর কোভিড পরিস্থিতিতে স্টলের সংখ্যা কম রাখতেই হয়েছে। কিন্তু আয়োজনের স্বপ্লতা থাকলেও আন্তরিকতার কোনো কমতি ছিলো না। বইমেলায় ছিলো সাংস্কৃতিক মঞ্চ ,সেখানে শিশুদের ললিত কলা প্রদর্শন মেলাকে পৃথক মাত্রা দিয়েছে।বিশেষ করে উল্লেখের দাবী রাখে বইমেলার কর্ণধার নির্মল সরকার মহাশয়ের বাচ্চাদের নিয়ে গল্পের আসর ছোটোবড়ো সবাইকে যেন এক লহমায় নিয়ে গেলো সেখানে, যেখানে হারিয়ে যেতে নেই মানা । কলকাতা, ত্রিপুরা ও বাংলাদেশের প্রকাশনা সংস্থাও বই পাঠিয়েছিল। মেলায় উদযাপিত হয়েছে উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর জন্ম সার্ধশতবর্ষ ও সুকুমার রায়ের ১২৫তম বর্ষপূর্তি।

এই বছর পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের মুর্শিদাবাদ জেলা বহরমপুর বিজ্ঞান কেন্দ্র বইয়ের স্টল দিয়েছিল। বিজ্ঞান মঞ্চ শুধু বইয়ের স্টল দেওয়ার নিজেদের কাজ সীমাবদ্ধ রাখতে পারে না। তাই একদিকে চলল সাংস্কৃতিক মঞ্চে কুসংস্কার বিরোধী খেলা ও নাটক। এক্ষেত্রে নীলু মহাপাত্রের নাম না করলেই নয়। ওনাকে অনুরোধ করার সঙ্গে সঙ্গে নাটকের প্রয়োজনে ওনার কণ্ঠে একটি গান পাঠিয়েছিলেন। খেলা ও নাটকটি দর্শকমনে রেখাপাত করেছে । অনুষ্ঠান শেষে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে দর্শকরা সেকথা জানিয়েছেন ও অনেকে তাদের এলাকায় ‘শো’ এর আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। প্রত্যেকটি স্টলে ছোটোদের আনাগোনা চোখে পড়ার মতো । বিজ্ঞান মঞ্চের স্টলও ব্যতিক্রম নয়। সাগ্রহে বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্য হলেন অনেকে যা আগামীদিনে বিজ্ঞান আন্দোলনকে শক্তিশালী করবে।

কিন্তু  এতো পাওয়ার মধ্যে একটি চরম না পাওয়া বিচলিত করার মতো। কিশোর, কিশোরী যারা ইংলিশ মিডিয়ামে পড়ে, তাদের বাংলা বইয়ের প্রতি চরম অনাগ্রহ । ভবিষ্যত প্রজন্মের এই অনাগ্রহ ওদের কোথায় নিয়ে যাবে, সত্যিই ভাবার! ইংরেজী মিডিয়ামে পড়তে গিয়ে নিজের অজান্তে শিকড়চুত্য হয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে অভিভাবকদের ভাবার সময় মনে হয় এসে গেছে।

বইমেলা শেষ হলো শীতের মরসুমে বিশেষ প্রাপ্তি পিকনিক দিয়ে। সবাই মিলে একসাথে সান্ধ্য আড্ডায় কাটানো হলো আগামীর অপেক্ষায় ।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।