চৈতালী নন্দী:চিন্তন নিউজ:৩রা ফেব্রুয়ারি:–আদিবাসী অধ্যুষিত জঙ্গলমহলের গেরুয়া ঝড় থামাতে জোড়াফুলের অস্ত্র হতে চলেছে একদা মমতা ঘনিষ্ঠ ছত্রধর মাহাতো।।
দীর্ঘ ১১বছর কারাবাসের পরে জামিনে মুক্ত হলেন লালগড়ের ‘ ‘জনসাধারণের কমিটি’ (মাওবাদী-তৃণমূলীর প্রকাশ্য মঞ্চ) নেতা ও আহ্বায়ক ছত্রধর মাহাতো।২৮টি মামলার জাল কাটিয়ে শনিবার তিনি জেলের বাইরে আসেন।আপাতত তিনি লালগড়ে নিজের বাড়িতে ফিরবেন।
রাজনৈতিক পালাবদলের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় এই লালগড় আন্দোলন। ২০০৮ সালে তার নেতৃত্বেই তুঙ্গে ওঠে এই লালগড় আন্দোলন।পরিকল্পিত আক্রমণে বহু বামপন্থী কর্মীর প্রানহানি ঘটে এসময়।প্রকৃতপক্ষে তৃনমলের সঙ্গে মিলিত শক্তিগুলি বাম সরকারকে উৎখাত করতে ঘুঁটি সাজিয়েছিলো যা শেষপর্যন্ত বাম সরকারকে ক্ষমতা থেকেঅপসারণ করে।
২০০৮সালে পূর্বতন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য শালবনীতে জিন্দালের কারখানার শিলান্যাস করে ফেরার পথে গাড়ি বিষ্ফোরণের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত হিসেবে উঠে আসে ছত্রধর মাহাতোর নাম। ২০০৯ সালে সাংবাদিকের ছদ্মবেশে পুলিশের জালে ধরা পড়েন তিনি। যাবজ্জীবন কারাদন্ডের সাজা হয় তার।ছত্রধরের গ্রেফতারের প্রতিবাদে তখন পথে নেমেছিলেন তৃণমূল দল ও দলের সমর্থক কিছু বুদ্ধিজীবী।
এর পর পট পরিবর্তন হয়।তৃনমূল ক্ষমতায় আসার পর প্রত্যাশিত ভাবেই তৃণমলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে তার। বিভিন্ন মামলায় ‘বেকসুর খালাস’ ও জামিন পেতে থাকেন তিনি। সাজা কমে হয় ১০বছর। জেলে থাকাকালীন মুকুল রায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করে পদ্ম শিবিরে যোগ দেবার আহ্বান জানালেও, সফল হননি।বিজেপির থেকে তৃনমলের দূরত্ব বোঝাতেই এই নাটক করা হয়েছিল।জেলে থাককালীন শেষ বছরটি হাসপাতালে কাটে তার। কয়েকবছরে যা তৃমমূলী নেতাদের প্রথায় পরিণত হয়েছে। তিনি যে বেশ বহাল তবিয়তেই জেলে ছিলেন তা তাকে দেখেই মালুম হচ্ছিল।
এদিন বাইরে বেড়োনোর পর সব ধোঁয়াশা কাটিয়ে তৃণমলের হয়ে কাজ করার ইচ্ছে প্রকাশ করেন ছত্রধর মাহাতো। তিনি বলেন যে, এতোদিন মানুষের জন্যে কাজ করেছেন, এখনও তাই করবেন। তিনি যে তৃণমলের হয়েই কাজ করতে চান, তাও স্পষ্ট করে দেন। জঙ্গলমহলে গেরুয়া প্রভাব কাটাতেই যে তার তৃনমলে যোগদান, সাজানো হয় সেই নাটকের ব্লু প্রিন্টও।প্রকৃতপক্ষে তৃনমূল যে বিজেপির ই সহযোগী শক্তি তা এখন জনসমক্ষে স্পষ্ট।তাছাড়া বামেদের বিভিন্ন আন্দোলন কর্মসূচিতে বিপুল জনসমাগম ভয় ধরিয়েছে তৃনমূল ও বিজেপির মনে।একযোগে বামেদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্যেই ছত্রধরের মুক্তি।