চৈতালী নন্দী:চিন্তন নিউজ:৪ঠা নভেম্বর:-বেঙ্গল কেমিক্যাল বাঙালির কাছে এক আবেগজড়িত নাম, যে কোম্পানির নির্মাতা ছিলেন আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়। সেই সময় ব্যবসাবিমুখ বাঙালিকে পথ দেখানোর জন্যে তিনি এই কোম্পানির পত্তন করেন। সেটা ছিল ১৯০১ সাল, ১৯৪৪ সালে তাঁর মৃত্যুর পর কোম্পানির পতনের শুরু। তার পর থেকেই কোম্পানি টি লোকসানে চলতে থাকে।এর পর চন্দ্রাইয়ার নেতৃত্বে কোম্পানি টি২০১৫ সালে ৫০বছরে প্রথম লাভের মুখ দেখে। তখন থেকেই কোম্পানি টিকে বিক্রি করার জন্যে সরকারী প্রচেষ্টা চলতে থাকে।
এতোদিন পর্যন্ত এখানের কর্মচারীরা ১৯৯৭ সালের বেতন কাঠামো অনুযায়ীই বেতন পেয়ে আসছিলেন। অজুহাত হিসেবে বলা হচ্ছিল সংস্থাটি লোকসানে চলছে। কিন্তু তা সত্যি ছিল না।১৯৯২ সালেই সংস্থাটি বিআইএফআর এ চলে যায়।কিন্তু কর্মচারীদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় হাইকোর্টের মামলার রায়ে কোম্পানিটি বিক্রির হাত থেকে রক্ষা পায়।শিল্পটির পুনরুজ্জীবন এর জন্যে অনুমোদন পেলেও শেষপর্যন্ত রুগ্নতা কাটানো সম্ভব হয়নি।
২০০৬ সালে কেন্দ্রীয় সরকারের ৪৪০কোটি টাকা অনুদানে কোম্পানিটি ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে।শ্রমিক কর্মচারীদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় ঋন মিটিয়ে ২০১৮/১৯ সালে লাভের মুখ দেখে।পরপর তিন বছর লাভের মুখ দেখার পর কর্মচারীরা দাবী জানায় ,অবিলম্বে বেতন কাঠামোর সংস্কার চাই, ওঠে ন্যায্য বেতনের দাবী ও।কেন্দ্রীয় সরকার জানায়২০০৭ সালের বেতন কাঠামো অনুযায়ী মুল বেতনের ৫০% যোগ করে ভাতা দিতে পারে সংস্থা। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ২০% থেকে ৩০% নিয়ে দর কষাকষি চললেও কর্মীরা কিন্তু ৫০% এই অনড় থাকে।
এরপর কোনো আলোচনা বা দ্বিপাক্ষিক চুক্তি ছাড়াই একতরফা ভাবে চলতি মাসের বেতন থেকে কেটে নেওয়া হয় কর্মচারীদের ভাতা বা আ্যালাউন্স।কর্মচারীরা তা বুঝতে পারেন বেতন তাদের এ্যাকাউন্টে ঢোকার পর। যিনি হয়তো ১৫০০০ টাকা বেতন পান , এবার এ্যালাউন্স কেটে তিনি হাতে পেয়েছেন ১০০০০ টাকা।এইভাবে নীতিবিরুদ্ধ ভাবে বেতন থেকে ভাতা কেটে নেওয়ার ক্ষোভে ফেটে পড়েন তারা। এতে যোগ দেয় সমস্ত ট্রেড ইউনিয়ন।
কর্মচারীরা দাবী করে অবিলম্বে মূল বেতনের ৫০% এ্যালাউন্স না দিলে ঘেরাও করা হবে সংস্থার কর্পোরেট দপ্তর।কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি নেপালদেব ভট্টাচার্য এবং সাধারণ সম্পাদক মৃনাল রায়চৌধুরী একথা জানান এইভাবে কোনো আইন কানুনের পরোয়া না করে বেঙ্গল কেমিক্যাল এর কর্মচারীদের বেতন ভাতার টাকা গায়েব করার বিরুদ্ধে নেতৃত্বের আহ্বান, শ্রমিক দের অসন্তোষ ধূমায়িত হোক লংমার্চে,পরবর্তীতে যা স্তব্ধ হবে ৮ই জানুয়ারি র ধর্মঘটে।