রাজ্য

তৃণমূলের হাত থেকে বাঁচতে বিজেপিকে নিয়ে এলে বড় সর্বনাশ হবে।


সুপর্ণা রায়, চিন্তন নিউজ, ২৫ আগষ্ট: সিপিআইএম পলিটব্যুরো সদস্য কমঃ মানিক সরকার পশ্চিমবঙ্গবাসীর কাছে আবেদন করেছেন বর্তমান সরকারের হাত থেকে বাঁচতে তারা যেন বিজেপির হাত না ধরেন। তিনি বলেন বামপন্থার কোন বিকল্প হয় না। বামপন্থীদের পাশেই মানুষকে জড়ো করে কাজ করতে বলেছেন। যারা ভাবছেন লোকসভা ভোটে তৃনমূলকে জব্দ করে বিজেপির সাথ দিয়েছিলেন এবং তারপর বিধানসভা ভোটে বাংলাতেও জেতাবেন তারা ভুল ভাবছেন। গরম তেল থেকে অগ্নিকুণ্ডে ঝাঁপ না দেওয়ার অনুরোধ জানান। বলেন সর্বনাশ ঘটে যাবে।

নিখিল বঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির ৪৬ তম রাজ্য সন্মেলন শুরু হয়েছে মথুরাপুরের রবীন্দ্র অডিটোরিয়ামে। এখানে প্রকাশ্য সমাবেশে ভাষন দিয়েছেন কমঃ মানিক সরকার, বাম পরিষদীয় দলের নেতা সুজন চক্রবর্তী ও সম্মেলন সমিতির পক্ষ থেকে কান্তি গাঙ্গুলি। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার শিক্ষা ক্ষেত্রে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে যে আক্রমন শিক্ষকদের উপর নামিয়ে আনছে তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার কথা বলেছেন তারা।

এই লোকসভা ভোটে বিপুল জনসমর্থন নিয়ে মোদী দ্বিতীয় বার সরকার গঠন করেছেন। তার পর থেকে মোদী-অমিত শাহরা দেশের ধর্মনিরপেক্ষতা গনতন্ত্র ও যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর উপর চুড়ান্ত আক্রমন নামিয়ে আনছেন। কিন্তু এসব সত্ত্বেও সব শেষ হয়ে গেছে এমন ভাবার কোন কারন নেই। অন্যদিকে অর্ডিন্যন্স ফ্যাক্টরি তুলে দেওয়ার প্রতিবাদে ধর্মঘট শুরু হয়েছে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে। পেটে আঘাত লাগলেই মানুষ ঘর থেকে বেরিয়ে প্রতিবাদে অংশগ্রহন করবে।। পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষক – পার্শশিক্ষকরাও প্রতিবাদের ঢেউ তুলেছে। এই প্রতিবাদ আগামী দিনের আশার আলো দেখাচ্ছে।

মানিক বাবু বলেন তৃনমূলের সীমাহীন অত্যাচার আর দূর্নীতি দেখে মানুষ বিজেপিকে ভোট দিয়েছে। কিন্তু বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে আনার ভুল মানুষ কিছুতেই করবে না। মানিকবাবু পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে ত্রিপুরা এবং আসামের অবস্থা দেখতে অনুরোধ করেন। তিনি বলেন ত্রিপুরার নির্বাচনের সময় বিজেপি নানারকম প্রলোভন দেখিয়েছিল, চাকরী দেবার কথা বলেছিল, রেগাতে ২০০ দিনের কাজ দেবার কথা বলেছিল। আর এখন একদম উল্টো কথা বলছে। বলছে সরকার চাকরী দেবার মেশিন নয়, পানের দোকান করতে বলছে। ২০০ দিন তো দূরের কথা রেগার কাজ সম্পূর্ণ বন্ধ। যা কাজ মানুষ পাচ্ছে তার থেকে অর্ধেক নিয়ে নিচ্ছে বিজেপি।

নতুন কর্মী নিয়োগ তো দুরের কথা, অবাধে কর্মী ছাটাই চলছে। স্কুল, হাসপাতাল প্রভৃতির পরিষেবা ভেঙ্গে পড়েছে। আইন শৃংখলা বলতে কিছু নেই। পেট্রল-ডিজেলের দাম এমনিতেই আকাশছোঁয়া, তার উপর ত্রিপুরা সরকার সেস বসিয়ে তা আরও দূর্মূল্য করে তুলেছে। ভোটে জিতেই চূড়ান্ত আক্রমণ নামিয়ে আনছে বামপন্থীদের উপর, বুলডোজার দিয়ে পার্টী অফিস গুড়িয়ে দিচ্ছে। বাম কর্মীদের বাড়ীঘর লুঠপাঠ চালাচ্ছে। জীবিকা কেড়ে নিয়ে মানুষের প্রতিবাদ বন্ধ করার চেষ্টা করছে। শিক্ষকরা মানুষ গড়ার কারিগর। তাদের অর্থউপার্জনের প্রতিযোগিতায় নামিয়ে দিচ্ছে আর এই কাজ করতে গিয়ে শিক্ষকদের সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন করছে। তিনি বলেন জাত-ধর্ম-ভাষার নামে মানুষের মধ্যে ভেদাভেদ না করে শিক্ষা দিন।

কমঃ সুজন চক্রবর্তী বলেন গত কয়েকমাস ধরে শিক্ষক -পার্শ্বশিক্ষকদের আন্দোলন দমন করতে রাজ্য সরকার উঠেপড়ে লেগেছে। শিক্ষকদের অমর্যাদা কেউ মেনে নেবে না। নবান্নকে বুঝিয়ে দিতে হবে শিক্ষকদের নিরাপত্তা-মর্যাদা-বেতন সবই দিতে হবে রাজ্য সরকারকে। সম্মেলনের উদ্বোধন করে শিক্ষক সমাজকে তাদের কর্ত্তব্যের কথা স্মরন করিয়ে দিয়েছেন হরপ্রসাদ সমাদ্দার।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।