রাজ্য

:-স্তব্ধ বিশ্বভারতী।


রণদীপ মিত্র: চিন্তন নিউজ:৮ই জানুয়ারি:-স্তব্ধ বিশ্বভারতী। বানচাল বিশ্বভারতীর সিএএ’র স্বপক্ষে সেমিনার। ঘন্টার পর ঘন্টা ঘেরাও সেই সেমিনারের বক্তা বিজেপি সাংসদ সহ উপাচার্য। ৮’র হরতাল বিশ্বভারতীর বুকে।

বুধবার আলো ফুটতেই বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় কার্যালয় অবরুদ্ধ করেন পড়েন পড়ুয়ারা। কার্যালয়ের মূল ফটক আটকে কবিতা, গান, হাতে লেখা পোস্টার নিয়ে বসে পড়েন মাটিতে। যে ফটক আর খোলেনি সারাদিন। ভাষাভবন থেকে বিদ্যাভবন, শিক্ষাভবন থেকে কলাভবন, সঙ্গীত ভবন সর্বত্র পঠন পাঠন শূন্য এক নজিরবিহীন দিনের সাক্ষী থেকেছে শান্তিনিকেতন ক্যাম্পাস।

সবশেষে সাক্ষী থেকেছে বিজেপি সাংসদকে ঘেরাও করে পড়ুয়াদের অমিত শাহ, নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে ধিক্কার উগড়ে দিতে। বিশ্বভারতী উদ্যোগে ‘দ্য সিএএ ২০১৯- আন্ডার স্ট্যান্ডিং অ্যান ইন্টারপ্রিটেশন’ শীর্ষক সেমিনারের বক্তা ছিলেন বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত। পড়ুয়ারা দিনভর ধর্মঘট করে হাজির হয়ে যান লিপিকার সামনে। অবরুদ্ধ করে দেন পেক্ষাগৃহের দরজা। বেগতিক বুঝে উপাচার্য তখন বিজেপি সাংসদকে নিয়ে এখান থেকে ওখান করে বেড়ান। খবর আসে শ্রীনিকেতনের সমাজচর্চা বিভাগে একটি হলে তালাবন্ধ করে শুরু হয়েছে সেই সেমিনার। খবর পেয়ে কয়েকশো পড়ুয়া সাইকেল, টোটো, স্কুটারে করে পৌছে যান সেখানে। ক্ষোভ তুঙ্গে ওঠে বাকি পড়ুয়াদের। হলের তালা ভেঙে , পাঁচিল টপকে ছাত্র-ছাত্রীরা ঘেরাও করে ফেলে সেই সেমিনার হল। চলতে থাকে তীব্র স্লোগান। বিজেপি সাংসদকে শুনতে হয় ‘গো ব্যাক’ স্লোগান।

পড়ুয়াদের চিৎকারে, ক্ষোভের বহি:প্রকাশে ফিকে পড়ে যায় সেমিনার তথা আরএসএস নেতা তথা বিজেপি সাংসদের সিএএ নিয়ে ভাষণ। নাছোড় পড়ুয়াদের কাছে ঘন্টার পর ঘন্টা ধরে এভাবেই ঘেরাও হয়ে থাকেন উপাচার্য সহ সাংসদ ও অন্যান্য বক্তারা। এদিন শুধু পড়ুয়ারাই নন, অধ্যাপকরাও সামিল হন ধর্মঘটের সমর্থনে। উপাসনা গৃহের সামনে বন্ধের সমর্থনে অবস্থান করেন তারা।
বিক্ষোভে-হরতালে সামিল এসএফআই নেতা সোমনাথ সৌ, মইনুল হাসানরা ক্ষোভের সাথে বলেছেন, ‘‘বিজেপি-আরএসএসের লোক নিয়ে কেন পড়ুয়া-অধ্যাপকদের অন্ধকারে রেখে কোন স্বার্থে এমন সেমিনার করছে সেই প্রশ্নেই পড়ুয়ারা দিনভার বিক্ষোভে সামিল হয়েছেন। তার আগে সর্বাত্বক বন্‌ধ করেছে ক্যাম্পাস জুড়ে।’’

বিশ্বভারতীর অর্থনীতির অধ্যাপক সুদীপ্ত ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, ‘‘এটা সম্পূর্ণ উপাচার্যের তৈরী করা উস্কানী। উপাচার্য স্রেফ গৈরিকীকরণের লক্ষ্যে বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ স্বপন দাশগুপ্তকে ডেকেছিলেন। কয়েকজন বহিরাগত আর এস এসের লোকজনকে নিয়ে তালাবন্ধ করে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করতে চেয়েছিলেন। পড়ুয়াদের ক্ষোভ স্বাভাবিক। এখন যদি অবস্থা হাতের বাইরে বেরিয়ে যায় তার যাবতীয় দায় উপাচার্যের।’’

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত জানা গেছে, এমন পদক্ষেপ নেওয়ার দায়ে উপাচার্যকে ক্ষমা চাইতে হবে বলে দাবি তুলেছেন পড়ুয়ারা। ঘেরাও এখনও অব্যাহত। ঘেরাও হওয়া বিজেপি সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত স্বভাবতই প্রচণ্ড ক্ষিপ্ত।
রাত ৯টা নাগাদ ঘেরাও মুক্ত হোন বিজেপি সাংসদ সহ উপাচার্য।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।