রাজ্য

উচ্চমাধ্যমিক মেধাতালিকায় এবার বীরভূমের জয়জয়াকার


চিন্তন নিউজ:২৭শে মে:-রণদীপ মিত্র:— সিউড়ির বীরভূম জেলা স্কুলের ছাত্র শোভন মন্ডল উচ্চ মাধ্যমিকে যুগ্মভাবে পেয়েছে প্রথম স্থান (৪৯৮)। প্রত্যন্ত গ্রামের ছেলে শোভন গ্রামের স্কুল থেকেই মাধ্যমিকে রাজ্যে অষ্টম হয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছিল সকলকে। অষ্টম স্থান এই ছাত্রের জেদ বাড়িয়ে দিয়েছিল কয়েকগুন। সেই জেদ-ই শোভনের হাতে তুলে দিয়েছে উচ্চ মাধ্যমিকে প্রথম স্থানের শিরোপা। এ পি জে আব্দুল কালামের একনিষ্ঠ ভক্ত শোভনের কখনই পছন্দ ছিল না বাঁধাধরা গতে পড়াশুনা করা। যখন ইচ্ছা হয়েছে তখনই পড়েছে। পড়েছে শুধুই পাঠ্যপুস্তক। বীরভূমের ময়ূরেশ্বরের প্রত্যন্ত গ্রাম কাঠডিঘায় বাড়ি তার। বাবা সু্ভাষ মন্ডল প্রাথমিক শিক্ষক। মা নূপুর মন্ডল গৃহবধূ। গ্রাম লাগোয়া কোটাসূর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিকে অষ্টম স্থান পাওয়ার পর শুধুমাত্র শোভনের পড়াশুনার জন্য গোটা পরিবার চলে আসে সিউড়ির ভাড়াবাড়িতে। শোভন ভর্তি হয় বীরভূম জেলা স্কুলে। সেই স্কুল থেকেই ৪৯৮ নম্বর পেয়ে আজ উচ্চ মাধ্যমিকে প্রথম শোভন। শোভন জানায়, ‘‘নিয়ম করে ঘন্টার পর ঘন্টা নয়, যখন মন চাইত তখনই পড়তাম। তবে তারজন্য কখনই ক্রিকেট খেলা আর গল্পের বই পড়ায় কোনো ঘাটতি ছিল না। গণিত প্রিয় বিষয়। চাই বড় হয়ে চিকিৎসক হ’তে ।’’ ক্রিকেটের পোকা শোভন কেন চিকিৎসক হতে চায় সেই প্রশ্নের উত্তর এই মেধাবী ছাত্র সাফ জানিয়েছেন, ‘‘রাজ্যে হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র বহু আছে, কিন্তু চিকিৎসক কই ? গ্রামের মানুষকে নাজেহাল হতে হয়ে চিকিৎসা পেতে। সেই সঙ্কট কিছুটা দূর করার লক্ষ্য নিয়ে চাই ভালো ডাক্তার হতে। মানুষের সেবা করতে।’’ শোভনের বিষয় ভিত্তিক নম্বর হল, বাংলা-১০০,গণিত-১০০,রসায়ন-১০০,ইংরাজী-৯৯,জীববিদ্যা-৯৯।
উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞান ও কলা বিভাগের দুই প্রথম বীরভূমের।”* রাজ্যে প্রথম হয়েছে এই জেলার সাঁইথিয়া টাউন হাইস্কুলের ছাত্র রাকেশ দে। মেধা তালিকায় তার স্হান চর্তুথ। রাকেশ মাধ্যমিক পরীক্ষায় রাজ্যে দশম স্থান অধিকার করেছিল।এবার কলা বিভাগে রাজ্যে প্রথম ও মেধা তালিকায় চতুর্থ স্থান অধিকার করেছে। রাকেশের বাড়ি সাঁইথিয়া থানার লাউতোড় গ্রামে।রাকেশের বাবা রঘুনাথ দে।রাকেশের ইচ্ছা অধ্যাপক হওয়ার। পঞ্চম স্হান অধিকার করেছে বীরভূম জেলা স্কুলের ছাত্র শীর্ষেন্দু ঘোষ।তার প্রাপ্ত নম্বর ৪৯১। তার বাবা রাজীব ঘোষ আই সি ডি এস এর কো অর্ডিনেটর।মা সীমা ঘোষ।তাদের আদি বাড়ি গোয়ালিয়ারা গ্রামে। শীর্ষেন্দুর প্রাপ্ত নম্বর বাংলা ৯১, ইংরেজি ৯৭,রসায়ন ৯৮,গনিত ৯৯, পদার্থবিদ্যায় ৯৮,বায়োলজিতে ৯৯ পড়ার পাশাপাশি ক্রিকেট খেলতে ভালোবাসে।তার ইচ্ছা চিকিৎসক হবার। ষষ্ঠ স্থান অধিকার করেছে সিউড়ি কালীগতি স্মৃতি নারী শিক্ষানিকেতনের ছাত্রী স্নিগ্ধা বর্ধন।তার প্রাপ্ত নম্বর ৪৯০।তার বাবা সুশান্ত বর্ধন রামপুরহাট কলেজের অধ্যক্ষ।মা প্রণতি বর্ধন গৃহবধূ। স্নিগ্ধার ইচ্ছা বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শণে অনার্স করা।মেয়ের সাফল্যে খুশি বাবা মা, শিক্ষক শিক্ষিকারাও। স্নিগ্ধা অবসর সময়ে গান করে,সিন্হেসাইজার বাজায়,গল্পের বই পড়ে।, স্কুলের শিক্ষিকা মালবিকা মন্ডল বলেন বরাবরই পড়াশুনায় ভালো স্নিগ্ধা।তার বোন ও এই স্কুলের ছাত্রী। এছাড়া ও সপ্তম স্থান অধিকার করেছে বীরভূম জেলা স্কুলের ছাত্র রাজীব ঘোষ। দশম স্থান দখল করেছে এই জেলার রামপুরহাট হাইস্কুল ও রামপুরহাট জিতেন্দ্র লাল বিদ্যাভবনের দুই ছাত্র।তাদের প্রাপ্ত নম্বর ৪৮৬।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।