দেশ

পেটের খিদে মেটানোর কোনো দিশা না দেখাতে পারায় সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ বান্দ্রার পরিযায়ী শ্রমিকরা


সূপর্ণা রায়:চিন্তন নিউজ:-১৬ই এপ্রিল:– মঙ্গলবার পুলিশ বান্দ্রায় যাদের উপর লাঠিচার্জ করেছে তারা প্রায় সবাই পশ্চিম বাংলার মালদার অধিবাসী।। বলা ভালো পশ্চিম বাংলা তে কাজের অভাবে তাঁরা মুম্বাইয়ে নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করতো।। হঠাৎ করেই করোনা সংক্রমণের জেরে লকডাউন ঘোষণা করে কেন্দ্র,কোন আগামী সতর্কতা ছাড়া। ফলে দেশের বিভিন্ন জায়গায় থাকা পরিযায়ী শ্রমিক রা নিজেদের বাড়ি ফিরতে পারেননি।। অসহায় গরীব মানুষগুলো দিন কাটাচ্ছেন রাস্তায়।। এরই মধ্যে আগুনে ঘি পড়ে পশ্চিমবাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়।। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন যারা আটকে রয়েছেন তাঁদের কিছু কিছু পকেট মানি দেওয়ার ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা নিয়ে।। আটকে পড়া নির্মাণ শ্রমিক শেখ আলি অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হয়ে জানিয়েছেন যে মুখ্যমন্ত্রী নিজের টাকা নিজের কাছেই রাখুন।।তাঁদের দাবী তাঁরা বাড়ি ফিরতে চান।। জানিয়েছেন আর দু_চার দিন দেখবেন তারপর যদি কোন ব্যবস্থা গ্রহন করতে না পারে তবে তাঁরা হেঁটেই বাড়ীতে ফিরবেন।।

সূত্রের খবর অনুযায়ী বুধবার এর সাংবাদিক বৈঠকে মমতা ব্যানার্জি পরিযায়ী শ্রমিক যারা বাইরে পড়ে রয়েছেন তাঁদের জন্য কিছুই বলেননি বিশেষ করে বান্দ্রায় যারা পুলিশের দ্বারা আক্রান্ত হয়েছেন।। নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন যে তিনি দু’একজনের সঙ্গে কথা বলেছেন, সবার সাথে কথা বলা তাঁর পক্ষে সম্ভব হয়নি।। বলেছেন যদি ওই শ্রমিকদের সাথে যোগাযোগ করা হয় তবে তাদেরকে কিছু পকেট মানি দেওয়া যেতে পারে।। আরো জানিয়েছেন ওরা দু’কেজি করে চাল পেয়েছে কিন্তু সবজি কেনার জন্য টাকা নেই, রাজ্য খুব গরীব তবে সেটুকু বাইরের শ্রমিকদের জন্য করবে।।

এই কথা শুনে ওই শ্রমিকরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন।। তাঁরা জানান বাইরের লোক মানে কি? তাঁরা কি পশ্চিমবাংলার লোকজন নন? নিয়ামতপুর এর এক শ্রমিক বাবলু বিশ্বাস বলেন তিনি খার অঞ্চলে থাকেন।। তাঁর সোজাসাপটা প্রশ্ন মুখ্যমন্ত্রী খার অঞ্চলে কার সাথে কথা বলেছেন?? যদি উনি কারুর সাথে কথা বলতেন তবে সেই খবর দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়তো।।সবাই জানতে পারতো।। ওনাদের কি অবস্থা সেটা একবারও মুখ্যমন্ত্রী জানতে চাননি।। বাবলু বাবুর সাথে ছিলেন তাঁরা বলেছেন তাঁরা কি সবজি খাওয়ার জন্য ওখানে বসে আছেন? জানিয়েছেন যে সকাল থেকে তাঁরা তেমন কিছুই খাননি ।। মালদার ভবানীপুর অঞ্চলের বাসিন্দা লিটন আলী ওখানে কাজ করতে গিয়েছিলেন।। জানিয়েছেন যে খাবার আনতে গেলে পুলিশ তাদের ভাগিয়ে দিয়েছে।।অথচ খার অঞ্চলের যে জায়গাটার কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বলেছেন ওই জায়গায় একটা পুলিশ চৌকি থেকে খাবার দেওয়া হয়।। অথচ তাঁরা যখন খাবার আনতে গেছেন পুলিশ লাঠিপেটা করে তাড়িয়ে দিয়েছে।।

তাঁদের প্রশ্ন যে ১৫/২০ টা লোক ওখানে রাস্তায় পড়ে আছেন তাঁরা না খেয়ে কি করে বাঁচবেন?? পাঁচশো গ্রাম চিড়ে তাঁরা কোনমতে কিনেছেন আর অতগুলো লোক একমুঠো একমুঠো করে তাই খেয়ে আছেন।। তাঁদের আশঙ্কা না খেতে পেয়ে তারা মারা যাবেন।। মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি জানিয়েছেন তিনি নাকি উদ্ধব ঠাকরের সাথে কথা বলেছেন ।।ওরা পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য খুব ভালো কাজ করছে।। মানিকচকের শেখ রিন্টু জানিয়েছেন কোন সরকার তাদের জন্য কিছু করে নি।। শুধু বলে””খানা দেয়া হু”” কিন্তু রিন্টু জানিয়েছেন খাবার একবার দেয় বিএম সি।।ওরা দিনের বেলা খিচুড়ি রান্না করে আনে।।আর সেটাই একটা প্যাকেটের মধ্যে ভরে দেয়।। খাবার খুব কম এত কম যে কোন মতেই পেট ভরার মতো নয়। একটুখানি রেখে খেতে গেলে দেখা যায় সেটা পচে গেছে আর খাবার অযোগ্য হয়েছে। তার উপর ঠেলাঠেলিতে সেই খাবার টুকুও পাচ্ছে না মানুষ।। কত মানুষ তিন চার দিন না খেয়ে আছে।। তাদের এখন একটাই দাবি কোন মতে তাদের ফিরিয়ে আনুক তারপর দশদিন বিশ দিন স্কুলে আটকে রাখুক তাদের কোন আপত্তি নেই।। এভাবে কি করে তাঁরা বাঁচবেন সেটাই লক্ষ টাকার প্রশ্ন_


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।