দেশ

বর্তমানে গ্রামীন ভারত অনাহারে ও অর্ধাহারে


সুপর্ণা রায়:চিন্তন নিউজ:১৪ই মে:– করোনা সংক্রমণ এবং তার জেরে দীর্ঘ কালীন অপরিকল্পিত লকডাউন এর জেরে ভারতের গ্রাম ভারতের মানুষের খাদ্য জুটছে না।। বলা যায় প্রায় এক তৃতীয়াংশ মানুষের একবেলা খাবার জোগাড় করতে হিমসিম দশা।। খবরে প্রকাশ যে আগামী সপ্তাহের মধ্যে ভারতের প্রায় এক তৃতীয়াংশ মানুষ একদম কপর্দকহীন হয়ে পড়বে।। সাম্প্রতিক কালে এক সমীক্ষায় এই ভয়ানক চিত্র উঠে এসেছে।। আর এর ই সাথে সাথে কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য সরকারের যাবতীয় কার্যকলাপ ও প্রতিশ্রুতি বেআব্রু হয়ে পড়েছে।।দীর্ঘ কালীন লকডাউন এর জেরে বহ মানুষ তাদের প্রয়োজনীয় খাবার এর পরিমাণ কমিয়ে দিতে বাধ্য হচ্ছেন।। তাদের অনেকের দু’বেলা দু’মুঠো খাবার জুটছে না।। হয় তারা দুপুরের খাবার খাচ্ছেন নতুবা রাতের খাবার খেয়েই থাকতে হচ্ছে।। করোনা সংক্রমণ এর পরিস্থিতির আগে তারা যে অবস্থায় থাকতেন এখন তাদের অভাবের মাত্রা অনেক বেশি বেড়ে গেছে।। বিভিন্ন সংগঠন এবং বেসরকারি সংগঠন এক সমীক্ষায় দেখিয়েছে ভারতের গ্রামের মানুষ অভাবের তাড়নায় খাবার খাওয়ার বার কমিয়ে দিয়েছে।। ৬৮% মানুষের খাবারের পদ কমিয়ে দিয়েছে।।বেশ কয়েকটি নাগরিক সংগঠন ও বেসরকারি সংস্থা ভারতের পশ্চিমবঙ্গসহ বিহার , উত্তর প্রদেশ, রাজস্থান , মধ্যপ্রদেশ ,ওড়িষ্যার বিভিন্ন স্থানে যৌথ ভাবে একটি সমীক্ষা চালিয়ে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এনেছে।। ভারতবর্ষের মাত্র ১২% মানুষ বিনামূল্যে রেশন পাচ্ছেন যা প্রতিটি মানুষের পাওয়া উচিত অন্তত সরকারের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী।।

ভারতবর্ষের গ্রামের মানুষ প্রধানত চাষবাস এর উপর নির্ভরশীল। সমীক্ষায় এই বিষয়ে এক ভয়ঙ্কর বিপন্নতার ছবি উঠে এসেছে।। গতবছরের চাষবাস এর জন্য যেটুকু খাদ্য মজুদ ছিল তার সাহায্যে এতদিন চলছে কিন্তু অনন্ত কাল ধরে তো চলে না । সে খাদ্যশস্য শেষ হয়েছে আর তার ফলে খাবারের সঙ্কট তীব্র আকার ধারণ করেছে। এদিকে লকডাউন ওঠার কোন সম্ভাবনা নেই এইমূহূর্তে ।। ফলে চাষের প্রস্তুতি খুব খারাপ জায়গায় রয়েছে।। সরকারের কাছে এই অবস্থা সামলাতে অবিলম্বে এই প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর হাতে চাষের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র অবিলম্বে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করার উদ্যোগ সরকারকে গ্রহন করতে হবে।।

সমীক্ষায় দেখা গেছে লকডাউন এর জেরে পোল্ট্রি শিল্প ডেয়ারীর উপর তীব্র প্রভাব পড়েছে।।সমীক্ষকদের অন্যতম সদস্য মধু খৈতান জানান যে তাঁরা কাছাকাছি অঞ্চলের উপর এই সমীক্ষা চালানো হয়েছে।। তিনি বলেন যে আরোও ভেতরের অঞ্চল গুলোর অবস্থা আরও ভয়ঙ্কর।।আরেক সমীক্ষক গিরীশ সোহানী জানিয়েছেন যে ভারতের গ্রাম অঞ্চলের মানুষের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো এক ভয়ঙ্কর বিপন্নতার মুখে।। তিনি বলেন যে এই বিষয়ে যথেষ্ট সমীক্ষার প্রয়োজন।।

আরও একটি সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে যে আগামী সপ্তাহের মধ্যে ভারতের এক তৃতীয়াংশ মানুষ কার্যত কপর্দকহীন হয়ে পড়বে।। সিএম আইই এক সমীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করেছে গত মঙ্গলবার।। সমীক্ষায় দেখা গেছে ভারতের অন্তত ৮৪% মানুষ এর আয় কমেছে এই লকডাউন পরিস্থিতিতে।। যদি এক সপ্তাহের মধ্যে এদের কোন সাহায্যের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা না হয় তবে এই মানুষ গুলোর না খেয়ে মরা ছাড়া আর কোন উপায় নেই।।

সিএম আইই মুখ্য অর্থনীতিবিদ কৌশিক কৃষ্ণান জানান যে একেবারে নিম্ন আয়ের মানুষ এর হাতে যদি এই মুহূর্তে টাকা না আসে তবে ভারতের পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করবে।। অপুষ্টিজনিত রোগ এ বহু মানুষের ভোগান্তি বাড়বে।। লকডাউন এর জেরে আয় কমার সাথে সাথে বেকারত্ব হার মারাত্মক ভাবে বেড়েছে।। লকডাউন এর আগে বেকারত্বের হার ছিল ৭% আর এই কদিন এ বেকারত্বের হার গিয়ে দাঁড়িয়েছে ২৫’৫% …….. এই পরিস্থিতিতে এই মুহূর্তে যদি ভারতের হার না ধরা যায় তবে এই দেশের মানুষ এক গভীর অন্ধকারে ডুবে যাবে আর তার থেকে কোন সরকারের ও রেহাই মিলবে না।।।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।