রাজ্য

ফালাকাটায় নবমীতেই বিসর্জন দেওয়া হ’ল দশ বছরের শিশু কন্যাকে!!!


সঞ্জিত দে:চিন্তন নিউজ:৯ইঅক্টোবর:–ফালাকাটা থানার একটি গ্রামের ছোট্ট মেয়ে, বয়স তার ১০বছর ৮মাস মাত্র। এতটুকুই তার জীবনের সময়ের গন্ডি!!নবমীর রাতে নরপিশাচদের দ্বারা ধর্ষিতা হয়ে খুন হয়!মেয়েটির বাবা নিছক দিনমজুরের কাজ করেন। মানসিকভাবে সম্পূর্ণ সুস্থও নন!

কি দোষ ছিল মেয়েটার ?একটাই দোষ, সে ‘মেয়ে’! মাত্র দশ বছর বয়সে জীবনদীপ জোর করে নিবিয়ে দেওয়া হ’ল।

এরিয়ার ছাত্র-যুব-মহিলার একটা দল গিয়েছিলেন খোঁজ নিতে জানা গেল নবমীর রাতে ওই দুধের শিশুটা পূজা দেখতে বেড়িয়েছিল। পাড়ার মন্ডপে দূর্গা আরতি করে পুরস্কার পায়! হ্যাঁ,মুসলিম পরিবারের মেয়ে হয়েও এই বাংলায় দূর্গা আরতি করে পুরস্কার পেয়ে থাকে। এটাই বাংলার তথা ভারতের আসল ঐতিহ্য, যা এখনো অনেক জায়গায় বহন করে চলেছে। আরতি শেষে সেখান থেকে বেড়িয়ে সারা রাত নিখোঁজ।

তারপর দিন দশমী। সকাল সকাল মেয়েটা লাশ হয়ে বিকশিত হয়! যোনির চারদিকে ছড়িয়ে পড়া চাপ চাপ রক্ত নির্লজ্জ নির্মমতা বুঝিয়ে দেয়! পুলিশ এসে নিছক খুন বলে সবটা ধামাচাপা দিতে চেয়েছিল বটে। কিন্তু গড়ে ওঠে প্রতিরোধ! লাশ আগলে পুলিশকে বিক্ষোভ দেখানো হয়! পুলিশ কুকুর এনে নাটক করে এলাকাবাসীকে ভুল বুঝিয়ে মৃত দেহ নিয়ে চম্পট দেয়!

ঘটনা সেটা নয়, সেখানকার ছাত্র-যুবরা সেই এলাকা জুড়ে যখন সন্ধ্যে অবধি তথ্য জোগাড় করে, জানতে পারেন যে, এলাকার দুই পূজা কমিটি ‘সত্যজিৎ স্মৃতি সংঘ’ ও ‘রামকৃষ্ণ ক্লাব’ তাদের দশমীর সমস্ত কর্মসূচি স্থগিত করেছে। বরং সন্ধ্যায় সংগঠিত হবে মোমবাতি মিছিল। ছাত্রযুবরা মিলিত হন সেই মিছিলে। জাতি-ধর্ম-নির্বিশেষে বহু মানুষ মিলিত হলো সেই মিছিলে! অভিজ্ঞতা হ‌’ল মানুষের সাথে কথা বলে। জানা গেল ক্ষোভের কথা! সবাই প্রকৃত অপরাধীর শাস্তি চায়। সবার কথা, শিশু কন্যাটির কোন জাত নেই-ধর্ম নেই, ও বাচ্চা, ও ভগবানের মেয়ে।

এলাকার মানুষ সাক্ষী থাকল এক অনন্য নজীরের… একটা মুসলিম ঘরের বাচ্চা মেয়ে, যার ধর্ম বোধ জাগেনি, সে দূর্গা মন্ডপে আরতি করে ফেরার পথে ধর্ষিতা হয়ে খুন হয়ে গেলে দশমী থেমে গিয়ে মৌন মিছিলের রূপ পায়!


মিছিল শেষে সমস্ত মানুষ ফেরেন থানা হয়ে। অপরাধীকে দ্রুত গ্রেপ্তার করতে হবে এবং শাস্তি দিতে হবে এই দাবী জানাতে।গ্রামবাসী আজ বুঝছে, ‘আজ এই মেয়ে, কাল আমার মেয়ে-বোন নয়তো?’ ‘ এর প্রতিবাদ চাই!’

দ্রুত প্রকৃত অপরাধীকে বা অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দিতে হবে বলে দাবী সাধারণ মানুষের। ভবিষ্যতে এরকম পৈচাশিক ঘটনা যাতে না ঘটে প্রশাসনকে এর জন্য কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। হিমানী বর্মন থেকে খুশবু পারভীন এই সংখ্যাটা যেন না বাড়ে।দশমীর ভাসান বন্ধ রেখে গ্রামের মানুষ মোমবাতি মিছিল করলেন। এ এক প্রতিবাদের অনন্য নজির।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।