জেলা রাজ্য

১০০ দিনের কাজ নিয়ে পরিদর্শনে আসা সেন্টাল টিমের মুখোমুখি হ’লেন না জলপাইগুড়ি ডিএম:-


দীপশুভ্র সান্যাল: চিন্তন নিউজ:২৫শে জানুয়ারি:- একশ’ দিনের কাজ দেখে ‘একেবারেই সন্তুষ্ট নয়’ কেন্দ্রীয় দল এমনই অভিযোগ উঠে আসলো প্রশাসনিক বৈঠকে। রবিবার জলপাইগুড়ি সার্কিট হাউসে জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করে সে কথা বুঝিয়েও দিয়েছে কেন্দ্রীয় দল। গত সোমবার থেকে জেলায় পরিদর্শন চালাচ্ছে ওই কেন্দ্রীয় দল। পরিদর্শনের শেষে সার্কিট হাউসে বৈঠকে ডেকেছিল দলটি। বৈঠকে আধিকারিকদের কেন্দ্রীয় দলের প্রধান শশীকান্ত বলেছেন, “সরেজমিনে পরিদর্শনের সময় যে যে বিষয়ে আমরা প্রশ্ন তুলেছিলাম, সেগুলি নিয়ে কোনও যুক্তি থাকলে তা এখনই বলতে পারেন। লিখিত ভাবে জানাতে পারেন, মুখেও বলতে পারেন। যেমন আপনাদের ইচ্ছে।”

সূত্রের খবর, পরিদর্শনের সময় বেশ কিছু অসঙ্গতির কথাও বৈঠকে তুলে ধরেন তিনি। বৈঠকের শেষে আধিকারিকদের সামনেই শশীকান্ত বলেছেন, “কাজ দেখে আমরা মোটেই সন্তুষ্ট নই।” এ দিনের বৈঠকে জেলাশাসক মৌমিতা গোদারাকে ডাকা হ’লেও তিনি উপস্থিত হননি। জেলাশাসক জানিয়েছেন, নেতাজীর জন্মজয়ন্তীর বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ব্যস্ত থাকায় তিনি যেতে পারেননি। জেলাশাসকের প্রতিনিধি হিসেবে ওই সভায় ছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) সমীরণ মণ্ডল। তিনি বলেন, “ওঁরা কী বলেছেন তা নিয়ে কিছু বলতে পারব না। তবে প্রধানমন্ত্রী আবাস এবং ১০০ দিনের কিছু কাজের প্রশংসাই ওনারা করেছেন। ওঁরা কিছু প্রশ্ন করেছিলেন। তাঁর উত্তরও বুঝিয়ে বলা হয়েছে। জেলায় গত অক্টোবর মাসে প্রবল বন্যা এবং বৃষ্টি হয়েছে। সেটা ওঁরা জানতেন না, সেটাও জানানো হয়েছে।”

একশো দিনের কাজে ভেরি ঘাট এবং বাঁধ তৈরি হয়েছিল। প্রতিনিধি দল গিয়ে দেখেন যত এলাকায় ঘাস এবং বাঁধ থাকার কথা ছিল তার অর্ধেকই ফাঁকা। একটি পুরুরের গভীরতা মেপে দেখেন, কাগজে কলমে যা থাকার কথা তার থেকে অনেক কম হয়েছে। জেলা প্রশাসনের তরফে প্রতিনিধি দলকে জানানো হয়েছে, গত অক্টোবরে বন্যার জলে পুকুরে পলি জমে গভীরতা কমেছে এবং বন্যার জলেই ঘাস এবং বাঁধ ভেসে গিয়েছে। একটি এলাকায় গিয়ে তো দল দেখেন খাতায়কলমে কাজ চলছে বলা হলেও সেখানে আদৌও কোনও কাজ হচ্ছে না। বছর দেড়েক আগে মুরগির ঘর করে দেওয়া হলেও সেখানে কোনও মুরগি নেই দেখে প্রশ্ন তোলে দলটি। কয়েকটি এলাকায় ১০০ দিনের প্রকল্পে বিপুল খরচ নিয়েও কেন্দ্রীয় দল প্রশ্ন তুলেছে। সূত্রের খবর ওই গ্রাম পঞ্চায়েত গুলিতে ১০০ দিনের কাজে কয়েকটি প্রকল্পে বুলডোজার ব্যবহার করা হয়েছে বলে প্রতিনিধি দলের কাছে অভিযোগ এসেছে। মজুরি দেওয়ার তালিকাও সঙ্গে নিয়ে গেছে দলটি। সূত্রের খবর, দলটি যে রিপোর্ট জমা দেবে তাতে যে জলপাইগুড়ি নিয়ে সন্তোষজনক কথা লেখা থাকবে বলেই অনুমান করেছেন আধিকারিকদের একাংশের। ভবিষ্যতে ১০০ দিনের কাজ ও বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সরকারি প্রকল্পে আরো যত্নবান হবার পরামর্শ দিয়েছে কেন্দ্রীয় দলটি। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য ১০০ দিনের কাজে কাজ না করিয়ে মজুরি দেওয়ার অভিযোগ যেসব গ্রাম পঞ্চায়েত গুলির বিরুদ্ধে রয়েছে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল সেই সেই গ্রাম পঞ্চায়েত গুলিতে বিস্তর কাগজপত্র খুঁটিয়ে দেখেছেন এবং প্রয়োজনীয় নথির কপি সঙ্গে করে নিয়ে গিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।