রাজ্য

বিশ্ব কচ্ছপ দিবসে চিন্তনের বিশেষ প্রতিবেদন।



কলমে কৃষ্ণা সাবুই: চিন্তন নিউজ: ২৩/০৫/২০২৩:- এই পৃথিবীর বৈচিত্র্য অপরিসীম। গাছ ফুল ফল পাতা জল বাতাসের সঙ্গে বেঁচে থাকে জীবজগৎ। তাই আমাদের চিন্তা ভাবনা হওয়া উচিৎ এই বৈচিত্রে ভরা পৃথিবীতে প্রত‍্যেকটি জীব সে অতি ক্ষুদ্র হতে পারে কিংবা বিশালাকার – সবাইকে রক্ষা করা।

এই চিন্তা ভাবনা থেকেই আজকের দিনটি বিশ্ব কচ্ছপ দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।
পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন জীব কচ্ছপ।এই প্রানীটি সম্পর্কে মানুষকে অবগত করতে এবং প্রকৃতির অন‍্যান‍্য জীবের পাশাপাশি কচ্ছপের প্রতি ভালোবাসা ও তার অস্তিত্বকে চিরায়ত করার ও কচ্ছপ সম্বন্ধে জ্ঞান বৃদ্ধির জন‍্য দিবসটি পালন করা হয়।

আমরা প্রত‍্যক্ষ করেছি পৃথিবী থেকে অনেক প্রানী আজ বিলুপ্ত হয়ে গেছে। কচ্ছপও আজ প্রায় বিলুপ্তির পথে। এই সরীসৃপ জাতীয় প্রানিটী জল স্থল সব জায়গায় বাস করতে পারে। এদের শরীরের ওপর শক্ত খোলসের আবরন থাকে।বুকে হেঁটে এরা চলাফেরা করে। জলেও থাকে যেমন পুকুর,নদী, মহাসমুদ্রেও। পিঠের শক্ত খোলস এদের নানারকম বিপদ থেকে রক্ষা করে।আমরা এদের মহাসমুদ্রে সাঁতার কেটে ভাসতে দেখি।

বর্তমানে পৃথিবীতে প্রায় ৩০০প্রজাতির কচ্ছপ পাওয়া যায়।তবে কিছু প্রজাতি ভীষন ভাবেই বিলুপ্তির পথে। এদের বংশবৃদ্ধি পদ্ধতি এরকম –
মেয়ে কচ্ছপরা কোন নির্জন স্থানে প্রায় ২০ থেকে ৩০ টি ডিম পাড়ে। তবে তার আগে গর্ত করে নেয় এবং ডিম পাড়ার পর মাটি,বালি বা যে কোন জৈব সামগ্রী যেমন গাছের পাতা এই সব দিয়ে ঢাকা দিয়ে প্রকৃতির ওপর ভরসা করে চলে আসে। ১৫ থেকে ৩০দিনের মধ‍্যে ডিম ফুটে বাচ্চা বেরিয়ে আসে। কচ্ছপের নারী বা পুরুষ – দেহের গঠন দেখে চেনা যায়। কিছু কচ্ছপ শুধুই তৃনভোজী। তারা পাতা ফুল ঘাস আগাছা খেয়ে বেঁচে থাকে। আবার কিছু সর্বভূক কচ্ছপ আছে যারা নানা ধরনের কীট পতঙ্গ মৃতদেহও খায়। তবে এই প্রজাতি তাই বেশি করে মৃত‍্যুমুখে পড়ে। মুলত, এরা সমুদ্রে বাস করে।

এবার এই বিশেষ দিনটি সম্বন্ধে আমাদের চিন্তাভাবনা করার সময় এসেছে জীববিদ, পরিবেশবিদরা চিন্তা করছেন কিভাবে এদের রক্ষা করা যায়।ভাবতে হবে এতো কচ্ছপ মরছে কি করে?
প্রথমতঃ বলা যায় পৃথিবীর জলবায়ুর পরিবর্তন, দ্বিতীয়ত, উপকুল এলাকায় উন্নয়নের নামে অনেক দেশেই কচ্ছপের থাকার এবং প্রজননের স্বাভাবিক জায়গা ধ্বংস হচ্ছে। সামুদ্রিক কচ্ছপ যেখানে নির্জন জায়গায় ডিম পাড়ে সেখানে পর্যটকদের আনাগোনায় বিঘ্নিত হচ্ছে। এছাড়াও জাহাজ চলাচল,সমুদ্র তলদেশের পরিবর্তনও একটা বড় কারন বটে।

সবচেয়ে লক্ষ‍্যনীয় , কচ্ছপের মাংস খাওয়া। কচ্ছপের ডিম খেয়ে নেওয়া এখন ভীষন ভাবে বেড়ে গেছে।কচ্ছপের মাংসের লাগাম ছাড়া চাহিদা এই প্রজাতিকে বিপন্ন করে তুলেছে।আরো কারন মাংস নিয়ে নেওয়ার পর খোলস টা উচ্চ লাভে বিক্রি হয় নানান জিনিস তৈরী করে লাভজনক ব‍্যবসার জন‍্য। সরকার যদি কড়াভাবে আরো কঠিন আইন বলবৎ করে তাহলে এই প্রানীটিকে বাঁচানো সম্ভব। ২০০০ সালে এদের বাঁচানোর জন‍্য যে দিবসের সিদ্ধান্ত হোলো আজো মানুষ তাকে আমল দিচ্ছেনা।
তাই সকল মানুষ ভাবুন, বুঝুন, এই জীব বৈচিত্র আমরাই পারি রক্ষা করতে। তার জন‍্য চাই মিলিত নজরদারি। প্রানিটীকে কিছুতেই বিলুপ্ত হতে দেব না- এই হোক আজকের দিনের মিলিত অঙ্গীকার।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।