রাজ্য

ছবির প্রসঙ্গে ‘মাথা’ ছুঁতে গিয়ে বদলি তদন্তকারী সিবিআই অফিসার।


সূপর্ণা রায়:চিন্তন নিউজ:১৮ই জানুয়ারি:—বোঝা পড়ার শীতঘুমএবছরের শীত কাটলো একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সংবাদের মাধ্যমে তার মধ্যে যেটা নিশ্চিত ভাবেই মানুষের মনকে নাড়া দিচ্ছে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বিরোধী আন্দোলন।। আর এই অস্থির, অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে সিবিআই এর রদবদল আর যার সাথে শীতঘুমে চলে যেতে বসেছে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি কেলেঙ্কারি তদন্ত।।

সুত্রের খবর অনুযায়ী জানা গেছে মুখ্যমন্ত্রীর আঁকা অতি সাধারণ মানের ছবির হাত ধরে বহু চিট ফান্ডের কোটি কোটি টাকা শাসকদলের তহবিলে ঢুকেছে।। সিবিআই এর হাতে এই তদন্তের ভার ছিল এবং ইতিমধ্যে অনেক বাঁধা সত্বেও অনেক দূর এগিয়ে ছিল।। সিবিআই এই তদন্ত করতে গিয়ে বেশ কয়েকজনকে জেরা করেছেন এবং মুখ্যমন্ত্রীর আঁকা ছবি যেগুলো বেশ কয়েক কোটি টাকাতে বিক্রি হয়েছে তার অনেকটাই বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।। এই তদন্ত প্রায় চুড়ান্ত পর্যায়ে চলছে তখন ছবিবিক্রির তদন্তে থাকা অফিসারকেই বদলি করে দেওয়া হয়েছে।।।

দেশজুড়ে চলছে এন আর সি বিরোধী আন্দোলন এবং তা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার যথেষ্ট পরিমাণে অস্বস্তিতে।।আর এদিকে ছবি বিক্রির তদন্ত শেষ পর্যায়ে ঠিক এই সময় অফিসারের বদলি! অনেকর মনে প্রশ্ন উঠেছে একসাথে দুটি ঘটনা কি কেন্দ্র রাজ্যের বোঝা পড়ার অংশ।। সুপ্রিম কোর্টেরর ভাষায় “বৃহত্তর ষড়যন্ত্র” এর তদন্তে ছিল চিটফান্ডের লোভ দেখিয়ে গরিব মানুষের টাকা হস্তগত করা ।। সবাই একটু ভালো থাকবেন এই আশাতে বহুকষ্টার্জিত টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন আর সেই অর্থ ঘুরপথে অন্যত্র পৌঁছেছে এবং একটা প্রভাবশালী মহল ফুলেফেঁপে উঠেছে।।

এই তদন্ত শুরু হতেই একেবারে সামনে চলে আসে মুখ্যমন্ত্রীর আঁকা ছবি বিক্রির বিষয়টি। মুখ্যমন্ত্রীর আঁকা অতি সাধারণ মানের আঁকা ছবি চিটফান্ডের কর্তাব্যক্তিরা বিপুল পরিমাণ টাকায় কিনেছেন।। আরও একটা দূর্দান্ত বিষয় একেবারে সামনে চলে আসে যে সংস্থা গুলোর ব্যবসার পরিমাণ বছরে ১ লক্ষ টাকাও নয় সেই সংস্থাগুলো পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীর ।ওই হিজিবিজি আঁকা ছবি কোটি কোটি টাকায় কিনেছেন যা অডিট রিপোর্টে ধরাও পড়েছে ।। আর এই ঘটনাতে স্পষ্ট হয়ে গেছে গরিব মানুষের টাকা যারা বহু আশা নিয়ে বিনিয়োগ করেছিলেন তাঁদের টাকা ঘুরপথে শাসকদলের তহবিলে জমা হয়েছে বলে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার ধারণা।।আর সেই ধারনাতেই জোরকদমে জেরা শুরু হয় আর তাতে বাদ পড়েন নি তাবড় তাবড় নেতা মন্ত্রী বিধায়ক রা।। শাসকদলের মুখপত্র “” জাগো বাঙলা”” র শীর্ষ নেতাদের জেরা করা হয় আর তাতে বেশ বড়সড় অসঙ্গতি ধরা পড়ে।।

এই সময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি _প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ্ র সাথে বৈঠক করেন এবং এক অদ্ভুত অজানা কারণে তদন্তের গতি স্তব্ধ হয়ে যায়।। দেশজুড়ে তখন দানা বাঁধছে এন আর সি বিরোধী প্রতিবাদ আর এক ই সঙ্গে কমতে থাকে তদন্ততের গতি।।। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি সরকার মুখে এন আর সি বিরোধী কথা বললেও একাধিক তৃনমুল পরিচালিত পৌরসভাতে এর স্বপক্ষে কাজ শুরুর নির্দেশ দেওয়া হয়।। দিল্লিতে এন আর সি বিরোধী বৈঠকেও যাননি মুখ্যমন্ত্রী।।এইসব গন্ডগোলের মাঝে প্রধানমন্ত্রী কলকাতা সফরে আসেন এবং মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন।।আর এই বৈঠকের কয়েকঘণ্টার মধ্যে বদলি হয়ে যান সারদা, নারদাও রোজভ্যালি কান্ডের দায়িত্ব প্রাপ্ত অফিসাররা।

এই বদলি তালিকাতে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীর আঁকা ছবি বিক্রি কান্ডের তদন্তকারী আধিকারিক।। আধিকারিক তথাগত বর্মন ছবি বিক্রি তদন্তের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছিলেন।। রাজীব কুমারের বাড়িতে তদন্তের প্রয়োজনে গেলে তাঁকে পুলিশের হেনস্থার মুখে পড়তে হয়।। রাজীব কুমারের বাড়িতে তদন্তে যাওয়ার প্রতিবাদে মুখ্যমন্ত্রী সর্বকালীন রেকর্ড তৈরি করে রাস্তায় বসে পড়েন ধর্না দিতে।। মানুষের মনে প্রশ্ন উঠেছে তথাগত বর্ধনের এই বদলি সংক্রান্ত ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির ছবি বিক্রির তদন্ত কি আর আলোর মুখ দেখবে না?


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।