রাজনৈতিক রাজ্য

বিকল্প নীতির লড়াইকে শক্তিশালী করতে হবে, সারাভারত ক্ষেতমজুর ইউনিয়নের সমাবেশ থেকে আহ্বান


তুষার কান্তি খাঁ, ফারাক্কা চিন্তন নিউজ: ২৮ শে জানুয়ারি:২০২৩:– ফরাক্কা সৈয়দ নুরুল হাসান কলেজের মাঠে প্রকাশ্য সমাবেশের মাধ্যমে শুরু হলো সারাভারত ক্ষেতমজুর ইউনিয়নের রাজ্য সম্মেলন। হামলা ও হুমকি উপেক্ষা করে সমাবেশে এসেছিলেন গ্রামের মানুষ। গঙ্গা পদ্মা ভাঙন কবলিত গ্রামের মানুষের সঙ্গে মিছিল করে সমাবেশে যোগ দেন ফারাক্কায় রেল কলোনির উচ্ছেদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো ব্যবসায়ী থেকে কলোনিবাসীরা।বিকল্প নীতির লড়াইকে শক্তিশালী করতে হবে । ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের মাধ্যমে জোরালো করতে হবে বিকল্পনীতির লড়াই।শুক্রবার এই আহ্বান জানালো সারা ভারত খেতমজুর ইউনিয়নের দ্বিতীয় রাজ্য সম্মেলনের প্রকাশ্য সমাবেশ।

এদিন প্রকাশ্য সমাবেশে সারা ভারত খেতমজুর ইউনিয়নের সভাপতি ,গণআন্দোলনের সর্বভারতীয় নেতা এ বিজয় রাঘবন বলেন দেশ ভাঙার চেষ্টা করছেন নরেন্দ্র মোদি। হিন্দু মুসলমানের বিভাজনের অপচেষ্টা রুখবেন কৃষক খেত মজুররা। মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়েই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। বেসরকারীকরণে জোর দিচ্ছে কেন্দ্রের সরকার, পুঁজি পতিদের পাশে দাঁড়াচ্ছে। অথচ গরিব মানুষকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। ১০০ দিনের কাজে মজুরি দেওয়া হচ্ছে না। সামন্ত প্রভুদের বিরুদ্ধে একসঙ্গে লড়ে জমির অধিকার আদায় করেছেন মানুষ। মোদি সরকারের বিরুদ্ধেও ঐক্যবদ্ধ লড়াই চলবে।

কেরালায় বামপন্থী সরকারের নীতির উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, নরেন্দ্র মোদি সরকার থেকে পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল সরকার কেউই কোভিড কালে মানুষকে স্বাস্থ্য পরিষেবা দেয়নি। বিকল্প দেখিয়েছে কেরালার সরকার। বামপন্থীদের আন্দোলনের কারণে কেরালায় শূন্য হয়েছে বিজেপি। কেরালা সরকারের প্রতি বঞ্চনা করছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। তিনি বলেন, মমতা ব্যানার্জির রাজত্বে বিধায়কদের বাড়ি ঢুকলে কাঁচা টাকা পাওয়া যাচ্ছে ।দুর্নীতি বেড়েছে এ রাজ্যে ।১০০ দিনের কাজেও পিছিয়ে রাজ্য। তিনি গরিব মানুষের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বাসস্থানের দাবিতে দেশজুড়ে আন্দোলন তৈরি করার আহ্বান জানান। গরিব মানুষের ঐক্যবদ্ধ শক্তিতে লড়াইয়ের পথেই দিদি- মোদী রাজত্বের অবসান ঘটাতে হবে। দেশের রাজনীতির বদল ঘটাতে হবে।

ইউনিয়নের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বি ভেঙ্কট বলেন একদিকে তৃণমূল অন্যদিকে বিজেপি দুই সরকারের অপশাসনে সাধারণ মানুষের জীবন সংকটে। বামপন্থীদের সরকার গরিব মানুষের সরকার। বামফ্রন্ট সরকারের সময় পশ্চিমবঙ্গ দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য ছিল। বামপন্থীদের চাপে তৈরি ১০০ দিনের কাজ শুরু হয়েছে। বর্তমান তৃণমূল সরকার ১০০ দিনের কাজ রূপায়নে ব্যর্থ। কেরালায় ১০০ দিনের কাজে মানুষ কাজ পাচ্ছেন। পশ্চিমবঙ্গের মানুষ কাজ পাচ্ছেন না । তৃণমূলের দুর্নীতি এর জন্য দায়ী । তিনি বলেন, ১০০দিনের কাজে ব্যয় বরাদ্দ কমিয়েছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। তিনি ১০০ দিনের কাজকে ২০০ দিন করার দাবি জানান। মজুরি বাড়াতে হবে ।এই সমস্ত দাবিতে আগামী ১৫-১৮ ফেব্রুয়ারি হাওড়ায় সর্বভারতীয় সম্মেলন করবে ক্ষেতমজুর ইউনিয়ন। ১৭ ই ফেব্রুয়ারি সমাবেশে সব অংশের মানুষকে যোগদানের আহ্বান জানান তিনি। এছাড়াও সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ইউনিয়নের রাজ্য সম্পাদক অমিয়পাত্র ,শ্রমিক নেতা দিলীপ মিশ্র ,গণ আন্দোলনের নেতা জামির মোল্লা সহ আরো অনেকে। সভাপতিত্ব করেন ইউনিয়নের রাজ্য সভাপতি তুষার ঘোষ।

সম্মেলন স্থলের নামকরণ করা হয়েছে আবুল হাসনাৎ খান নগর ,মঞ্চের নামকরণ করা হয়েছে কমরেড তিমির ঘোষ ও কমরেড কে পি শর্মা মঞ্চ । ৪৪৮ জন দর্শক ও প্রতিনিধি সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন। এদিন সন্ধ্যায় প্রতিনিধি সম্মেলনের উদ্বোধন করেন এ বিজয় রাঘবন। তুষার ঘোষ ,অমলেশ বসু, সাইদুল হক, হিমাংশু দাস, বন্যা টুডু কে নিয়ে গঠিত সভাপতি মন্ডলী সম্মেলন পরিচালনা করছে। সম্পাদকীয় প্রতিবেদন পেশ করেন অমিয় পাত্র। সম্মেলনে উপস্থিত রয়েছেন সারা ভারত কৃষক সভার রাজ্য সভাপতি বিপ্লব মজুমদার, রাজ্য সম্পাদক অমল হালদার সহ নেতৃবৃন্দ।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।