দেশ শিক্ষা ও স্বাস্থ্য

আমেরিকায় প্রয়াত হলেন জীব বিজ্ঞানী আনন্দমোহন চক্রবর্তী


কল্পনা গুপ্ত, চিন্তন নিউজ, ১৩ জুলাই – প্রবাসেই প্র‍য়াত জীব বিজ্ঞানী আনন্দমোহন চক্রবর্তী। অনন্যসাধারণ ও বিরল মেধার বিজ্ঞানী ছিলেন আনন্দমোহন। তিনি প্রয়াত হলেন ৮২ বছর বয়সে আমেরিকার ইলিনয়ে। আনন্দমোহনের জন্ম হয় বীরভূমের সাইথিয়ায় ১৯৩৮ সালে। উনি রামকৃষ্ণ মিশনে ও পরে কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্সে পড়েন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পি এইচ ডি করেন ১৯৬৫ তে। এরপরে যাত্রা করেন আমেরিকার ইলিনয়ে।

ব্যাক্টিরিয়ার জেনেটিক ক্রসলিংকিং তাঁর যুগান্তকারী আবিষ্কার। তিনি ছিলেন শিকাগোর ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং তিনিই বিশ্বে প্রথম কৃত্রিমভাবে তৈরি করেন এক অসীম ক্ষমতা সম্পন্ন ব্যাকটেরিয়া যা সাগর, মহাসাগরে থাকা তেলের দূষণকে রুখে দিতে পারে। এই আবিষ্কারের পেটেন্ট করা নিয়ে আমেরিকার সুপ্রিম কোর্টে লড়াই করে জয়ী হন এবং মাইক্রোবায়োলজির পেটেন্টের জগতে এক বিপ্লব ঘটে। ২০১৭ সালে তিনি ‘পদ্মশ্রী’ খেতাবে ভূষিত হন। তিনি ব্যাকটেরিয়ার সংগে ক্যানসারেরও গবেষণা করেন। তাঁর কাজ থেকে জানা যায়, ব্যাকটেরিয়ার দেহে যে আজুরিণ প্রোটিন রয়েছে তা আমাদের শরীরে ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়া রুখে দেয়। জেনেটিক্যালি ইঞ্জিনিয়ার্ড অরগানিজমস উদ্ভাবনের ক্ষেত্রেও তাঁর কাজ স্মরণীয়।

মাইক্রোবায়োলজির ও জৈব রসায়নের আন্তর্জাতিক গবেষণায় স্থান করে নেওয়া বাঙ্গালী বিজ্ঞানীদের মধ্যে অন্যতম আনন্দমোহন রাষ্ট্রপুঞ্জের শিল্পোন্নয়ন সংস্থা কমিটির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন। এছাড়াও তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন আমেরিকার ‘ন্যাশানাল ইন্সটিটিউট অব হেলথ’, আমেরিকার জাতীয় বিজ্ঞান আকাদেমির জীববিজ্ঞান বোর্ডের সদস্যরূপে ও ‘ আইনস্টাইন ইন্সটিটিউট ফর সায়েন্সের’ পরিচালনার ক্ষেত্রে, ব্রাসেলসের ন্যাটো জোটের শিল্প উপদেষ্টা গ্রুপের সদস্য রূপেও। আনন্দমোহন চক্রবর্তী মাইক্রোবায়োলজির গবেষণাকে এক উচ্চস্তরে পৌঁছে দিয়েছিলেন। তাঁর প্রয়ানে দেশবাসী, বিজ্ঞানী মহল শোকস্তব্ধ। তাঁর ও তাঁর অবিস্মরণীয় কাজের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করি।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।