উত্তম দে, বিশেষ প্রতিবেদন: চিন্তন নিউজ:- ইডি হানা,ইডি আধিকারিক ও আধা সামরিক বাহিনীর ওপর আক্রমণের পর থেকেই, সন্দেশখালির বেতাজ বাদশা,রেশন দুর্নীতির কান্ডে ইডির আতসকাঁচের নিচে থাকা তৃণমুল নেতা শেখ শাহজাহান পলাতক।পুলিশ প্রশাসন তাকে খুঁজে পেতে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ।যার ত্রাসে এতদিন সন্দেশখালির বাসিন্দারা ভয়ে মুখ খুলতে পারত না,সেই শাহজাহান এলাকা ছাড়া হতেই, মানুষের ভেতর জমে থাকা ক্ষোভ যেন আছড়ে পড়ল সন্দেশখালি, জেলিয়াখালির বুকে।
এ যেন তপ্ত হয়ে থাকা ভলক্যানোর দীর্ঘদিন বাদে বিষ্ফোরণ। অত্যাচারিত, নিপীড়িত, এলাকার সাধারণ মহিলাদের সংঘবদ্ধ প্রতিরোধের ফলে নারী নির্যাতনের যে অভিযোগগুলি প্রকাশ্যে এলো তা রীতিমত গা শিউরে ওঠার মতো।
গতকালই রাজ্য বিধানসভায় আর্থিক বাজেট পেশ হয়েছে।এই বাজেটে যদিও পাঁচ লক্ষ কর্মসংস্থানের কথা বলা হয়েছে তার জন্য অর্থ বরাদ্দ হয় নি, কমপক্ষে পঞ্চাশদিন কাজের খাতেও অর্থ বরাদ্দ হয় নি। কিন্তু রাজ্যের ঘাড়ে সাত লক্ষ কোটি টাকা ঋণ অর্থাৎ মাথাপিছু ষাট হাজার টাকা ঋণের বোঝা থাকলেও সরকার লক্ষীর ভান্ডারের অর্থ বৃদ্ধি করেছে। আর ঠিক তার পরদিনই মালদা জেলায় এক স্কুল ছাত্রীকে লালসার শিকার হতে হ’ল। আর সন্দেশখালির ঘরের লক্ষীরা হাতে লাঠি নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে নারী নির্যাতনের অভিযোগ তুলে শাসকদলের প্রতি তাদের ক্ষোভ উগরে দিল।
ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশে অগ্নিসংযোগ ঘটল শাহজাহানের ডানহাত বলে পরিচিত শিবু হাজরার পোলট্রি, বাগানবাড়ি। মহিলাদের অভিযোগ শিবু হাজরা, উত্তম সর্দার নামে শাহজাহান বাহিনীর দুই মুখ্য মুখ এলাকার মহিলাদের ত্রাস সঞ্চার করে জোর করে রাতের বেলায় পার্টি অফিসে নিয়ে গিয়ে সারারাত তাদের বিকৃত আমোদের শিকার করেন। বাড়ির পুরুষদের কাজ করিয়ে মজুরি দিতেন না। মজুরী চাইলে আক্রমণ নেমে আসত। শুধু তাই নয়, অভিযোগ , এই বাহিনী বলপুর্বক গ্রামবাসীর জমি দখল করেছে। অভিযোগ,সমস্ত ঘটনা স্থানীয় থানা জানলেও কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। উল্টে প্রতিবাদ করায় তিনজন নিরীহ গ্রামবাসীকে ধরেছে।তারা অভিযুক্তদের গ্রেফতার ও ধৃতদের মুক্তির দাবীতে অনড়।
শাসকদলের তরফ থেকে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা এই অত্যাচারের ব্যাপারে কিছু না বললেও, এই অরাজনৈতিক প্রতিরোধের পেছনে বামেদের ষড়যন্ত্র তত্ত্ব খাড়া করা হয়েছে। স্থানীয় বিধায়ক বসিরহাটের তৃণমুল সাংসদ নুসরত জাহান,শিশু ও মহিলা মন্ত্রী মানণীয়া শশী পাঁজা এমনকি রাজ্য মহিলা কমিশন মহিলাদের অভিযোগের ব্যাপারে কুলুপ এঁটেছেন।
স্বাভাবিক কারণেই বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তবে কি এরাজ্য দিন দিন দুষ্কৃতিদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে? আইনের শাসন কি আদৌ প্রতিষ্ঠিত হবে? নাকি দুষ্কৃতিরা রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক মদতে নির্বিকারে তান্ডব চালিয়ে যাবে? ঘরের লক্ষীদের নিরাপত্তা কি এভাবেই অসুরক্ষিত থাকবে? তবে কি দেওয়ালে পিঠ ঠেকলে সংঘবদ্ধ প্রতিরোধই কি একমাত্র রাস্তা?এটাই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন।