কলমের খোঁচা

বিপ্লবী এম.এন.রায়।।


রূদ্র চক্রবর্তী: চিন্তন নিউজ:২রা জুলাই:- ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিষ্ঠাতা ও কমিউনিস্ট আন্তর্জাতিক কার্যকরী কমিটির সভাপতি বাংলা তথা উপমহাদেশের গৌরব বিপ্লবী মানবেন্দ্র নাথ রায় ১৮৮৯ ইং সনে ২১ শে মার্চ পশ্চিমবঙ্গের ২৪ পরগনা জেলায় আড়বেলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার মূল নাম নরেন্দ্র ভট্টাচার্য। পিতা: দীনবন্ধু ভট্টাচার্য স্কুলের হেড পন্ডিত ছিলেন।এম.এন.রায় পিতার স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করেন। তারপর হরিনাডি এংলো ইন্ডিয়ান স্কুলে ভর্তি হন। রাষ্ট্রগুরু সুরেন্দ্রনাথ বন্দোপাধ্যায়কে সম্বর্ধনা জানাতে গেলে স্কুল থেকে বহিস্কৃত হন। ১৯০৬ সালে জাতীয় বিদ্যাপীঠ থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। পরে যাদবপুর টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট এ ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভর্তি হন। ছাত্রাবস্থায় তিনি বঙ্কিম ও বিবেকানন্দ থেকে অনুপ্রাণিত হন। পরে হরিকুমার চক্রবর্তীর সংস্পর্শে এসে মুক্ত চিন্তায় দীক্ষিত হন।

এভাবে তিনি বিপ্লবী কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়েন। বিপ্লবী কাজ করতে গিয়ে তিনি অসংখ্য ছদ্মনাম গ্রহণ করেন। মি: মার্টিন,মানবেন্দ্র নাথ রায়, হরিসিং, ডাঃ মাহমুদ, মি: হোয়াইট, মি: ব্যানার্জি ইত্যাদি। তবে এম.এন.রায় নামেই মানবেন্দ্র নাথ রায় সমধিক পরিচিত।
রাজনৈতিক ডাকাতিতে অংশগ্রহণকারী সন্দেহে পুলিশ গ্রেফতার করলেও প্রমাণাভাবে ছাড়া পান। মজফরপুর ও মুরারি পুকুর মামলায় অধিকাংশ কর্মী বন্দীহলে বাঘা যতীনের সঙ্গে গুপ্ত সংগঠন গড়ে তুলার কাজ করেন। ভারতে ও ভারতের বাইরে যোগাযোগ করতে থাকেন বিপ্লোবোদ্দেশ্যে। রাজতৈনিক ডাকাতিতে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন গার্ডেনাবিচ ও বেলেঘাটায়। তাকে বাচাঁতে বিপ্লবী রাধা চরণ প্রামাণিক জেলেই স্বীকারোক্তি দিয়ে মর্মান্তিক ভাবে

বিশ্বাসঘাতকের কলঙ্ক নিয়ে মৃত্যুবরণ করেন। মি. মার্টিন ছদ্ম নামে বাটভিয়া যাত্রা। জার্মান অস্ত্র ভারতে আসছে জেনে পুলিশ ধরপাকড় শুরু করে। মানবেন্দ্র নাথ তখন গোয়ায়। তার সাথে যোগাযোগের উদ্দেশ্যে বাঘা যতীন বিপ্লবী ভোলা নাথ চট্টপাধ্যায়কে গোয়ায় পাঠান। তিনি ধরা পড়ে পুলিশের কারাগারে শহীদ হন। ইতিমধ্যে মানবেন্দ্র নাথ ১৯১৫ সালের ১৫ই আগস্ট দেশ ত্যাগ করে ফিলিপাইন চলে যান। ক্রমাগত দেশ বদলে, নাম বদলে জাপানে চলে যান ও রাম বিহারী বসুর সাথে সাক্ষাৎ হয়। আমেনিকায় তিনি মানবেন্দ্র নাথ ছদ্ম নাম ব্যবহার করেন।

বিপ্লবী এম.এন.রায় ভারতে কমিউনিস্ট আন্দোলনের উত্তাল ঢেউ হয়ে ফুলে ফেপেঁ উঠেন। তার হাত ধরেই ভারত,জার্মানী, চীনে জাগরণ ঘটে কমিউনিস্ট দলগুলোর। এম.এন.রায় ব্যারিস্টার পি মিত্রের হাতে প্রতিষ্ঠিত জাতীয় বিপ্লব বাদী দল অনুশীলন সমিতির সদস্য ছিলেন। অস্ত্র সংগ্রহের জন্য তিনি পাড়ি দেন বিদেশে। জাপান,চীন হয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যান।

এখানে দেখা হয় লালা লাজপত রায়ের সঙ্গে। লালাজী ছিলেন একজন মার্কসবাদী। এখানে এসে রায় মার্কসবাদের সাথে পরিচিত হন এবং মার্কসবাদ চর্চা শুরু করেন। এক আমেরিকান নারীকে বিয়ে করার কারণে ঘর হারান তিনি। শ্বশুরের ক্ষোভ তার উপর। মার্কিন পুলিশের বাড়াবাড়িতে জীবন ওষ্ঠাগত হয়ে পড়ে। একদিন কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি সভা শেষ করে ফেরার পথে গ্রেফতার হন। জামিনে ছাড়া পাওয়ার পর মার্কিন গোয়েন্দাদের চোখে ধুলা দিয়ে পালিয়ে যান মেক্সিকোতে। ১৯১৭ সালে মেক্সিকোতে গিয়ে সমাজবাদী চিন্তা তাকে নতুন করে ভাবতে শেখায়। সেখানকার সমাজবাদী দল সোশ্যালিস্ট ওয়ার্কার্স পার্টিতে যোগদান করেন। সেই পার্টির সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন।

১৯১৯ সালে রুশ কমিউনিস্ট নেতা মাইকেল বরোদিনের সঙ্গে এম.এন.রায়ের পরিচয় হয়। কমরেড বরোদিনের কাছে রায় মার্কসবাদের শিক্ষা লাভ করেন। তিনি সোশ্যাল ওয়ার্কার্স পার্টিকেই মার্কসবাদী দলে রূপান্তরিত করেন এবং মেক্সিকোর কমিউনিস্ট পার্টি গঠনের মধ্যে দিয়ে সোভিয়েট ইউনিয়নের বাইরে পৃথিবীর প্রথম কমিউনিস্ট পার্টি প্রতিষ্ঠা করেন। এ সময় দক্ষিণ ও মধ্য আমেরিকার দেশ গুলোর প্রতিনিধিদের নিয়ে ল্যাটিন আমেরিকান লীগ গঠন করা হয়। সেখানে তিনি আহ্বায়ক কমিটির সম্পাদক নির্বাচিত হন। এম.এন.রায় ১৯২০ সালের ১৭ ই অক্টোবর তাসখন্দে প্রবাসী ভারতীয় ও দুজন বিদেশী নাগরিককে নিয়ে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি গঠন করেন।

১৯২১ সালে এই কমিটি কমিউনিস্ট আন্তর্জাতিকের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি লাভ করে। দলের জন্য অস্ত্র সংগ্রহ করতে এম.এন.রায় অনেক দেশে যান। অবশেষে তিনি অস্ত্র পেলেন সোভিয়েত সরকারের কাছ থেকে। সোভিয়েত সরকার প্রদত্ত দুই ট্রেন ভর্তি অস্ত্র শস্ত্র, সাজোয়া গাড়ী, এরোপ্লেনের খোলা অংশসমূহ, রসদ ধনভান্ডার,সৈন্য,প্রশিক্ষক প্রভৃতি সঙ্গে নিয়ে রায় তামখন্দে পৌছেন। এর আগে আফগানিস্তান হয়ে ভারত থেকে আগত বিপ্লবীদের (মুহাজির) প্রশিক্ষণের জন্য সামরিক স্কুল খোলা হয়। রায় তার সঙ্গে আগত ও তাসখন্দের সামরিক স্কুলের প্রশিক্ষিত তরুণদের নিয়ে গঠন করেন ভারতীয় মুক্তি ফৌজ।

১৯২০ সালের কথা। এম.এন.রায় লেনিনের আমন্ত্রণে চলে আসেন মস্কোতে। কমিউনিস্ট আন্তর্জাতিকের দ্বিতীয় কংগ্রেসে রায় সবাইকে বিস্মিত করেন তার বক্তব্যে। পরবর্তীতে রায়ের এ থিসিসটি কংগ্রেসে লেনিনের থিসিসটির পরিশিষ্ট হিসাবে গ্রহণ করা হয়। মিঃ রায়ের বিশ্লেষণী বক্তব্য ও স্বাধীন চিন্তার প্রতিফলন সত্যিকার অর্থে সবাইকে নতুন করে ভাবতে সাহায্য করে। এ ঘটনার পর লেনিন ও অন্য মার্কসবাদী নেতাদের কাছে রায়ের আলাদা অবস্থান তৈরী হয়। সেখানে রায়ের সঙ্গে লেনিন ট্রটস্কি জিনোভিয়েভ ও পরবর্তীতে স্টেলিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়। তবে সব কিছু ছাপিয়ে যায় রায় ও লেনিনের সাক্ষাতের ঘটনা। এ ঘটনা সম্পর্কে বহুল প্রচলিত একটি বক্তব্য রয়েছে। সাক্ষাতের সময় লেনিন তার উপনিবেসিক সংক্রান্ত থিসিসটি রায়ের হাত তুলে দিয়ে এ সম্পর্কে তার দৃষ্টিভঙ্গি জানাতে বলেন। উপনিবেশগুলোর বৈপ্লবিক কৌশল সম্পর্কে লেনিন সে থিসিস লিখেন এবং তার সঙ্গে রায় একমত পোষণ করেন নি। তবে সমালোচনার জগতে তার প্রভাব সবচেয়ে বেশি। তার সঙ্গে ভিন্ন মত পোষণ করার কথা রাশিয়ায় তখনকার মতো কারোও চিন্তায়ও আসেনি। কিন্তু রায় দ্বিমত পোষণ করলে পরিস্থিতি ভিন্ন হয়ে উঠে। কমিউনিস্ট পার্টির ইতিহাসে লেনিনের পর রায়ের স্থান-যিনি মার্কসবাদের সংশোধনের চেষ্টা করেন।

ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিষ্ঠাতা সেক্রেটারী ছিলেন এম.এন.রায়। লেনিনের সাথে মতপার্থক্যের জের তখনো প্রবল ভাবে ছিল রায়ের। ১৯২২ সালে তৃতীয় বিশ্ব আর্ন্তজাতিক অধিবেশনে তা আবার স্পষ্ট হয়। লেনিন গান্ধিকে বিপ্লবী আখ্যা দিয়ে মূল্যায়ন করতেন। যা মেনে নেননি এম.এন.রায়। গান্ধিকে রায় বরাবরই ধর্মীয় ও সামাজিক ভাবে আদর্শ হিসেবে ব্যাখ্যা দিলেও বিপ্লবী আখ্যা দেন নি।

অবশ্য এর আগের বছর অর্থাৎ ১৯২১ সালে তাসখন্দে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি আন্তর্জাতিক এর অনুমোদন পায়। ভারতের পর পর এই পার্টির কাজ জার্মানিতে সম্প্রসারিত হয়। এখানেও এম.এন.রায়ের ভূমিকা ছিল মূখ্য। জার্মানি থেকে ১৯২২ সালের ১৫ই মে পার্টির পত্রিকা প্রকাশিত হয়। এ পত্রিকা ডাক যোগে ভারতের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন ব্যক্তির নামে পাঠানো হতো। ১৯২৪ সালে তিনি কমিউনিস্ট আন্তর্জাতিকের সভাপতি মন্ডলির সম্পাদক হন।১৯২৪-১৯২৭ সাল পর্যন্ত তিনি পশ্চিম ইউরোপে ছিলেন। সেখানে থাকার সময় তিনি জার্মানে ও ফ্রান্সে কমিউনিস্ট আন্দোলনের পরিচালনার কাজ করেন। ১৯২৬ সালে নভেম্বর মাসে কমিউনিস্ট আন্তর্জাতিকের কার্যকরী সমিতির এক সভা বসে। এ অধিবেশনে এম.এন.রায় আবারো সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯২৭ সালের মে মাসে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির পঞ্চম কংগ্রেসে তার পরামর্শ গৃহীত হয়।

চীন থেকে তিনি বার্লিন ও মস্কোতে যান। সেখানে একবছর কাটান। সে সময় ইভিলিন ট্রেন্টের সাথে তার বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। তিনি মস্কোতে ফিরে আসেন। সেখানে আন্তর্জাতিক কমিউনিস্ট সংস্থার কার্যকরী সমিতির নবম সভায় যোগদান করেন।
১৯৩০ সালের ডিসেম্বর মাসে তিনি ভারতে চলে আসেন। আত্মগোপন থাকা অবস্থায় তিনি শ্রমিক ও কৃষক আন্দোলনকে সংগঠিত করেন। ১৯৩১ সালের ২১ শে জুলাই বোম্বের এক হোটেল থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় পুলিশ তার বিরুদ্ধে কানপুর ষড়যন্ত্র মামলা (১৯২৪) দায়ের করে। তাকে ১২ বছরের কারাদন্ড দেয়া হয়। পরে আপীল করা হলে আপিলে তার সাজা ছয় বছর হয়। তিনি জেলখানায় বসে প্রচুর পড়াশুনা ও লেখা-লেখি করতেন।

জেলখানায় বসেই বিভিন্ন বিষয়ে প্রবন্ধ ও বই রচনা করেন। মুক্তি পাওয়ার পর তিনি বোম্বাই থেকে Independet India নামে একটি সাপ্তাহিক ইংরেজী পত্রিকা প্রকাশ করেন। এই পত্রিকায় তিনি সমসাময়িক রাজনৈতিক প্রসঙ্গ নিয়ে লিখতেন। ১৯৩৬ সালের ডিসেম্বরে এম.এন.রায় কংগ্রেসে যোগদান করেন। কিন্তু মার্কসবাদ সুবিধা করতে পারেন নি। জন মানুষের তাৎপর্য বুঝে উঠতে পারেন নি। যে কারণে গান্ধির সাথে এম.এন.রায়ের মতো পার্থক্যের বিষয়টি আরো প্রকট হয়ে উঠে। এরই মধ্যে দেখা পেল নতুন সমীকরণ। ১৯৩৮ সালে কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে গান্ধিকে সব ক্ষমতা অর্পণ করা হয়। এখানেই থেমে থাকেনি। ত্রিপুরা কংগ্রেসে সুভাষ বসু সভাপতি নির্বাচিত হন। এর ফলে সৃষ্টি হয় গান্ধিবাদীদের চরম বিরোধিতা। পরে সুভাষ বসু কংগ্রেস থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। এই টানা সংকট মেটাতে পরের বছর ১৯৩৯ সালের ২৬ শে মার্চ কংগ্রেসের অভ্যন্তরে লীগ অব র‌্যডিকেল কংগ্রেসমেন এক সংহতি গঠন করা হয়। আশা করা হয়েছিল এতে পরিস্থিতি কিছুটা হলেও সামাল দেওয়া যাবে। কিন্তু তা হয়নি। ১৯৪০ সালে এম.এন.রায় কংগ্রেস থেকে পদত্যাগ করেন। গান্ধি ও নেহরু চক্রের ষড়যন্ত্রের ফলে কংগ্রেসের প্রথম শ্রেণির জাতীয় নেতা বাংলার গৌরব সুভাষ চন্দ্র বসু যিনি কংগ্রেসের দুই বারের নির্বাচিত সভাপতি ও এম.এন.রায় কে কংগ্রেস থেকে বিদায় নিতে হলো।

নতুবা আমরা হয়তো এদের একজনকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পেতাম। ভারতের স্বাধীনতার জন্য নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু আজাদ হীন্দ ফৌজ গঠন করেছিলেন। আর এম.এন.রায় ভারতের স্বাধীনতার জন্য গঠন করেছিলেন ভারতীয় মুক্তি ফৌজ এবং Independet India পত্রিকা প্রকাশ করেছিলেন। জাতীয় রাজনৈতিক দৃশ্যপট থেকে এদেরকে সরিয়ে দেয়া আজও রহস্যাবৃত্ত। নতুবা ভারতের নেতৃত্বের ইতিহাস অন্যভাবে রচিত হত। তার দুই বছরের মাথায় কৌশলগত কারলে ‘ভারত ছাড়’ আন্দোলনের বিরোধিতা করে বসেন এম.এন.রায়। ১৯৪২ সনে কংগ্রেসের ভারত ছাড় আন্দোলনের বিরোধিতা করার কারণে এম.এন.রায় ও র‌্যডিকেলদের অনেক নির্যাতন সহ্য করতে হয়। ১৯৪৪ সালে র‌্যডিকেল পার্টির দ্বিতীয় সম্মেলনে স্বাধীন ভারতের সংবিধানের খসড়া গৃহীত হয়।

এম.এন.রায় অসংখ্য প্রবন্ধ লিখেছেন। তিনি ১৭ টি ভাষায় দক্ষ ছিলেন। তার রচিত ৬৭ টি গ্রন্থ ও ৩৯টি পুস্তিকার কথা জানা যায়। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য নিউ হিউমেনিজম (১৯৪৭), মাই-মেমোয়ার্স (১৯৫৪), এ রিভলিউশন এ্যান্ড কাউন্টার রেভিলিউশন ইন চায়না, রিজন রোমন্টিমিজম এন্ড রিভলিউশন ইত্যাদি । ইন্ডিয়া ইন ট্রানজিশন গ্রন্থটি বিপ্লবী অবনী মুখার্জির সঙ্গেই মিলিত ভাবে রচিত। শিবনারায়ণের সম্পাদনায় Works of M.N.Roy (১৯৩২-১৯৩৬) চার খন্ড অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস থেকে প্রকাশিত হয়।

এক পর্যায়ে এম.এন.রায় ইসলামের সাম্যবাদী ও মানবতাবাদী দর্শন সম্পর্কে অবগত হয়ে আকৃষ্ট হয়ে পড়েন এবং এ বিষয়ে গভীর ভাবে অধ্যয়ন করেন। যার ফলশ্রুতিতে তিনি Histrocal Role of Islam বাংলায় ইসলামের ঐতিহাসিক অবদান নামীয় যুগান্তকারী গবেষণামূলক গ্রন্থ রচনা করেন।

বাংলার গৌরব ও বিশ্বের বহুদেশের কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিষ্ঠাতা ও বিশ্ব কমিউনিস্ট ইতিহাসের অন্যতম স্থপতি এম.এন.রায় ১৯৫৪ সালের ২৫ শে জানুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন। এদেশের অনেক কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য তার নামটা পর্যন্ত জানেন না অথবা জানলেও ভুলতে বসেছেন।

তাই এ ক্ষণজন্মা পুরুষের সংক্ষিপ্ত জীবনী বর্তমান প্রজন্মের বাম রাজনৈতিক কর্মিদের উদ্দেশ্যে লিখতে পেরে নিজেকে গৌরবান্বিত মনে করছি।

তথ্যসূত্রঃ দৈনিক সিলেটের ডাক।।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।