দেশ

বিধানসভা অধিবেশন ডাকতে বদ্ধপরিকর রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট:—-


কাকলি চ্যাটার্জি: চিন্তন নিউজ:২৫শে জুলাই:- রাজ্যে বিধানসভা অধিবেশন ডাকতে বদ্ধপরিকর মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট। গতকাল ভোরের দিকে গেহলটের সভাপতিত্বে জয়পুরে এক বৈঠক হয়। করোনামহামারী ও রাজ‍্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য বিধানসভা অধিবেশন ডাকার ওপর জোর দেন, গত দু’ সপ্তাহ ধরেই তিনি এই দাবীতে অনড় থেকেছেন। অন্যান্য কংগ্রেস বিধায়করা সহমত পোষণ করেন। গতকাল রাজভবনের লনে বিক্ষোভে সামিল হন মুখ্যমন্ত্রী সহ বিধায়করা এবং গেহলট রাজ্যপাল কলরাজ মিশ্রর সঙ্গে দেখা করে বিধানসভা অধিবেশন ডাকার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। বিজেপি নেতৃত্বের চাপের মুখে নতিস্বীকার না করে সংবিধানের প্রতি দায়বদ্ধতা দেখাতে অনুরোধ জানান। গেহলট বিক্ষোভ কর্মসূচিতে ১০০ জন বিধায়ককে জমায়েত করেন এবং সোমবারের মধ্যে বিধানসভা অধিবেশন শুরু করার কথা বলেন।

রাজস্থানের রাজনৈতিক সংকট নিরসনের জন্য নিযুক্ত বিশেষ পর্যবেক্ষক রণদীপ সিং সুযজেওয়ালা বলেন, ” মুখ্যমন্ত্রী সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে চান, কোভিড১৯ মোকাবিলায় বিধানসভা অধিবেশন ডাকতে চান, যারা মনে করেন কংগ্ৰেসের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই তাদেরও চুপ করাতে চান। রাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রীকে একটি নোট দেন যা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। কিন্তু রাজ্যপালকে ১৪৪ধারার কথা মাথায় রাখতে হবে।”

গেহলট বলেন, “আমরা রাজ্যপালকে বিশ্বাস করি।” সুরজেওয়ালা জানান রাজ্যপাল প্রেরিত নোটটি খতিয়ে দেখে তার উত্তর রাজ্যপালের কাছে তৎক্ষণাৎই পাঠানো হবে। মুখ্যমন্ত্রী সর্বদাই সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণে তৎপর এবং আত্মবিশ্বাসী। ‘অশোক গেহলট জিন্দাবাদ’ বলে সুরজেওয়ালা বলেন বিজেপি যেভাবে বেশ কয়েকটি রাজ্যে জনগণের আস্থার বিরুদ্ধে গিয়ে বিরোধী দলগুলোর নেতৃত্বে নির্বাচিত সরকার ফেলার নোংরা খেলায় মেতেছে তা সমগ্ৰ দেশবাসী দেখছেন।

তিনি আরও বলেন, ” রাজস্থান সরকার ও মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের ম্যান্ডেট প্রমাণের চেষ্টা করছেন, কোভিড১৯ মহামারী এবং সেই কারণে উদ্ভূত অর্থনৈতিক সংকট নিরসনে আলোচনা করার জন্য বিধানসভা অধিবেশন ডাকতে আগ্ৰহী। কংগ্রেসকে নিয়ে রাজনীতিতে আলোচিত সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটাতে চান।” আজ থেকে রাজস্থান কংগ্রেস রাজ্যব্যাপী বিজেপির বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামবে, বিক্ষোভ কর্মসূচি গ্রহণ করবে‌। রাজস্থানের কংগ্রেস সভাপতি গোবিন্দ সিং দোতাসর বলেছেন,
“বিজেপির গণতন্ত্র হত্যার ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সকাল ১১টায় সকল জেলা সদরে কংগ্রেস কর্মীরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করবেন‌। দরকার হলে কর্মীরা ব্লক, ওয়ার্ড এবং পঞ্চায়েত স্তরেও বিক্ষোভ দেখাবেন।”

রাজ্য কংগ্ৰেস সভাপতি এটাও বলেছেন, “বিজেপি আমাদের সরকারকে ফেলার ষড়যন্ত্র করছে এবং জনগণ তা দেখছে। রাজ্যপালকে প্রভাবিত করার জন্য দিল্লিতে বসে ‘অদৃশ্য শক্তি’ দ্বারাও নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা চলছে। জনগণ চায় তাদের রায়ে নির্বাচিত সরকার তার মেয়াদ পূর্ণ করুক।”

রাজস্থানের বহমান রাজনৈতিক তরজা আর রাজস্থানের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই, দিল্লির গন্ডি ছাড়িয়ে তা গান্ধী পরিবারের সদস্যদের কাছে পৌঁছে গেছে। এ সংকট কেবলমাত্র কংগ্রেস দলের সংকট নয়, এ হল গান্ধী পরিবারের বর্তমান প্রজন্মের নেতৃত্বের সংকট। গেহলট তিনটি টার্মের প্রধানমন্ত্রী আবার তাঁর বর্তমান প্রতিপক্ষ শচীন পাইলটও রাজনীতিতে দ্বিতীয় প্রজন্মের নেতৃত্ব। তাঁর বাবা শচীন পাইলট একসময় সোনিয়া গান্ধীকেও চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছিলেন। যত দিন যাচ্ছে রাজস্থানের রাজনীতিতে জটিলতা বাড়ছে। আগামী দিনে গান্ধী পরিবারের ভূমিকা কতখানি প্রভাব ফেলতে পারবে তার ওপর অনেকাংশে নির্ভর করে আছে রাজস্থানে কংগ্রেসের ভবিষ্যৎ।।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।