দেশ বিদেশ

উত্তরাখন্ডের পিথোরাগড় জেলার ধারচুলা এলাকায় সদ্য তৈরী করা ছয়টি ফাঁড়ির মধ্যে দুটি ফাঁড়ি সরিয়ে নিল নেপাল:——


কাকলি চ্যাটার্জি: চিন্তন নিউজ:৭ই জুলাই:- নেপাল সশস্ত্র পুলিশ উত্তরাখন্ডের পিথোরাগড় জেলার ধারচুলা এলাকায় ভারতের সীমান্তে স্থাপন করা ছয়টি ফাঁড়ির মধ্যে দুটি সরিয়ে নিয়েছে বলে গতকাল রাজ্য সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

উত্তরাখন্ডের ধারচুলা শহরের সাথে লিপুলেখ পাশ জুড়ে দিয়েছে নেপাল সীমান্ত। সংযোগকারী এই রাস্তাটি কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রায় একমাস আগে নেপাল ধারচুলার কাছে ছয়টি সীমান্ত ফাঁড়ি স্থাপন করে, কিন্তু নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি তাঁর ভারতবিরোধী মনোভাবের জন্য ক্ষমতাসীন নেপাল কমিউনিস্ট পার্টি এর বিরোধিতা করে। ওলির ব্যাপারে আলোচনার জন্য এন সি পি এর স্থায়ী কমিটি একটি মীটিং করার সিদ্ধান্ত নিলেও তা বুধবার পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছিল।

এই অঞ্চল দিয়ে চীন সীমান্ত পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই পাকা রাস্তাটি সম্প্রতি নির্মাণ করে ভারত। নেপাল বর্তমানে নিজের দেশের মানচিত্রে পরিবর্তন ঘটিয়ে ভারতের প্রায় ৪০০ বর্গকিলোমিটার জায়গা নিজেদের বলে দাবি করে এবং সেই থেকেই লিম্পিয়াধুরা, লিপুলেখ পাশ ও কালাপানি অঞ্চলকে নেপালের অংশ হিসেবে দেখায়। তখনই ভারত সীমান্তে ছয়টি পুলিশ চৌকি বসায়।

ধারচুলার সাব ম্যাজিস্ট্রেট অনিল কুমার শুক্লা বলেন, ” সীমান্তে এন সি পি পরিচালিত দুটি ফাঁড়ি দুদিন আগে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।” তিনি আরও জানান, ” আমরা কিছুদিন আগে চেকপোস্টে নেপাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত সভার সময় এটা লক্ষ্য করেছি। এ বিষয়ে খোঁজখবর নিলে তাঁরা জানান হায়ার অথোরিটির নির্দেশে এটা করা হয়েছে।” অন্য এক আধিকারিক (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) বলেন,” যে দুটি ফাঁড়ি সরিয়ে নেয়া হয়েছে তারা ইন্দো-নেপাল সীমান্তের নিকটবর্তী দারচুলা জেলার উক্কু ও বাকরা এলাকার।”

শুক্লা বলেন,”সীমান্তে অবৈধ ক্রিয়াকলাপ এবং ভারতীয় সেনাবাহিনীর কাজকর্ম পরীক্ষা করার জন্য তারা এই ফাঁড়িগুলো স্থাপন করেছিল। মূলত মাদক পাচার, চোরাচালান এই পথে ঘটে থাকে। এইসব দূরবর্তী স্থানে অবস্থিত পুলিশ ফাঁড়িগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রাখা খুবই অসুবিধাজনক ও ব্যয়বহুল। তাই তাঁরা ফাঁড়ি দুটো সরিয়ে নিলেন।”

ইন্দো-নেপাল সম্পর্কের বিশেষজ্ঞরা বর্তমানে এই উত্তেজনার সময়ে নেপালের এই পদক্ষেপ খুবই উল্লেখযোগ্য বলে মনে করেন। কুমুন বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অবসরপ্রাপ্ত এক অধ্যাপক ও ইন্দো-নেপাল সম্পর্কের পর্যবেক্ষক এল এল ভার্মা বলেছেন,” নেপালের পুলিশ ফাঁড়ি অপসারণ ভারতের প্রতি নেপালের প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ইঙ্গিত করে।”


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।