রাজ্য

“নীচু জাত” – তাই মারধোর জুটল খোদ কলকাতা পুলিশের হাতে


সুপর্ণা রায়, চিন্তন নিউজ, ২৬ আগষ্ট: খোদ কলকাতা!! যে কলকাতাকে সভ্যতা ও সংস্কৃতির পীঠস্থান বলে দাবী করা হয়, সেই কলকাতার লকআপে এক যুবককে অর্ধ উলঙ্গ করে মারধোর করল পুলিশ। তার অপরাধ সে নীচুজাত। ঘটনাটি ঘটেছে পোর্ট থানায়।

সিকলাইন এলাকায় ওমপ্রকাশ রাম আর তার পরিবার অনেকদিন ধরে থাকেন। তার বাড়ীর একটা অংশের পাঁচিল ভেঙ্গে গেছে, সেটাই সারাতে গিয়ে সেখানকার অন্য বাসিন্দাদের সাথে ঝামেলা লাগে। গত ১২ই আগস্ট ওই থানার কনস্টেবল থানায় ডেকে পাঠায় ওমপ্রকাশকে।

ওমপ্রকাশের কথায়, “থানায় ঢুকে কনস্টেবল মন্ডলবাবুকে বলি আমি এসেছি স্যার। উনি আমাকে বসতে বলেন। আমি বাইরের একটা চেয়ারে বসি। তারপরই ইন্সপেক্টর সুব্রত পান্ডে আমাকে গালাগাল দিতে শুরু করেন। কুৎসিত ভাষায় বলতে শুরু করে তুই ছোট জাত। আমি প্রতিবাদ করি আর তার সঙ্গে সঙ্গে চড় মারেন।” শনিবার নিজের মুখেই একথা জানিয়েছেন ওমপ্রকাশ রাম।

সেই রাতের কথা বলতে গিয়ে ওমপ্রকাশ বলেন, ইন্সপেক্টর পান্ডে জোর করে তাকে লকআপে ঢুকিয়ে দেয়। তিনি বারবার বলতে থাকেন পাঁচিল তোলা নিয়ে যে বিবাদ হয়েছে তার মীমাংসা করতে। অথচ তাকে “ছোট জাত নিচু জাত” বলতে বলতে তার পোষাক খুলতে থাকে। প্রায় অর্ধ উলঙ্গ করে বসিয়ে রাখে তারপর তাকে ছেড়ে দেয়।

ওমপ্রকাশের কথায়, “এতদিন কলকাতায় আছি, কেউ কোনদিন ছোট জাত নিচু জাত বলেননি। কেউ এভাবে গালাগালি করেনি। থানায় গেলে পুলিশই সমস্যা মেটাতেন। কিন্তু এভাবে গালিগালাজ করে লকআপে বসিয়ে রাখল।”

উত্তর প্রদেশ-রাজস্থান-বিহারে যে ঘটনা ঘটে সেই ঘটনা এবার পশ্চিমবঙ্গে ঘটল এবং খোদ কলকাতাতে। এই ঘটনায় খুব আতংকিত হয়ে আছেন ওমপ্রকাশ। মাঝে প্রায় দু সপ্তাহ কেটে গেছে, কিন্তু কাউকে কিছু বলতে পারে নি। তার বার বার মনে হয়েছে আবার যদি থানায় ডেকে মারধর করে। বললেন, “এরা যা, আমাকে আর আমার পরিবারকে বাড়ী নিয়ে ফাঁসিয়ে দিতে পারে।” পুলিশের ডিসি (পোর্ট) সৈয়দ ওয়াকারের কাছে এই ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন এ ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।