দেশ বিদেশ

ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ হলে শেষ হয়ে যেতে পারে মানবসভ্যতা


নিউজডেস্ক, চিন্তন নিউজ, ১১ আগষ্ট: প্রতিবেশী দেশ ভারত ও পাকিস্তান৷ এই দুই দেশের মধ্যে পারমাণবিক যুদ্ধ বাধলে বিশ্বে দুর্ভিক্ষ দেখা দেবে। এতে অন্তত ২০০ কোটি মানুষের মৃত্যু হতে পারে বলে শঙ্কা করছে ওয়াকিবহাল মহল৷ তাদের মতে, প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে একটা মানবসভ্যতাও।  সম্প্রতি প্রকাশিত গবেষণামূলক এক প্রতিবেদনে এই শঙ্কার কথা প্রকাশ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই দুই দেশের মধ্যে সীমিত পর্যায়েও পারমাণবিক অস্ত্রের লড়াই হলে বিশ্বের আবহাওয়া মণ্ডলের ব্যাপক ক্ষতি ও শস্য ক্ষেত্র ধ্বংস হয়ে যাবে। পরিণামে খাদ্যপণ্যের বিশ্ববাজারে বহু গুণ খারাপ প্রভাব পড়বে। খাদ্যশৃঙ্খলা ব্যাহত হবে।

নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ী ইন্টারন্যাশনাল ফিজিশিয়ানস ফর দ্য প্রিভেনশন অব নিউক্লিয়ার ওয়্যার এবং ফিজিশিয়ানস ফর সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটি এই দু’টি সংগঠন এই গবেষণামূলক প্রতিবেদনটি তৈরি করে। এর আগে সংগঠন দু’টি ২০১২ সালের এপ্রিলে প্রকাশিত এক প্রাথমিক প্রতিবেদনে ধারণা দিয়েছিল, এই রকম একটি পারমাণবিক যুদ্ধে ১০০ কোটির বেশি মানুষ মারা যেতে পারে। গবেষণার দ্বিতীয় সংস্করণে সংগঠন দু’টি বলেছে, দুই দেশের সম্ভাব্য পরমাণু যুদ্ধে  বিশ্বের জনবহুলতম  দেশ(চীন) মারাত্মক খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার মুখে পড়তে পারে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, পরমাণু যুদ্ধের ফলে আবহাওয়ামণ্ডলে যে কার্বন অ্যারোসল কণা ছড়াবে, তাতে সুদূর যুক্তরাষ্ট্রেও এক দশক শস্যকণা ও সয়াবিনের উৎপাদন প্রায় ১০ শতাংশ কমে যাবে। এই কণার প্রভাবে চিনে প্রথম চার বছর গড়ে ২১ শতাংশ ও পরের ছয় বছর আরও ১০ শতাংশ ধানের উৎপাদন কমে যাবে। মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হবে গমের উৎপাদনও।

প্রতিবেদনের লেখক আইরা হেলফান্দ সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘উন্নয়নশীল বিশ্বে ১০০ কোটি মানুষ মারা যাওয়া নিশ্চিতভাবেই মানব ইতিহাসের জন্য এক বিপর্যয়। এর সঙ্গে চীনের আরও ১৩০ কোটি মানুষের জীবন ঝুঁকির মুখে পড়বে। এর যে ফলাফল আমরা পাব তা হল, স্পষ্টতই একটি সভ্যতা বিলুপ্ত হয়ে যাবে।’

হেলফান্দ আরও বলেন, ১৯৪৭ সালে ভারত-পাকিস্তান বিভক্তির পর থেকে এখনও পর্যন্ত অন্তত তিনবার দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে পরমাণু অস্ত্রের অধিকারী দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এমন পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে গবেষণাটি করা হয়েছে।
হেলফান্দের মতে, ‘আধুনিক যুগের পারমাণবিক অস্ত্র ১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালে জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে ফেলা মার্কিন পরমাণু বোমার চেয়ে অনেক শক্তিশালী। ওই বোমায় দুই লক্ষের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।’ সংগঠন দু’টির আর্জি, বিশ্বশান্তির কথা ভেবে  ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের কথা ভুলে যাক৷ নয়তো  একটা সভ্যতা ধ্বংস হয়ে যাবে!


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।