দেশ

বিপ্লবী রাসবিহারী বসু স্মরণে


মীরা দাস:চিন্তন নিউজ:২৫শে মে:- আজ ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের স্বশস্ত্র বিপ্লবের বহুরূপী রাসবিহারী বসুর জন্মদিন …তিনি ছিলেন ইংরেজ বিরোধী সশস্ত্র বিপ্লবের অগ্রণী। তাঁর জন্ম…২৫ শে মে ১৮৮৬ ইং মৃত্যু …২১ শে জানুয়ারী ১৯৪৫ ইং .স্থান পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার সুবলদহ গ্রাম, পিতার নাম …বিনোদ বিহারি বসু, মাতার নাম ..ভুবনেশ্বরী দেবী…

ভারতে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের একজন বিপ্লবী নেতা এবং ইন্ডিয়ান ন্যাশানাল আর্মির সংগঠক ছিলেন। রাসবিহারী বসুর শৈশবের পড়াশোনা সুবলদহের গ্রাম্য পাঠশালায়, বর্তমানে এই স্কুলের নাম সুবলদহ রাসবিহারী বসু প্রাথমিক বিদ্যালয় ।

কথিত আছে তিনি ইংরেজদের মূর্তি তৈরী করে লাঠি খেলার কৌশলে সেই মূর্তি গুলোকে ভেঙে ফেলতেন। এই সুবলদহ গ্রামে তিনি ১২ থেকে ১৪ বছর বয়স অবধি তিনি ছিলেন,এর পাশাপাশি তিনি পরবর্তী কালে ব্রিটিশদের চোখে ধুলো দিয়ে সুবলদহ গ্রামে এসে গা ঢাকা দিতেন। তাঁর পিতা বিনোদ বিহারী বসুর কর্মক্ষেত্র হিমাচল প্রদেশে শিমলা। তিনি সুবলদহ পাঠশালা, মর্টনস্কুল, ও ডুপ্লে কলেজের ছাত্র ছিলেন।

১৯০৮ সালে তিনি আলিপুর বোমা বিস্ফোরণ মামলায় অভিযুক্ত হন, এরপর তিনি চলে যান দেরাদুন সেখানে তিনি বন গবেষনা ইনস্টিটিউটে হেড ক্লার্ক হিসাবে কাজ করেন, দেরাদুনে তিনি গোপনে বাংলা, উত্তর প্রদেশ ও পাঞ্জাবের বিপ্লবী দের সংস্পর্শে আসেন, তাঁর অন্যতম কৃতিত্ব বড়লাট হার্ডিঞ্জের ওপর প্রাণঘাতী হামলা, ভারতের বাইরে সিঙ্গাপুরে আজাদ হিন্দ ফৌজ গঠন করেন। ১৯১২ সালে বিপ্লবী কিশোর বসন্ত বিশ্বাস রাসবিহারী র নির্দেশনায় দিল্লীতে হার্ডিঞ্জকে লক্ষ্য করে বোমা ছোড়েন তবে পুলিশ তাঁকে কখনই গ্রেপ্তার করতে পারে নি। বহু বিপ্লবী কর্মকান্ডের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও তিনি সরকারের নজর এড়াতে সক্ষম হতেন বরাবর ।১৯১৫ সালে জাপানে চলে যান। ১৯১৫ সালের ১২ ই মে কলকাতার খিদিরপুর বন্দর থেকে জাপানি জাহাজ ” সানুকি মারু” সহযোগে তিনি ভারতবর্ষ ত্যাগ করেন । তার আগেই তিনি নিজেই পাসপোর্ট অফিস থেকে রবীন্দ্রনাথের আত্মীয় রাজা প্রিয়নাথ ঠাকুর ছদ্মনামে পাসপোর্ট সংগ্রহ করেন। ১৯৪২ সালের ২৮-২৯ মার্চ টোকিওতে তিনি ভারতের স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে তিনি সেই সম্মেলনে একটি সেনাবাহিনী গঠনের প্রস্তাব দেন। সেই মত ইন্ডিয়ান ইন্ডিপেন্ডেন্স লীগ বা ভারতীয় স্বাধীনতা লীগ গঠনের সিদ্ধান্ত নেন। ১৯৪২ সালের ২২ জুন মাস, ব্যাঙ্ককে তিনি লীগের দ্বিতীয় সম্মেলনের আহ্বান জানান। এই সম্মেলনে সুভাষচন্দ্র বসুকে লীগে যোগদান ও এর সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণের আমন্ত্রণ জানানোর প্রস্তাব গৃহীত হয়। ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ইন্ডিয়ান ইন্ডিপেন্ডেন্স লীগে ও লীগের সশস্ত্র শাখা ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মিতে যোগদানে উৎসাহিত করা হয়। কিন্তু জাপানি সেনা কর্তৃপক্ষের একটি পদক্ষেপে তাঁর প্রকৃত ক্ষমতার উত্তরণ ও সাফল্য ব্যাহত হয়। তবে তার সাংগঠনিক কাঠামোটি থেকে যায়। রাসবিহারী বসু ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মি অর্থাৎ আজাদ হিন্দ ফৌজ গঠন করেন। মৃত্যুর পূর্বে রাসবিহারী বসুকে জাপান সরকার সম্মানসূচক ‘সেকেন্ড অর্ডার অব দি মেরিট অব দি রাইজিং সান’ খেতাবে ভূষিত করে। জাপানে ১৯৪৫ সালের ২১ জানুয়ারি রাসবিহারী বসুর মৃত্যু হয়।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।