কলমের খোঁচা

এই “রাজনৈতিক ছ্যাবলামি”র শরিক হ’তে প্রস্তুত নই। —



সঞ্জীব বর্মণ: চিন্তন নিউজ:৫ই এপ্রিল:- বাংলা অভিধানে “রাজনৈতিক ছ্যাবলামি” এই শব্দ টাকে জোরালো ভাবে প্রতিস্থাপিত করা এবং তাকে বহুল ব্যবহার যোগ্য করে তোলার বিরলের মধ্যে বিরলতম কৃতিত্বের অধিকারী হিসাবে আমাদের সর্বজ্ঞ মুখ্য এবং আমাদের নাট্যমোদী প্রধানের নাম চির অম্লান, চির ভাস্বর হয়ে ইতিহাসে তাহলে স্থান পেয়েই গেলো!

একজন এই রাজ্যের পাঁচজনের মধ্যে একজন নয়, একমাত্র মাইক্রোবায়োলজিষ্ট (Microbiologist)। যিনি একাধারে স্তরভেদ নিরপেক্ষ একমাত্র প্রশাসক আবার সর্বরোগহরা একমাত্র প্রতিশেধক। তিনি সব্জি বাজারে খড়ি দিয়ে বৃত্ত আঁকেন, শরীরি ভাষায় সাবধানতার
কায়দা শেখান, রাজনৈতিক বিরুদ্ধমতের পরামর্শকে অবলীলায় উপেক্ষা করেন, রাস্তায় পরিপাটি করে সেজেগুজে মন্ত্রী-সান্ত্রীদের তাঁর ছবি সাঁটানো প্রসাদ বিতরনের তৃতীয় শ্রেনীর পথনাটককে তিনি উপভোগ করেন সেই তিনিই অনুকরনীয় বিভঙ্গে পিপিই (Personal Protection Equipment) হীন নিধীরাম সর্দার সরকারী ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্য কর্মীদের আতঙ্ক সম্পৃক্ত ক্ষোভ-বিক্ষোভ কে হেলায় অবজ্ঞা করেন আবার এবেলার মৃতের সংখ্যা যিনি ওবেলায় তিন তুড়িতে কমিয়েও দিতে পারেন মোদ্দা কথা করোনার বিশ্বব্যাপী ভয়ঙ্কর হামলার মোকাবিলায় সর্বাত্মক যুদ্ধে এই রাজ্যে তিনি একমেবদ্বিতীয়ম। কাউকে তার দরকার নেই।শুধু দু-চার জন ঢোলবাদক সরিসৃপ আর প্রসাদ প্রত্যাশী কলমচি থাকলেই হলো।

আরেকজন জাতীয় জীবনের এই চরম সংকটময় সময়ে ‘উদ্বেগ’, ‘উৎকন্ঠা’,‘দারবদ্ধতা’ এই শব্দ গুলোকেই হাস্যকর করে তুলেছেন। তাকে ততটা বিচলিত দেখাচ্ছে না যতটা তিনি ভান করছেন। মালুম হচ্ছে দুঃসময়কে সুযোগ হিসাবে ব্যবহরেই তার আগ্রহ যেন বেশী। রেললাইনের ধারে, সাবওয়েতে, পরিবহণহীন দীর্ঘ পথের পদযাত্রায় ঘড়মুখি আতঙ্কিত, পরিশ্রান্ত উদভ্রান্ত, দিকভ্রান্ত পেটে গামছা বাঁধা পরিযায়ী শ্রমিক,লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধি, নিয়ন্ত্রণহীন কালোবাজারী, সরকারী অব্যবস্থায় ধীরেধীরে অমিল নয়তো দুর্লভ হতে থাকা নিত্যপন্য, সম্পূর্ণ অপ্রস্তত সরকারী স্বাস্থ্য পরিকাঠামো এসমস্ত বিষয়ে আমাদের প্রধান যেন নির্বিকল্প সমাধিতে। শুধু মাঝেমাঝে ভেসে ওঠেন আর থালা-বাসন , কাঁসর-ঘন্টা বাজানোর আর ‘মহশক্তির’ (ছি!) জাগরণে দিয়া জ্বালানোর নিদান দেন তাও আবার বেছেবেছে বিজেপির প্রতিষ্ঠার দিনেই। চরম সংকটতম মুহূর্তে দেশবাসীরর সঙ্গে রাষ্টীয় দায়িত্ব পালনের নামে এই রকম কূপমণ্ডূক রঙ্গ রসিকতার দ্বিতীয় কোনো উদাহরণ কী আর আছে ? ইয়ার্কিরও তো একটা সীমা থাকা দরকার।না,আমি এই রাজনৈতিক ফাজলামির শরিক হতে পারবো না। ঘড়ের আলো নিভিয়ে বারান্দায় প্রদীপ আমি জ্বালাবো না, জ্বালাবো না, জ্বালাবো না। ৯ মিনিট কেন ৯ সেকেন্ডও নয়। বরং গলা তুলে সোচ্চারে বলবো, দায়িত্বজ্ঞানহীন, মানবিকতার লেশমাত্রহীন অশ্লীল এই হুজুকের সঙ্গী হতে আমি প্রস্তুত নই।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।