চৈতালী নন্দী, চিন্তন নিউজ, ১৩ নভেম্বর: একটা একটা করে খুলছে দোকান গুলো, তাও মাত্র দু-তিন ঘন্টার জন্যে। এর মধ্যেই কিনে নিতে হবে যা কিছু প্রয়োজন। আর বেশী কিনবেই বা কি করে! হাতে টাকা কোথায়! ব্যাঙ্ক তো বন্ধ! চলছে না কোনো গন পরিবহন। এখনও চলছে কারফিউ।শুনসান রাস্তাঘাট। স্কুল খুলেছে বটে, তবে কেউ তাদের সন্তানদের পাঠাচ্ছে না সেখানে, জীবন তো আগে…তারপর শিক্ষা। কাশ্মীরের রাস্তাঘাট এখনও মোড়া রয়েছে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ঘেরাটোপে, মোতায়েন অসংখ্য সেনা জওয়ান।মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ। কিন্তু তার মধ্যেও ইতিউতি ঘটছে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ, ঘটছে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনাও ।
সেই ১০০ দিন আগে কাশ্মীর হারিয়েছে তার সম্মান। অপমানিত কাশ্মীর যে বড়ই সঙ্কুচিত বড়ই কুন্ঠিত। যেন শ্বাসরোধ করা হয়েছে তার। খাঁ খাঁ করছে সব পার্টি অফিস, নেতাদের দেখা নেই।হবে কি করে! কমবেশী সব বড় নেতারাই তো বন্দী। বন্দী হয়ে আছেন অসংখ্য রাজনৈতিক নেতা, সমাজ কর্মী, আইনজীবী সহ প্রাক্তন তিন মুখ্যমন্ত্রীও। এছাড়াও জন নিরপত্তা আইনে বন্দী হয়ে রয়েছেন নাবালক ও শিশু সহ অসংখ্য মানুষ। কেউ রয়েছে কাশ্মীরে কেউ বাইরে।
এই অভিশপ্ত ১০০ দিনে ক্ষতি হয়েছে ১০ হাজার কোটি টাকা। অসংখ্য তরুণ খুইয়েছেন তাদের চাকরী, বন্ধ কাশ্মীরের বিখ্যাত হস্তশিল্প…. কারন অর্ডার সব ক্যানসেল। সরকারি প্রকল্পের সব কাজ বন্ধ, পরিযায়ী শ্রমিকরা প্রাণভয়ে ছাড়ছে কাশ্মীর।
রাজনৈতিক নেতারা বাইরে থাকলে এই নিয়ে তর্কবিতর্ক সভা, প্রতিবাদ চলতো। কিন্তু কে করবে প্রতিবাদ। সব নেতাই তো বন্দী।আগ্নেয়গিরির উপরে বসে রয়েছে কাশ্মীর। ধিকি ধিকি জ্বলছে আগুন, তবে তা মানুষের মনের ভেতর। সেনা সিআরপি কতোদিন থাকবে! নেতারাই বা কতোদিন থাকবে গারদের ভিতর! ছাড়া তো পাবেই একদিন… সরে যাবে সেনা জওয়ান। তারপর হবে বিষ্ফোরন, নির্ভয়ে শ্বাস নেবে কাশ্মীর।