রাজ্য

এনরেগার কাজে ব্যাপক দুর্নীতি রাজ্যে


রঘুনাথ ভট্টাচার্য, চিন্তন নিউজ, ২৮ আগষ্ট: রাজ্যের গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের ২০ আগস্ট প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, রাজ্যে এনরেগা প্রকল্প রূপায়ণে ব্যাপক দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া গেছে। এই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে যে, এটা এমনই বড় নিয়ম লঙ্ঘনের ঘটনা যাকে ‘কেলেঙ্কারি ‘ আখ্যা দেওয়া যায়। সিদ্ধান্ত হয়েছে, অপরাধীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেয়া হবে।

জানা যায় একটি জেলার আবেদনের বিষয়ে তদন্ত করতে গিয়ে এই দুর্নীতি নজরে পরে। পরে তদন্ত করে দেখা যায় প্রায় প্রতিটি জেলায় এই বেনিয়ম হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা জেলার কাছে কৈফিয়ত তলব করা হয়েছে। ঐ জেলার রিপোর্ট অনুযায়ী সেখানে এমন কিছু প্রকল্প রেগায় রূপায়িত হবার কথা বলা হয় যেগুলিতে কোনো অর্থ খরচ হয় নি, অর্থাৎ যেগুলি ‘জিরো এক্সপেন্ডিচার স্কীম।’

খবরে বলা হয়েছে যে, দপ্তরের নির্দেশে প্রকাশ, যে মূলতঃ ৩টি প্রশ্ন উঠেছে প্রাথমিক তদন্তে – এক, যে যে প্রকল্পে বলা হচ্ছে টাকা খরচ হয়নি (অর্থাৎ যেটা তালিকা থেকে মুছে ফেলার অনুমোদন চাইতে হবে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে) সেই প্রকল্পেও শ্রমদিবস দেখান হয়েছে। দ্বিতীয়ত, তার মাস্টার রোল আছে কিন্তু শ্রমিকদের নাম ছাড়াই। তৃতীয়ত, যে প্রকল্পে কোনো কাজ হয়নি রিপোর্ট অনুযায়ী, তাতেও মাল কেনার হিসাব দেখানো হয়েছে।

এ ব্যাপারে সরকারি মন্তব্য, ‘পদ্ধতিগত ত্রুটির’ কারণে এমন হয়ে থাকা সম্ভব। তবুও কিছু সরল প্রশ্নের উত্তর এখনও পাওয়া যায় নি। যে প্রকল্প ‘জিরো এক্সপেন্ডিচার স্কীম’ বলে অন-লাইনে নথি থেকে মুছে ফেলতে আবেদন জানানো হবে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে, তার মাল কেনার খরচের ও কেনা মালের স্টকের হিসাব বোঝান হবে কী ভাবে? শুধু মাত্র ‘পদ্ধতির ত্রুটি’ বলে তার ব্যাখ্যা দেয়া হবে কী যুক্তিতে? দ্বিতীয়ত, কোনো কাজ হয়নি বলা হবে, সেই খাতে দেখানো শ্রমদিবস বা সে বাবদে খরচের টাকা কীভাবে দেখানো যাবে? ঐ প্রকল্পগুলোর নামে তৈরী হওয়া মাস্টাররোল গুলো যাতে কারো নাম ছিল না (অথচ হিসাবে ধরা হয়) সেগুলোই বা কোথায় যাবে?

সরকারি আধিকারিদের মধ্যে এ নিয়ে নানা আলোচনা ও পরামর্শ শোনা যাচ্ছে। কিন্তু, রেগার কমিশনারের যে মন্তব্য খবরে প্রকাশ, তা খুবই মারাত্মক। তিনি নাকি বলেন যে, “এমন বড়সড় কেলেঙ্কারি জেলা পর্যায়ে বোঝাপড়া ছাড়া হওয়া সম্ভব নয়।” এ কারণে সব জেলার থেকেই এই গুরুতর বেনিয়মের ব্যাখ্যা চেয়ে নির্দেশ পাঠানো হয়েছে।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।