দেশ

৩৭০ ধারা বিলুপ্তির পর কাশ্মীর কেমন আছে


কাশ্মীর থেকে কল্পনা গুপ্ত: চিন্তন নিউজ: ০২/০৪/২৪-কয়েকদিনের জন্য কাশ্মীর ভ্রমণে এসেছিলাম। বিশেষ ভাবনা একটা ছিলই যে কেমন আছে আজকের কাশ্মীর। একটা সুযোগ এসে গেলো, জনৈক এক মিলিটারির সাথে কিছুক্ষণ আলাপচারিতায়। নামপ্রকাশ করছি না। কথায় কথায় জানলাম, ৩৭০ ধারা কাশ্মীরে বাতিল করে যে অঙ্গরাজ্যের স্ট্যাটাস থেকে সরিয়ে কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলের স্ট্যাটাসে আনা হলো তার প্রভাব কাশ্মীর বাসীদের মধ্যে দুধরণের হয়েছে। যারা কিছুটা অবস্থাপন্ন তাদের কাছে ভালো , আর যাদের অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ তাদের কাছে প্রভাব ভালো নয়। বিশেষ করে ইলেকট্রিক বিল একলাফে পূর্বের তুলনায় বহুগুণ বেড়ে গেছে এবং জলকরও বেড়ে গেছে। ফলে সাধারণ মানুষের দুর্দশা বেড়েছে। কোনও উল্লেখযোগ্য শিল্প এখানে নেই, শুধুমাত্র এখানকার হস্ত শিল্প, ডাল লেকে পর্যটন কেন্দ্রিক অর্থনৈতিক ক্রিয়াকর্ম প্রধান আয়ের উৎস ।

স্কুল, কলেজের সংখ্যা বেড়েছে, পড়তে আসছে ছেলেমেয়েরা, কিন্তু তার প্রধান লক্ষ্য হলো মিলিটারিতে যোগদান করানোর সংখ্যা বাড়ানো। এছাড়া সরকারি বা বেসরকারি কর্মের ক্ষেত্রে সুযোগ অত্যন্ত সীমিত ।
কথায় কথায় জনগণের আন্দোলনের প্রসঙ্গে এক মিলিটারি ভাই জানালো, এখন কেউ আর ধর্ণা বিক্ষোভ করতে পারে না, সরকার থেকে তৎক্ষনাৎ তা ভেঙ্গে দেয়। আরো জানা গেলো যে কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল হবার পরে প্রশাসনিক দপ্তর গঠনের কাজ সম্পূর্ণ হয়নি। এককথায় এখানকার মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার ও স্বাধীনতা অনেকটাই হরণ করা হয়েছে। সাধারণ মানুষ কিছুটা ভয়েই বিজেপির পক্ষ নিয়ে কথা বলে। আগামী লোকসভা নির্বাচনে বর্তমানের কেন্দ্রীয় সরকারি দলটিই জিতবে বলে তার অভিমত। অন্যান্য দলগুলির মধ্যে কংগ্রেস, ন্যাশনাল কনফারেন্স পার্টি ইত্যাদি। তবে তার মতে এখানকার মানুষের কাছে বিজেপি অথবা কংগ্রেস যেই আসুক না কেন তাদের অবস্থার বিশেষ কোন পরিবর্তন হবে না। আমার জিজ্ঞাসার উত্তরে জানালো যে কাশ্মীরে কোন স্যোসালিস্ট পার্টির কার্যকলাপ নেই।

আলাপচারিতার মধ্যে বারবার একটা হতাশার সুর বাজছিল। তাই কাশ্মীর কেমন আছে এর উত্তরে কিছুটা আলো আঁধারি থেকে গেছে তাদের মনে, আর দেশের মানুষের মনেও। কাশ্মীরের সাধারণ মানুষের জীবনযাপনের মান যে উন্নত নয়, তার ছাপ প্রায় সর্বত্র।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।