কলমের খোঁচা

ঐতিহাসিক মহান মে দিবস


মাধবী ঘোষ:চিন্তন নিউজ:১লা মে:–আজ ১লা মে, আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস। প্রতি বছর এই দিনটি আমাদের মনে করিয়ে দেয় আমাদের দেশকে গড়ে তোলার পেছনে হাজার হাজার শ্রমজীবী মানুষদের অবদানের কথা। মনে করিয়ে দেয়,,,,
১৮৮৬ সালে আমেরিকার শিকাগো শহরের হে’ মার্কেটে ৮ ঘণ্টা কাজের দাবিতে যে মিছিল হয়েছিল সেই মিছিলে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন কমরেড বব ফিসার , কমরেড অ্যালবার্ট পারসনস, কমরেড আগস্ট স্পীজ।

সেই মিছিলে আক্রান্ত অনেকে হয়েছিল, গুলি চলেছিল, ওই তিনজন কমরেড শহীদ হয়েছিলেন আর রক্তে ওদের সাদা জামা ভিজে লাল হয়ে গিয়েছিল ,ওরা এই রক্তে ভেজা কাপড় নিয়ে বলেছিলেন ,আমরা আর পারলাম না কিন্তু তোমরা এগিয়ে যাও। জয় আমাদের হবেই সেই রক্তে রাঙা লাল নিশান আমাদের লাল পতাকা। সেই লড়াইয়ে শ্রমিককশ্রেণীর জয়ী হয় পরে আন্তর্জাতিকভাবে সেই জয় মেনে নেওয়া হয় শ্রমিকশ্রেণীর দাবি ৮ ঘন্টা কাজ ৮ ঘণ্টা বিশ্রাম আরো ৮ঘন্টা নিজের যাবতীয় কাজ বা মনোরঞ্জন করার দাবি প্রতিষ্ঠিত হয়।
সারাবিশ্বে এই দিনটি শ্রমিক দিবস হিসেবে পালিত হয়। আজ যে ঘরে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছি, তার পেছনে অবদান রয়েছে মাথার ঘাম পায়ে ফেলা একজন শ্রমিকের, বা একজন দিন মজুরের। কিন্তু সেই মানুষটিই হয়তো দিনের পর দিন কাটাচ্ছে একটা ভাঙা ঘরে৷

পরনের যে কাপড়টা সমাজে আমাদের গ্রহণযোগ্যতার মাপকাঠি, সেটাও একজন পোষাক শ্রমিকের হাতের নিপুন কারুকার্যের ফসল। কিন্তু সেই মানুষটিই হয়তো পরে আছে একটা ছেড়া কাপড়।

যে গাড়িতে বা রিকশায় করে প্রতিদিন স্কুলে- বিশ্ববিদ্যালয়ে- অফিসে ছুটে যেতাম নিজেদের লক্ষ্যে পৌঁছাবার আশায়, তার পেছনেও হাজার ছিলো হাজার শ্রমিকের অবদান, চালক ভাইদের অবদান।

দেশ গড়ার কারিগর তো ওরাই, যাদের শ্রমের বিনিময়ে আমরা সবাই পেয়েছি সুন্দর এক জীবন। দেশ গড়ার কারিগর তো ওরাই, যাদের কারণে আমরা স্বপ্ন দেখতে ভয় করিনা।

কিন্তু আজ করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে, অনিশ্চয়তায় দিন কাটাচ্ছে সেসব খেটে খাওয়া মানুষেরা। এই প্রসঙ্গে- কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায় এর মে দিবসে কবিতা থেকে শেষ চার লাইন
“প্রিয় ফুল খেলবার দিন নয় অদ্য
এসে গেছে ধ্বংসের বার্তা
দুর্যোগে পথ হয় হোক দুর্বোধ্য
চিনে নেবে যৌবন- আত্মা”

মহান মে দিবসের মহিমাকে অটুট রাখতে,, শ্রদ্ধা পৃথিবীর সকল শ্রমকে।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।