দেশ

ভারী বৃষ্টিপাত প্রমাণ করল রাজধানী দিল্লির নিকাশি ব্যবস্থার বেহাল চিত্র


কাকলি চ্যাটার্জি: চিন্তন নিউজ: ২০শে জুলাই:– ভারী বৃষ্টিপাত প্রমাণ করল রাজধানী শহর দিল্লির নিকাশি ব্যবস্থার বেহাল চিত্র। ড্রেনেজ ব্যবস্থার করুণ অবস্থা! ভারী বৃষ্টির জন্য ড্রেনের ওভারফ্লো কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে এক ধ্বংসলীলার সাক্ষী হ’তে বাধ্য করেছে দিল্লিবাসীকে। মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়াল আশ্বাস দিয়েছেন পরিস্থিতি বিবেচনা করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আপাতত বিপদজনক ঘরগুলো খালি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় আম আদমি পার্টির বিধায়ক।

দিল্লির আইটিও নিকটবর্তী আন্না নগরের বস্তি অঞ্চলে ভারী বৃষ্টির পর একটি বাড়ি ধসে পরে তবে সৌভাগ্যবশত সেখানে কেউ উপস্থিত ছিলেন না। পরে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় কেন্দ্রীয় দুর্ঘটনা ও ট্রমা সার্ভিসেস এবং ফায়ার ইঞ্জিন বাহিনী। “ঐ নালায় জলের বেগ খুব তীব্র ছিল, পার্কিংয়ের জন্য নির্মাণ করা একটি গর্তে প্রবেশ করে। ভূমিক্ষয়ের কারণে আশেপাশের ঘরবাড়ি ধসে পড়ে। তাঁর বাড়ি এমনভাবে অদৃশ্য হয়ে গেছে যেন এটার কোনো অস্তিত্বই ছিল না।” জানিয়েছেন, বস্তির বাসিন্দা পুষ্প দেবী।

আম আদমি পার্টির বিধায়ক প্রবীণ কুমার এএনআইকে বলেন, ” এখানে একটা ভারী দুর্ঘটনা ঘটেছে কিন্তু সৌভাগ্যবশত কেউ মারা যাননি। দিল্লির সরকার সবরকম সহযোগিতা করছে এবং এখানে জরুরী ভিত্তিতে ত্রাণ কার্য চলছে। একটি ছাগল আহত হওয়ায় তাকে এনডিআরএফ দলের কর্মী হাসপাতালে নিয়ে গেছেন।”

মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়াল বলেন এখন কার দোষ সেটা বিচার্য নয়। বিধায়ক কুমার জানান, “বিপদজনক ঘরগুলো খালি করা হচ্ছে। এই দুর্ঘটনাকে হাল্কা করে দেখলে চলবে না। তিনি সরকারের সঙ্গে কথা বলেছেন। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে এবং দোষীদের শাস্তি দেয়া হবে।” দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ শিশোদিয়া এএনআইকে বলেন যে মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল নিজেই পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছেন। পূর্ত বিভাগ, দিল্লি জল বোর্ড, পৌর কর্পোরেশন এবং বন্যা বিভাগসহ সকল সংস্থা একযোগে বন্যা মোকাবিলায় কাজ করছে। কিছু কর্মী কোভিড১৯ এর কাজে ব্যস্ততার জন্য কিছু সমস্যা হয়েছে। তবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া শুরু হয়েছে। অপরদিকে দিল্লি কংগ্রেসের সভাপতি অনিল চৌধুরী সরকারের তীব্র নিন্দা করেন। কীরকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বাড়িটি ধসে পড়া থেকেই অনুমান করা যায়।

আন্না নগর দিল্লির একটি প্রাচীন কলোনী, যেখানে মূলত নিম্নবিত্ত শ্রেণীর মানুষের বসবাস। ৫০ বছরের পুরানো এই কলোনীতে মাত্র আধঘন্টার বৃষ্টিপাতের ফলে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। একাধিক ঘরবাড়ি ধসের কবলে। সর্বত্র নিকাশির সমস্যা। বর্ষার আগে প্রশাসনের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল। মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়াল দিল্লিবাসীদের ভাগ্যের হাতে ছেড়ে দিয়েছেন বলে অনিল চৌধুরী মনে করেন।

মূল কথা হ’ল দিল্লিতে দীর্ঘদিন কংগ্রেস সরকার রাজত্ব করেছে। তারাও বস্তিবাসীদের নিয়ে কোনো চিন্তা ভাবনা করেনি, কোনো দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্ৰহণ করেনি উন্নতির লক্ষ্যে। এখন রাজনীতির ময়দানে প্রতিপক্ষ দলকে দোষারোপ করলেও কেউই ব্যর্থতার দায় এড়াতে পারে না। দরিদ্র মানুষদের ভোটের ঘুঁটি হিসাবে ব্যবহারের রাজনীতি বন্ধ না হলে এরকম ঘটনা বারংবার ঘটতেই থাকবে।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।