সূপর্ণা রায়:চিন্তন নিউজ:২৮শে ফেব্রুয়ারি:–কুইন কেনিন,,জোকার ই রাজা__ যখন মেয়েটির ৭ বছর বয়স তখনই সে জানিয়ে দিয়েছিল সে এক নম্বর হবে।। কিন্তু স্বপ্ন দেখা আর তার বাস্তবরূপায়ন করার মধ্যে থাকে সহস্র যোজন ফারাক।। কিন্তু সেটা ৭ বছরের ছোট্ট মেয়ে সোফিয়ার জানার কথা নয়।। সেজন্যই এই কথা বলেছিল খুব সহজেই।। কিন্তু ১৪ বছর বয়সে এসে সোফিয়া বুঝতে পারল যে ছোট্ট বেলার স্বপ্ন দেখা এক আর তা বাস্তবায়ন করতে প্রচুর পরিমাণে ঘাম ঝরাতে হবে।। আপাতত তিনি জীবনের প্রথম গ্র্যান্ডসস্ল্যাম জয়ের আনন্দে মাতোয়ারা।। অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে মেয়েদের সিঙ্গলচ্যাম্পিয়ান এর মুকুট সোফিয়ার মাথায়।
এতদিন বড়মাপের টুর্নামেন্টে চতুর্থ রাউন্ডের গন্ডি না পারা তাঁর ক্যাবিনেটে জ্বলজ্বল করছে আস্ট্রেলিয়ান ওপেনের ট্রফি।।আ্যলেকজিন্ডার কেনিন আশির দশকে এর শেষদিকে রাশিয়া ছেড়ে পাড়ি দিয়েছিলেন আমেরিকায়। স্ত্রী শ্বেতলনাকে নিয়ে ফ্লোরিডায় বাসা বেঁধেছিলেন একরাশ স্বপ্ন নিয়ে।। নব্বই এর দশকে আবার তারা ফিরে আসেন মস্কোয় আর সেখানে জন্ম সোফিয়ার।।মেয়েকে নিয়ে আবার পাড়ি দেন আমেরিকায়।। সেখানে ছোট্ট সোফিয়ার হাতে বাবা তুলে দেন টেনিস র্যাকেট। আলেকজান্ডারের মনের সাধ ছিল সোফিয়া ভবিষ্যতে সেরেনা হবে।। সেরেনার বাবার মতো তিনিও মেয়ের প্রথম কোচ।। মেয়ে কে অত্যাধুনিক কোচিং দেওয়ার প্রয়োজন আর তার জন্য প্রয়োজন প্রচুর অর্থের।।মেয়ের স্বপ্ন পূরণ এর জন্য জীবন বাজি রেখেছিলেন সিনিয়র কেনিন।।মেয়ের স্বপ্ন পূরণের জন্য ফ্লোরিডায় রাতে গাড়ি চালানোর কাজ করেছেন দিনের পর দিন।। সেই অমানুষিক পরিশ্রম ব্যার্থ হয়নি।। টেনিসে আসার পর ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স বাড়লেও মেয়ের সাফল্য সেভাবে ধরা পড়েনি।। মিডিয়া তাকে নিয়ে কোন আগ্রহ দেখায়নি।। সোফিয়ার দেশের কোকোগ উফ কে নিয়ে হৈচৈ অনেক বেশি ছিল।। নতুন বছরের ফেব্রুয়ারি রং প্রথম দিন এ এক পড়ন্ত বিকেলে মিডিয়া র সমস্ত আকর্ষণ সোফিয়া কে ঘিরে। এই আগ্রহ এর প্রথম ধাপ কোকা কে চতুর্থ রাউন্ডে হারানো র পর থেকে।। এতদিনের গাঁট টা কাটার পর সেমিফাইনালে অ্যাশ বর্তি বধ।। যিনি আবার রয়েছেন পয়লা নম্বর এ। সোফিয়া আশৈশব এই জায়গা টা দখলের চেষ্টা করার স্বপ্ন লালন করে এসেছে।।মুগুরুজা কে ফাইনালে হারিয়ে ট্রফি জয়ের সঙ্গে র্্যঙ্কিঙ এ একলাফে সাতে চলে এসেছেন।। অভীষ্ট লক্ষ্য থেকে মাত্র ছ ধাপ দূরে।।
সোফিয়া মনে করিয়ে দিচ্ছেন আরেক রুশজাত তারকা মারিয়া শারাপোভা কে।।২০০৪ সালে শারাপোভা প্রথম গ্র্যান্ডসস্ল্যাম জয় টিভি র পর্দায় দেখেছিলেন ছয় বছরের সোফিয়া।।সাধ ছিল তিনিও একদিন স্বদেশীয় তারকার মতো চ্যাম্পিয়ন হবেন।। মারিয়া কে দেখে তার টেনিসে অনুপ্রাণিত হয়া।। ভালো লাগে সেরেনার লড়াকু মানসিকতা।।আর এই লড়াকু মানসিকতা তিনি বুঝিয়ে দিলেন মেলবোর্নে।। ফাইনালে প্রথম সেট হেরেও হাল ছাড়েননি।। উল্টোদিকে দুবারের গ্র্যান্ড স্ল্যাম বিজয়ী।। তার সাথে সমানতালে টক্কর দিয়ে ট্রফি ছিনিয়ে আনেন।। সোফিয়া যেখানে প্রথম বার চ্যাম্পিয়ন হলেন সেই কোর্টেই নিজের রেকর্ড কে আরেক ধাপ উপরে নিয়ে গেলেন নোভাক ডকোভিচ।রড লেভার এরিনায় সর্বকালের সব রেকর্ড ভেঙে আট নম্বর খেতাবটা তুলে নিয়ে গেলেন।।এই রেকর্ড ভাঙার জন্য আশেপাশে আপাতত আর কাউকে দেখা যাচ্ছে না।। তাঁর সাতটা ওপেন জয়ের রেকর্ড স্পর্শ করতে পারতেন রজার ফেডেরার।সুইস তারকা কে হারিয়ে সে রাস্তা বন্ধ করে দেন ডকোচিভ।। টেনিস দক্ষতার পাশাপাশি চুড়ান্ত ফিটনেস লেভেল জোকার এর সাফল্য এর চাবিকাঠি।। সঙ্গে সেরা হবার উদগ্র বাসনা আর নাছোড়বান্দা মনোভাব।