জেলা

একটানা বৃষ্টিতে বন্যা পরিস্থিতি বানারহাট, বিন্নাগুড়ি চামুর্চি এলাকায়


সঞ্জিত দে: চিন্তন নিউজ:২৯শে জুন :- বেশ কয়েক বছর ধরে বন্যার আতঙ্কে ভুগছে বানারহাট বিন্নাগুড়ি এলাকার বাসিন্দারা।বছরে দু’বার থেকে তিনবার বন্যা পরিস্থিতি দেখা যায়। এমনকি শুখা মরসুমেও বন্যা হতে দেখেছেন এই সব এলাকার মানুষ। পথ অবরোধ রেল অবরোধ সবই হয়েছে কিন্তু রাজ্য প্রশাসনের প্রতিশ্রুতি এলাকা পরিদর্শন ছাড়া আর কোনো কাজ এগোয় নি। হাতি নালা সংস্কারের কাজ শুরু হলে শাসক দলের তোলা বাজিতে ঠিকাদার সংস্থা কাজ বন্ধ করে চলে যায়। দু’জন মন্ত্রী সদলবলে হাতি নালা ফের পরিদর্শন করে গেলেন একসপ্তাহ হয়নি এর মধ্যে ফের বন্যায় ভাসতে শুরু করলো বানারহাট বিন্নাগুড়ি।

সোমবার রাত থেকে ভুটান পাহাড় ও ডুয়ার্স অবিরাম একটানা বৃষ্টিতে বন্যা পরিস্থিতি বানারহাট, বিন্নাগুড়ি চামুর্চি এলাকায়। জলমগ্ন হয়ে পড়ল বিন্নাগুড়ি বিস্তীর্ণ এলাকা । হাতি নালার জল উপচে ঢুকে পড়ে বিন্নাগুড়ি এস এম কলোনি, নেতাজি পল্লী এলাকায়
জলবন্দি হয়ে পড়ে প্রায় ১৫০ পরিবার। রান্নাঘর থেকে শোওয়ার ঘর সমস্ত জলমগ্ন হয়ে পড়ে। রাজ্য সড়কের উপর দিয়ে বইতে থাকে জলের স্রোত । যার ফলে চরম দূর্ভোগে পড়েন বাসিন্দারা । হাতি নালা জলে ডুবে যায় বিন্নাগুড়ি বানারহাট এর প্রায় ছয় টি চা বাগান । চা বাগানের উপর দিয়ে বইতে থাকে জলের স্রোত। বিন্নাগুড়ি থেকে হলদিবাড়ি গামী রাজ্য সড়কের উপর দিয়ে বইতে থাকে এক হাঁটু জল এমন কি হাতির জলের স্রোতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় চা বাগান বহু চাকা জলের স্রোতে ভেসে যায় বিন্নাগুড়ি এলাকার অধিকাংশ মানুষের মুখে অন্ন জোটেনি রান্না ঘরের উনুন রীতিমতো জলের তলায় চলে যায় । তাই রান্নাবান্না বন্ধ হয় এদিন ।

এলাকার বাসিন্দা নয়না খাতুন , সুশান্ত রায় বলেন , যখন বেশি বৃষ্টি হয় হাতি নালার জল ঢুকে পরে এলাকায় । ১৫০ টির বেশি বাড়িতে এক হাটু জল । প্রশাসনের তরফে কেউ খোজ করতে আসেনি । ত্রান তো দুরের কথা । অনেকে রাস্তায় আশ্রয় নিয়ে আছে ।

অন্যদিকে, ভূটান পাহাড়ে ভারি বৃষ্টির জেরে লাল ঝামেলা বস্তির মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া ডায়না নদীতে জল স্ফীতি দেখা দেয়।

এই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি তৈরি হলেও জেলা প্রশাসনের কোন আধিকারিক বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শনে না যাওয়ায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।

অন্যদিকে বানারহাট থেকে ভুটানগামী যে ইন্দো ভুটান সার্ক সড়ক রয়েছে, পলাশবাড়ী এলাকায় সেই সড়কের উপর দিয়ে প্রায় এক হাঁটু জল বইতে থাকে। যার ফলে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অনেকেই রাস্তা পারাপার করতে হয়।

এমনকি বানারহাট এলাকায় হাতি নালার জল রেললাইনের উপর দিয়ে বইতে থাকে। যার কারণে ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়।রেললাইনের তলা থেকে সরে যায় মাটি জলের স্রোতে। শিলিগুড়ি থেকে আলিপুরদুয়ার দামি ক্যাপিটাল এক্সপ্রেস ট্রেন প্রায় ঘন্টা খানেক সময় ধরে দাঁড়িয়ে থেকে রানাঘাট স্টেশনে। বাসিন্দাদের ক্ষোভ কিছু দিন হলো বানারহাট নতুন ব্লক হয়েছে।একজন বিডিও এসেছেন।তিনি ঢাল তরোয়াল বিহীন নিধিরাম সর্দার।এখনো সব কিছুর জন্য নির্ভর করতে হয় ধূপগুড়ি বিডিও অফিসের উপর। কিন্তু সেখান থেকে ও ত্রান পলিথিন কিছু আসেনি এমন কি কেউ খোঁজ খবর নিতেও আসেনি বলে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে বসে নেই বানারহাট বিন্নাগুড়ির রেড ভলান্টিয়ার সদস্যরা। সকাল থেকে প্রবল বৃষ্টির মধ্যে তারা বিভিন্ন কলোনি চা বাগানে শ্রমিক মহল্লা ঘুরে খোঁজ নিতে শুরু করেছে কার কি প্রয়োজন । বানার হাট হাই স্কুল এবং হিন্দি স্কুলে দুটি শিবিরে প্রচুর মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। রেড ভলান্টিয়ারদের পক্ষে প্রদীপ সরকার জানায় বুধবার থেকে তারা ত্রান শিবির গুলিতে খাদ্য সামগ্রী বিলি করবে।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।