রাজ্য

বসন্ত উৎসবে মেতে উঠল বীরভূম,


রাহুল চ্যাটার্জি:চিন্তন নিউজ:১০ই মার্চ:–বসন্ত উৎসবে মুখরিত, নানারঙের আবীরে,গানে,মেতে উঠল পুরো বীরভূম জেলা।
শান্তিনিকেতনের বসন্ত উৎসব করোনা-র ছোবলে স্তব্ধ হয়ে যাওয়ায় বসন্তপ্রেমী মানুষদের মন ভার। তবে শুভপ্রাতের প্রথম মাহেন্দ্রক্ষণে রামপুরহাট ও মল্লারপুরে পালিত হলো বসন্ত উৎসব। পুলকিত চিত্তে সকল শহরবাসী চাক্ষুুষ করলেন এক অভিনব বসন্ত উৎসবের। শাড়ি-পাঞ্জাবী পরে কচি কাঁচা থেকে শুরু করে শহরের সকল সাংস্কৃতিক দল গুলিকে নিয়ে সকালে হয় প্রভাতফেরি ও সন্ধেয় বিশেষ অনুষ্ঠান।

একই ছবি সাঁইথিয়া ও সিউড়ির।।বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ফাগুনের প্রখর তপন কিরণে বসন্তের মলয় বাতাসে আবেগপ্রবণ হয়ে সকলে আবীর নিয়ে বেরিয়েছিলেন পরিচিত -আত্মীয়, ভালোবাসার মানুষদের রাঙিয়ে দিতে।। মনের অন্তরে বারে বারে আপন সুরেই যেন ভেসে আসছিল সেই সুর “আহা আজি এ বসন্তে কত ফুল ফোটে,কত পাখি ডাকে”।

বরফাবৃত হিমবাহ যেমন উষ্ণতার স্পর্শে গলিত হয়ে নদীতে স্বচ্ছ বারিধারা রূপে প্রবাহিত হয় ঠিক তেমনই এই সুন্দর মুহূর্তে গোটা জেলার মানুষের মনের ভিতরে সুপ্ত অবস্থায় থাকা সাংস্কৃতিক চেতনা উষ্ণতার স্পর্শে অনুরণিত হয়ে আনন্দ সাগরের গভীর স্রোতে নিমজ্জিত হয়ে গেল। কবি গুরুর শান্তিনিকেতন এবং বৃন্দাবনের পবিত্র ভক্তিরসের সম্মিলিত সাংস্কৃতিক এবং আধ্যাত্মিক ভাবধারা দুইয়ের মেলবন্ধন আজকের বসন্ত উৎসবের এই অনুষ্ঠান গুলিতে লক্ষ্য করা যায়।।

পলাশ কৃষ্ণচূড়া কোকিলের কুহুতানে ফাগুনের মধ্যলগ্নে প্রকৃতি রং বেরং এর নানান ফুলে সজ্জিত হয়ে দখিনা পবনের সঙ্গে মনের মধ্যে অনুরণিত হচ্ছে “রাঙিয়ে দিয়ে যাও যাও যাও গো এবার যাবার আগে”। বিশ্বত্রাস করোনা ভাইরাসের কারণে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষসহ বাংলার অনেক জায়গাতেই বাতিল করা হয়েছে বসন্ত উৎসব, সকলেই হতাশ।
তবে নিরাশ হয়নি তারাপীঠে আগত পর্যটকরা, বা সেই এলাকার মানুষ ।গত বছর থেকেই শান্তিনিকেতনের আদলে সিদ্ধপীঠ তারাপীঠেও শুরু হয়েছে বসন্ত উৎসব। গোটা তারাপীঠ জুড়েই আবাল বৃদ্ধবনিতা সকলেই মেতে ওঠেন দোল এবং বসন্ত উৎসবে। বসন্তের বিভিন্ন রকম রবীন্দ্র সংগীতের নাচ-গান দিয়ে শুরু হয় প্রভাত ফেরি। যেন এক টুকরো শান্তিনিকেতন। সঙ্গে ছিল কীর্ত্তন,বাউল গান, রাইবেশে নাচ, ব্রতচারী নৃত্য, ধামসা মাদল সহযোগে আদিবাসী নৃত্য,পথনাটিকা।।

যে প্রবল ভিড় বসন্তোৎসব উপলক্ষে প্রতি বছর আছড়ে পড়ে শান্তিনিকেতনের বুকে, এ বার তার ছিঁটেফোঁটাও নেই। যেটুকু যা লোকজন, তা এ দিন দেখা গিয়েছে খোয়াইয়ের হাটে। এমনিতেই, প্রায় প্রত্যেক ছুটির দিনেই বেশ ভাল সংখ্যার লোকের জমায়েত হয় এখানে। এই রবিবারের ভিড় তার থেকে খানিকটা বেশিই ছিল। তবে সেখানেও মন ভাল নেই কারও। ব্যবসায়ী থেকে পর্যটক, সবার মধ্যেই কেমন একটা গা ছাড়া ভাব।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।