সুপর্ণা রায়: চিন্তন নিউজ:২৯/০৯/২০২২– দেবু দাস ও উষারানী দাসের ছেলে । গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় তাঁদের জ্যান্ত পুড়িয়ে মেরে ফেলা হয়েছিলো। ২০১৮ সালের ১৩ মে এর মাঝরাতের এই ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটেছিল কাকদ্বীপ এ । তখন বছর কুড়ির দীপঙ্কর একটা ক্যাটারিং এর কাজ করতেন । মা আইসক্রিম ভালোবাসেন — মার জন্য আইসক্রিম সাইকেলের হ্যান্ডেলে ঝুলিয়ে । বাড়ীর পাশে আসতেই দেখেন বাড়ীটা পুড়ে গেছে আর দুটো পোড়া দলা পাকানো শরীর । একটা মা ঊষাদেবীর আর একটা বাবা দেবু দাসের । এই ঘটনা সামনে আসতেই রাজ্যজুড়ে রাজনীতি র তোলপাড় শুরু হয়েছিল । উষারানী ও দেবু দাস দু’জনে ছিলেন সি পি আই (এম) এর সক্রিয় সদস্য। সেই অভিশপ্ত রাতে শুধু দেবু দাস ও উষারানী দাস এই দুজন পোড়েন নি পুড়েছিল গোটা বাংলা । সেই রাতের ঘটনার পর দীপঙ্কর দাস চোয়াল শক্ত করেছিল যেভাবেই হোক খুনীদের শাস্তি দেবেন । মা বাবার এই ঘটনার সমাধান করতে বিশিষ্ট আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য এর দারস্থ হয়েছিলেন । সেদিন থেকেই সি পি আই এম পুরো দায়িত্ব নিয়েছিল দীপঙ্কর দাস এর ।
সেই দীপঙ্কর দাস আজ ‘ল’ পাশ করেছে । বুধবার রেজাল্ট বেরোলে দেখা যায় সে ৮১%নম্বর পেয়েছে । খবরে প্রকাশ যে তার পড়াশোনা র পিছনে আছেন কমরেড বিকাশরঞ্জন বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ও সব্যসাচী চক্রবর্তী। পাঞ্জাব ন্যাশানাল ব্যাঙ্কের কর্মী ইউনিয়ন তাঁকে অর্থ সাহায্য করেছিল পড়াশোনা র জন্য । কিংস্টন ‘ল’ কলেজ থেকেই দীপঙ্কর দাস আইনের স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করে।
সে কেন আইন নিয়ে পড়লো জানতে চাইলে সে জানায় বাবা মায়ের খুনীদের শাস্তি দেওয়ার জন্য । সে আরও জানায়, যে রাতে তাঁর বাবা মাকে পুড়িয়ে মারা হয়েছিল তার পরের দিনই ছিল পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার দিন । দোষীরা আজ পর্যন্ত শাস্তি পায়নি এবার আইনের পথে তাদের শাস্তির বন্দোবস্ত করবে ।সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শমীক লাহিড়ী বলেন, যে দীপু খুব ভালো ও মেধাবী আর খুব ভালো রেজাল্ট করেছে এবার ও নিজেই ওর বাবা মায়ের খুনীদের শাস্তি দেওয়ার যোগ্য হয়েছে ।
দীপঙ্কর এখন সোনারপুরের এক আত্মীয়ের বাড়ীতে থাকেন । আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় এর জুনিয়র হিসাবে কাজ করছেন । এখন তাঁর একটাই লক্ষ্য বাবা মায়ের খুনীদের শাস্তি দেওয়া।