কিংশুক ভট্টাচার্য: চিন্তন নিউজ:২৪ জুলাই:_ যখন সারা দেশে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা প্রতিদিনই নতুন রেকর্ড গড়ে চলেছে তখনও দেশের প্রধানমন্ত্রী মোদী দেশবাসীকে অতিমারির হাত থেকে রক্ষা করার পরিবর্তে বেশী ব্যস্ত সমস্ত স্বাস্থ্যবিধিকে লংঘন করে পাঁচ আগষ্ট অযোধ্যায় রামমন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের কর্মসূচী সফল করে তুলতে। দেশের সরকার দেশের গরীব মানুষকে বাঁচাতে শ্রমিক সংগঠন গুলির দাবী মতো প্রতিটি গরীব পরিবার পিছু মাসে সাত হাজার পাঁচশত টাকা ও প্রতিটি গরীব মানুষকে দশ কিলো করে খাদ্য শস্য প্রদানের বিষয়টি বিবেচনা করে দেখার সময় না পেলেও কয়লাখনি, রেল স্টেশন, ট্রেন, অস্ত্র কারখানা বেচার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিশ্বব্যাপী মন্দার বাজারে কতো সস্তায় আম্বানি আদানিদের হাতে ব্যাংক, বীমা, তৈলখনি ক্ষেত্রগুলিকে বেচে দেওয়া যায় তার পরিকল্পনার সফল রূপায়নে উঠে পড়ে লেগেছেন। কিন্তু দেশের সাধারণ দেশপ্রেমিক শ্রমিক সংগঠনগুলি মনে করে এ জিনিস কোনভাবেই বরদাস্ত করা যায়না। এর প্রতিবাদে দেশজুড়ে কয়লাখনিগুলিতে পালিত হয়েছে তিনদিনের সর্বাত্মক ধর্মঘট আবারও কয়লা শ্রমিকেরা সামিল হতে চলেছেন ধর্মঘটে। ধর্মঘটে সামিল হতে চলেছেন প্রতিরক্ষা শিল্পের শ্রমিকেরা। নয় আগষ্ট এবার “ভারত ছাড়ো দিবস” সারা দেশে পালিত হতে চলেছে “ভারত বাঁচাও দিবস” হিসেবে। পাশাপাশি দাবী উঠেছে শুধু করোনা অতিমারি’রই নয় দেশের সব মানুষেরই স্বাস্থ্য সুরক্ষার দায়িত্ব কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারগুলিকেই নিতে হবে। এই বক্তব্যকে মানুষের কাছে পৌছে দিতে গত বৃহস্পতিবার দেশজুড়ে শ্রমিক সংগঠনগুলির উদ্যোগে পালন করা হয়েছে দাবী দিবস। যেহেতু ঐ দিন পশ্চিবঙ্গে সরকারি ভাবে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছিলো তাই সারা পশ্চিম বঙ্গের মতো বাঁকুড়া শহরে শুক্রবার সকালে বাঁকুড়া শহরের স্টেশন রোডে সিআইটিইউ, এআইটিইউসি, টিইউসিসি, ইউটিইউসি, এআইসিসিটিইউ, আইএনটিইউসি, বাঁকুড়া জেলা লরি ড্রাইভারর্স এন্ড ক্লিনার্স ইউনিয়নের উদ্যোগে পালিত হলো রাজ্যব্যাপী দাবীদিবস। দাবী সম্বলিত স্লোগান মুখরিত ঐ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সিআইটিইউ রাজ্য নেতা তথা জেলার সভাপতি কিংকর পোশাক ও জেলার অন্য দুই নেতৃত্ব প্রতীপ মুখার্জী, সুবিকাশ চৌধুরী, ইউটিইউসি নেতা অনাথ মল্ল, লরী ড্রাইভার ও ক্লীনার্স ইউনিয়নের সম্পাদক সত্য মুখার্জী,আইএনটিইউসি র জেলা নেতৃত্ব অভিষেক বিশ্বাস প্রমুখ নেতৃবৃন্দ। – বাঁকুড়া রেলওয়ে গুডস সেডে এফসিআই’এর চাল লোডিং আনলোডিং’এর কাজ বন্ধ করেও অনেক মুটিয়া শ্রমিক এই বিক্ষোভ কর্মসূচীতে সামিল হন।
ইতিমধ্যে গত মঙ্গলবার সকালে জেলা কংগ্রেসের উদ্যোগে হীঁড়বাঁধ ব্লক আধিকারিকের দপ্তরের সমনে এক বিক্ষোভ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে ব্লক আধিকারিকের নিকট অতিমারি জনিত কর্মচ্যূত শ্রমিক, ক্ষেতমজুরদের দাবী ও স্থানীয় বিভিন্ন দাবী সম্বলিত দশ দফা দাবীসনদ পেশ করে অবিলম্বে তা পূরনের দাবী জানানো হয়। অন্যথায় আরও বৃহত্তর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবার কথাও বলা হয়েছে। এই কর্মসূচী তে নেতৃত্ব দান করেন জেলা কংগ্রেস কার্যকরী সভাপতি শ্রীমন্ত নন্দী অভিষেক বিশ্বাস, প্রভাস দাস, নজরুল মন্ডল তপন গড়াই ইত্যদি।
শুক্রবার গঙ্গাজল ঘাটী ব্লকের গোবিন্দ ধামে এক বিশেষ অনুষ্ঠানে এলাকার মানুষের মধ্যে বৃক্ষরোপনের প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে মানুষকে সচেতন করে তোলার উদ্দেশ্যে এক বিশেষ কর্মসূচী পালন করা হোল। রাজ্য বনদপ্তর ও পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চ গঙ্গাজল ঘাটী শাখার যৌথ উদ্যোগে এদিনের এই কর্মসূচী পালন করা হয়। ফলের চারা বিতরণ, বৃক্ষ রোপণ এবং মাস্ক বিতরণ করে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন বিধায়ক সুজিত চক্রবর্তী।
প্রারম্ভিক বক্তব্যে বিধায়ক বলেন করোনা মোকাবিলাতে শুধু সরকারের ভরসায় না থেকে সবাইকে সচেতনতার সাথে করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সামিল হতে হবে। তিনি আরও বলেন যে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখাও সভ্যতার অস্তিত্বের প্রশ্নে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এবং সাধারণ মানুষকে তাঁদের দৈনন্দিন জীবন জীবিকার লড়াইয়ের সাথেই পরিবেশ রক্ষার লড়াইয়ে অংশীদার হতে হবে।
(সূত্র প্রতীপ মুখার্জি ও সুজিত চক্রবর্তী ও অভিষেক বিশ্বাস)